Image description

ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। রোববার (১০ আগস্ট) জেরুজালেমে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, যুদ্ধবিরতি নিয়ে মাসের পর মাস আলোচনায় কোনো ফল আসেনি। খবর শাফাক নিউজ।

তার অভিযোগ, হামাস এমন শর্ত দিয়েছে যা মূলত ইসরায়েলের কাছে ‘আত্মসমর্পণের’ সমান। এর মধ্যে রয়েছে গাজা উপত্যকা থেকে সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহার, বন্দি যোদ্ধাদের মুক্তি এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বাধ্যতামূলক নিশ্চয়তা যা ইসরায়েলের ভবিষ্যৎ সামরিক পদক্ষেপ ঠেকিয়ে দেবে।

নেতানিয়াহুর দাবি, ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির একমাত্র উপায় হলো ‘হামাসকে পরাজিত করা।’ বিকল্প কৌশল হিসেবে অবশিষ্ট হামাস ঘাঁটিকে ঘিরে রেখে অভিযান চালানোর প্রস্তাব মন্ত্রিসভার অধিকাংশ সদস্য অকার্যকর বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

অভিযানের সময়সীমা নিয়ে তিনি বলেন, গাজা সিটি দখলের জন্য সেনাবাহিনীকে দ্রুত সময়সূচি কমানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নেতানিয়াহু দাবি করেন, তার উদ্দেশ্য গাজা দখল নয়, হামাসকে হারানো। তিনি যোগ করেন, দেশের ভেতর ও বাইরে থেকে যুদ্ধ বন্ধ করার প্রবল চাপের মধ্যেও এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণ আগেভাগে অভিযান থামালে হামাস নেতৃত্ব টিকে যেত এবং এতে ইসরায়েলের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীরা আরও সাহসী হয়ে উঠত।

অন্যদিকে, এক বিবৃতিতে হামাস নেতানিয়াহুকে ‘আন্তর্জাতিকভাবে নথিভুক্ত গণহত্যা ও অনাহারের অপরাধ’ থেকে ইসরায়েল ও এর সেনাবাহিনীকে দায়মুক্ত করতে চাওয়ার জন্য অভিযুক্ত করেছে। সংগঠনটির দাবি, গাজা ‘মুক্ত করার’ নামে নেতানিয়াহু ব্যাপক বাস্তুচ্যুতি, গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংস এবং একটি পুতুল প্রশাসন বসানোর পরিকল্পনা করছেন।

হামাস অভিযোগ করে, নেতানিয়াহু জিম্মি ইস্যুকে হামলার ন্যায্যতা হিসেবে ব্যবহার করছেন, অথচ বন্দিদশায় ‘ডজনখানেক’ জিম্মি নিহত হয়েছেন এবং পূর্ববর্তী বিনিময় চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। জাতিসংঘের তথ্য উদ্ধৃত করে হামাস জানায়, গাজার শিশুদের মধ্যে অনাহারে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে, সীমান্ত ক্রসিংগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে এবং ইসরায়েল এমন স্থানে আকাশপথে সহায়তা ফেলছে যা বিপজ্জনক বা সমুদ্রে পড়ে, ফলে আরও হতাহতের ঘটনা ঘটছে।

হামাস দাবি করে, ইসরায়েলের পরিকল্পিত অনাহার নীতিতে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৮০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, ২৬০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে এবং বিদেশি গণমাধ্যমকে গাজায় প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছে।

বিবৃতিতে হামাস জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানায়, ‘নৈতিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ’ হতে হলে অবশ্যই হামলা বন্ধ, অবরোধ প্রত্যাহার এবং যুদ্ধাপরাধের জন্য দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।