
গাজা সিটিতে সাংবাদিকদের একটি তাঁবুতে ইসরায়েলের লক্ষ্যভিত্তিক হামলায় আল জাজিরার সাংবাদিক আনাস আল-শরিফসহ চার সহকর্মী নিহত হয়েছেন।
রবিবার (১০ আগস্ট) রাতে গাজা সিটির আল-শিফা হাসপাতালের প্রধান ফটকের বাইরে অবস্থিত ওই সাংবাদিকদের তাঁবুতে হামলায় মোট সাতজন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন আল জাজিরার সংবাদদাতা মোহাম্মদ কুরেইকেহ এবং ক্যামেরাপার্সন ইব্রাহিম জাহের, মোহাম্মদ নুফাল ও মুয়ামেন আলিওয়া।
ইসরায়েলের রাজনৈতিক বিশ্লেষক ওরি গোল্ডবার্গ গাজা সিটিতে আল জাজিরার সাংবাদিকদের হত্যাকে “টার্গেটেড মার্ডার” এবং “অ্যাসাসিনেশন” হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, এই হত্যার মূল উদ্দেশ্য ছিল গাজা সিটিতে ইসরায়েলের আসন্ন সামরিক অভিযানকে আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি থেকে আড়াল করা।
টেল আভিভ থেকে আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গোল্ডবার্গ বলেন, “এই সাংবাদিকরা ছিলেন গাজার শেষ আশা, যারা ইসরায়েলের আসন্ন অভিযানের খবর বিশ্বের কাছে পৌঁছে দিতে পারতেন। আনাস আল-শরিফ ও তার সহকর্মীদের হত্যা করে ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে এই কভারেজ ঠেকিয়ে দিয়েছে।”
তিনি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে আহ্বান জানান, যেন তারা ইসরায়েলকে এই হত্যাকাণ্ডের জন্য জবাবদিহির মুখোমুখি করে।তিনি বলেন, “এটি পেশাগত সংহতি ও সহকর্মিতার বিষয়। গাজার ময়দানে যারা জীবন বাজি রেখে কাজ করেছেন, তাদের প্রতি অন্যান্য সাংবাদিকদের দায়বদ্ধতা রয়েছে।”
গোল্ডবার্গ আরও বলেন, গত ২২ মাসে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের একটি বড় অংশ এমন বর্ণনা চালিয়ে এসেছে যেখানে হামাস ও ফিলিস্তিনিদের সরাসরি দায়ী করা হয়েছে প্রতিটি সহিংস ঘটনার জন্য, কিন্তু ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে হয় নীরবে পাশ কাটানো হয়েছে বা ‘প্যাসিভ টেন্স’-এ উপস্থাপন করা হয়েছে।
তার মতে, যদি বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকরা ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের জন্য সরাসরি দায় আরোপ করতে শুরু করেন, তবে তা আনাস এবং অন্য সাহসী সাংবাদিকদের স্মৃতির প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা হবে এবং একইসঙ্গে গণমাধ্যমের পক্ষপাতদুষ্ট বর্ণনার আংশিক সংশোধনের সূচনা ঘটবে।