Image description

ফ্যাসিবাদবিরোধী পক্ষগুলোর মধ্যে ঐক্য জোরদার করার কথা ভাবছে বিএনপি। এর অংশ হিসেবে জুলাই সনদের বিভিন্ন প্রস্তাবে আরো ছাড় দিতে চায় দলটি। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের নানা সংস্কার প্রস্তাবে এরই মধ্যে দেওয়া ‘নোট অব ডিসেন্ট’-এর কিছু কিছু পুনর্মূল্যায়ন করা যায় কি-না তা নিয়ে দলীয় ও মিত্র দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে বিএনপি। গত শনিবার রাতে গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি উঠে এসেছে বলে জানা গেছে।

বৈঠকে অংশগ্রহণকারী নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে জানা যায়, গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে বিএনপির বৈঠকে জুলাই সনদ এবং এর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া কী হতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা হয়।

কয়েকটি সূত্র জানায়, ঐকমত্য কমিশনে সংস্কার কমিশনের ১৯টি মৌলিক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে অনেক বিষয়ে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছে বিএনপি। এতে ফ্যাসিবাদবিরোধী পক্ষের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হতে পারে বলে মনে করেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। এজন্য ওই বৈঠকে জুলাই সনদে যাতে আরো বেশি ঐকমত্য তৈরি হয়, সেজন্য ‘নোট অব ডিসেন্ট’-এর সংখ্যা কমিয়ে আনার জন্য বিএনপিকে পরামর্শ দিয়েছেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা।

তখন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জানান, বিষয়টি নিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে তিনি আবার আলোচনায় বসে তাতে যদি আরো কোনো ছাড় দেওয়ার সুযোগ থাকে, বিবেচনা করবেন। বিএনপি জুলাই সনদ নিয়ে আন্তরিক। যেসব প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, ক্ষমতায় গেলে তার সব বাস্তবায়ন করবে। সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া যাতে টেকসই হয়, সে বিষয়টি তাদের বিবেচনায় রয়েছে।

জানতে চাইলে গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক আমার দেশকে বলেন, বিএনপি যেসব বিষয়ে ভিন্নমত দিয়েছে তা কমিয়ে আনার কথা বলেছি। ঐক্য ও বোঝাপড়া বাড়িয়ে তুলতে চায় বিএনপিও।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৫ আগস্টের পর দেশের রাজনীতিতে দক্ষিণ পন্থার উত্থান ঘটেছে তা ঠেকাতে পাল্টা ‘রাজনৈতিক বয়ান’ তৈরির ওপর গুরুত্বারোপ করেন মঞ্চের নেতারা। এতে বিএনপিও একমত পোষণ করে।

বৈঠকে মঞ্চের নেতারা বলেন, আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হলে ফ্যাসিবাদবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের সমমনা দলগুলোকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠনের অঙ্গীকার রয়েছে বিএনপির। তবে সবাই সরকারের অংশ হয়ে গেলে বিদ্যমান আর্থ-সামাজিক চ্যালেঞ্জগুলো উত্তোরণের ক্ষেত্রে সংকট দেখা দিতে পারে। তাই গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের জন্য শক্তিশালী বিরোধী দলেরও প্রয়োজন, যারা ভুল-ত্রুটি ধরিয়ে দিয়ে সরকারকে আরো কার্যকর করবে।

গণতন্ত্র মঞ্চ মনে করে, পুরোনো যে বন্দোবস্তে এতদিন রাষ্ট্র পরিচালনা করা হয়েছিল, সেটা থেকে বেরিয়ে এসে রাষ্ট্রের সব খাতে মৌলিক পরিবর্তনের জন্য কমপক্ষে আগামী ১৫ বছরের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করতে হবে। ক্ষমতার গুণগত পরিবর্তনও করতে হবে।