জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনকে সামনে রেখে মাস ব্যাপী ওয়েলফেয়ার রাজনীতির কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জবি শাখা ছাত্রদল। এটি উল্লেখ করে পিনাকি ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘সেই তো নথ খসালি, তবে কেন লোক হাসালি?’ আজ বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজ ভেরিফায়েড আইডিতে জকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে মাসব্যাপী ওয়েলফেয়ার রাজনীতির কর্মসূচী ঘোষণার প্যাড শেয়ার দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ফেসবুক পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, সবশেষ চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে অফিসিয়ালি বিএনপি ও ছাত্রদলের পজিশন ছিল ওয়েলফেয়ার রাজনীতির বিরুদ্ধে। তারা নানা ভাবে শিক্ষার্থীদের বোঝানোর চেষ্টা করেছে 'ওয়েল ফেয়ার' রাজনীতি কেন খারাপ। সব নির্বাচনে গো হারা হেরে এখন নিজেদের ন্যারেটিভ ও অবস্থান থেকে সরে এসে ১৮০ ডিগ্রী পল্টি নিল দলটি৷
ফেসবুক পোস্টে তিনি আরো লেখেন, ছাত্রশিবিরের দেখানো পথে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এগিয়ে আসায় আমি ছাত্রদলকে অভিনন্দন জানাচ্ছি তবে যেসব বিএনপিপন্থি বুদ্ধিজীবী এতদিন এই রাজনীতির বিরোধিতা করেছিলেন তারা কি এখন বিএনপি বিরোধিতায় নামবে?
এর আগে আজ শুক্রবার জবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল ও সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কর্মসূচির তালিকা প্রকাশ করা হয়। আগামী ২ নভেম্বর ২০২৫, রোববার শুরু হবে আয়োজনের প্রথম কর্মসূচি ‘ফিটনেস স্ক্রিনিং ও ফিজিওথেরাপি ক্যাম্প’ দিয়ে। এর পরদিন, ৪ নভেম্বর, মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হবে সেমিনার ‘ফ্রিল্যান্সিং ও ডিজিটাল মার্কেটিং: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিকল্প আয়ের উৎস’।
৬ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার শুরু হবে ক্যাম্পাস সৌন্দর্যবর্ধনের উদ্যোগ ‘আমাদের ক্যাম্পাস আমরাই গড়বো’ ক্যাম্পেইন। ৯ নভেম্বর, রোববার আয়োজন করা হবে ‘মেধাবী সংবর্ধনা’, আর ১০ নভেম্বর, সোমবার ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিকাশে গণমাধ্যমের দায়িত্বশীলতা’ শিরোনামে অনুষ্ঠিত হবে আলোচনা সভা।
১১ নভেম্বর, মঙ্গলবার থাকবে ‘বিদেশে উচ্চশিক্ষা, বৃত্তির সুযোগ ও আইইএলটিএস, টোফেল, জিআরই, এসএটি এবং জিম্যাট প্রশিক্ষণ সুবিধা’ নিয়ে সেমিনার। ১২ নভেম্বর, বুধবার আয়োজিত হবে সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান ‘স্তন ক্যান্সার ও এর পরিণতি সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি’।
পরদিন ১৩ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার উদ্বোধন করা হবে ‘মেডিকেল ডিসপ্যাচ বুথ’ এবং অনুষ্ঠিত হবে ‘রক্তদান কর্মসূচি’। ১৬ নভেম্বর, রোববার অনুষ্ঠিত হবে ‘কেমন বিশ্ববিদ্যালয় চাই’ ক্যাম্পেইনের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান।
এছাড়া ১৭ নভেম্বর, সোমবার থাকছে রম্য বিতর্ক প্রতিযোগিতা, ১৮ নভেম্বর, মঙ্গলবার আয়োজিত হবে চাকরি মেলা, সিভি লেখা, সফট স্কিল উন্নয়ন ও চাকরির সাক্ষাৎকারে অংশগ্রহণ বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা।এরপর ২০ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হবে ইনডোর ও আউটডোর গেমস প্রতিযোগিতা।মাসের শেষ দিকে, ২৩ নভেম্বর, রোববার আয়োজন করা হবে প্রযুক্তিনির্ভর সেমিনার ‘ইন্ডাস্ট্রি ৪.০ এর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, বিগ ডেটা ও রোবোটিকস’,২৪ নভেম্বর, সোমবার অনুষ্ঠিত হবে সেমিনার ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যান্ডিং: জাতীয় ও বহুজাতিক কোম্পানি এবং অন্যান্য অংশীদারদের সাথে সহযোগিতা’। এছাড়া আগামী ৪ নভেম্বর থেকে প্রতিদিন দুপুর ১২টায় অনুষ্ঠিত হবে ‘হঠাৎ কুইজ প্রতিযোগিতা’, যা মাসব্যাপী চলবে।
এছাড়া নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী হলের জন্য ছাত্রদল বিশেষ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। ছাত্রদল জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী হলে শিক্ষার্থীদের কল্যাণে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে–০৪টি বুকসেলফ প্রদান, বিসিএস ও ইসলামিক বই সরবরাহ, ফ্রিডম বেল্ট প্রদান, প্রতি ফ্লোরে ফার্স্ট এইড বক্স স্থাপন, প্লেট ও পানির গ্লাস প্রদান, ইনডোর গেম আয়োজন, রম্য বিতর্ক ও কুইজ প্রতিযোগিতা আয়োজন, পাঁচতলায় পর্দা ও পাইপ প্রদান, রুমের সামনে ডাস্টবিন স্থাপন, জুতার তাক প্রদান, যোগব্যায়াম ম্যাট প্রদান, গরম ও ঠান্ডা পানির ফিল্টার স্থাপন এবং বিশেষ বৃত্তি প্রদান।
এই কর্মসূচির বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহবায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল সবসময় শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করেছে। ৫ আগস্টের আগে এবং পরে সবসময় আমরা শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করতে চেয়েছি। কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের ক্ষেত্রেও ছাত্রদলের একটি অনবদ্য ভূমিকা ছিল। এটি আমাদের প্রাণের ক্যাম্পাস। আমরা এই ক্যাম্পাসকে মনেপ্রাণে ধারণ করি।
তিনি আরো বলেন, আমাদের এই কর্মসূচি জকসুকে সামনে রেখে নয়। শিক্ষার্থীদের কল্যাণে আমাদের এই কর্মসূচি। ছাত্রদল অতীতেও শিক্ষার্থীদের পাশে থেকেছে, আগামীতেও পাশে থাকবে।