Image description
আট দলের সমঝোতার নির্বাচনের প্রস্তুতি

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অন্যতম আকর্ষণ ইসলামি দলগুলোর ঐক্য। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ আট দল জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি দিতে ‘হ্যাঁ’ ভোটের পক্ষে জনমত গঠনসহ পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করছে। আবার ‘এক আসনে এক প্রার্থী’ এই নীতিকে ভিত্তি করে নির্বাচনি মাঠে জোর প্রস্তুতিতে রয়েছে দলগুলো। প্রার্থী ঠিক করতে আসনভিত্তিক জরিপ চলছে। এর ফলাফলের ভিত্তিতে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।

আগামী নির্বাচনে বিএনপির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াতে ইসলামী। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর একসময়কার এই দুই মিত্র দলের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে জামায়াত ইসলামপন্থি দলগুলোকে নিয়ে রাজনৈতিক সমঝোতার দিকে এগিয়ে যায়। দলগুলো হলো চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি।

দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের জানান, আসন সমঝোতায় হবে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর নিজ এলাকায় জনপ্রিয়তার ভিত্তিতে। সবার চাহিদা ও এলাকার অবস্থান অনুযায়ী সমঝোতা করে প্রার্থী দেওয়া হবে। যে দলের সঙ্গেই সমঝোতা হবে, আসন ছাড় কিংবা ত্যাগ ব্যতীত ঐক্য হবে না। যেখানে যে দলের প্রার্থীর অবস্থান ভালো, আমরা সেখানে তাকে বেশি গুরুত্ব দেব। প্রায় সব দলের ত্যাগের মানসিকতা একই হবে।

আট দলের সূত্রে জানা যায়, কেবল রাজনৈতিক সমঝোতা নয়, কোন আসনে কোনো দলের প্রার্থীর জনপ্রিয়তা বেশি, সেটি মাঠপর্যায়ে যাচাই-বাছাই করে মনোনয়ন বা আসন ছাড়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের পক্ষ থেকে প্রতিটি দলকে অভ্যন্তরীণ জরিপ চালিয়ে তথ্য লিয়াজোঁ কমিটিতে জমা দিতে বলা হয়েছে। 

জানতে চাইলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে এসেছে। তাই প্রার্থী চূড়ান্তকরণে কাজ চলছে। এরই মধ্যে আসনভিত্তিক জরিপ চলছে। তফসিল ঘোষণার আগেই প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের এরই মধ্যে ৩০০ আসনে প্রার্থী রয়েছে। তারা মাঠে কাজ করছে। সমঝোতা হলে সংশ্লিষ্ট আসনগুলো থেকে আমাদের প্রার্থী সরিয়ে শরিক দলের প্রার্থী দেওয়া হবে। এটা আমাদের আগে থেকেই ঘোষণা ছিল।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুস আহমদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, জনপ্রিয়তা ও বিজয়ের সম্ভাবনা যাচাইয়ে ৩০০ আসনেই জরিপ চলছে। নভেম্বরেই কাজ শেষ হয়ে যেতে পারে। এরপর ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আসন সমঝোতার বিষয়টি চূড়ান্ত হতে পারে। আসনে যে দলের প্রার্থীর জনপ্রিয়তা বেশি সে দলের প্রার্থী দেওয়া হবে। আমরা এই ভিত্তিতেই আছি। তবে আমাদের ৩০০ আসনে প্রার্থীরা মাঠে নির্বাচনি প্রচারণায় রয়েছে।

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও প্রচার বিভাগের প্রধান এহসানুল মাহবুব জোবায়ের বলেন, জামায়াত সর্বোচ্চ সমঝোতা করেই নির্বাচন করবে। ডিসেম্বরের শুরুতেই আশা করি সবাই মিলে প্রার্থী ঘোষণা করব। কে কত বেশি আসনে নির্বাচন করবে, এর চেয়ে বেশি জরুরি কার কয়টি আসনে জিতে আসার আত্মবিশ্বাস, জনসমর্থন ও সামর্থ্য রয়েছে। তিনি বলেন, প্রতিটি আসনে আমাদের জামায়াতের জেলা, উপজেলা পর্যায়ে ওই প্রার্থীর জন্য কাজ করবে। আমাদের সমঝোতায় টার্গেটই থাকবে প্রার্থীকে জিতিয়ে আনা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জামায়াতের শীর্ষ এক নেতা বলেন, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আমাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে। কোন দল কত আসন পাবে সেটা ওই সময় বলা যাবে। তবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশসহ অন্যান্য দলগুলোকে শতাধিক আসন ছাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।