গাজীপুর-৬ নতুন সংসদীয় আসনে কে পাচ্ছেন বিএনপির মনোনয়ন—এমন প্রশ্নে এখন সরগরম স্থানীয় রাজনীতি। এই আসনে বিএনপির ১৪ থেকে ১৫ জন নেতা-কর্মী নিজেদের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিলেও দলীয় শীর্ষ নেতৃত্ব সম্ভাব্য ৮ প্রার্থীকে ধানের শীষের প্রচারণার জন্য ‘গ্রীন সিগন্যাল’ দিয়েছেন। তাদের মধ্য থেকেই একজনকে চূড়ান্তভাবে বেছে নেওয়া হবে।
সোমবার রাতে ঢাকার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ঢাকা সহ ৫ বিভাগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের সঙ্গে সভা করেন। ওই সভায় গাজীপুর-৬ থেকে ৮ জনকে ডাকা হয়।
গুলশানের ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক এমপি হাসান উদ্দিন সরকার, শ্রমিকদলের সভাপতি সালাহউদ্দিন সরকার, মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক রাকিব উদ্দিন সরকার পাপ্পু, টঙ্গী থানা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক ছাত্রনেতা প্রফেসর বসির উদ্দিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক জিএস আরিফ হোসেন হাওলাদার, টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপির সভাপতি সরকার জাবেদ আহমেদ সুমন, সাধারণ সম্পাদক গাজী সালাহউদ্দিন এবং মহানগর যুবদলের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক হাজী মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন ভাট।
সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন গাজীপুরের বিদ্যমান ৫টি সংসদীয় আসন ভাগ করে ৬টিতে রূপান্তর করায় স্থানীয় ভোটার ও সম্ভাব্য প্রার্থীরা উচ্ছ্বসিত। গাজীপুর-২ আসনের অংশ নিয়ে গঠিত গাজীপুর-৬ (টঙ্গী পূর্ব-পশ্চিম থানা, গাছা থানা ও পূবাইল থানার আংশিক এলাকা) বর্তমানে অন্যতম আলোচিত রাজনৈতিক কেন্দ্র।
বিএনপির স্থানীয় নেতারা জানান, কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতৃত্ব যাকেই মনোনয়ন দেবে, তৃণমূল পর্যায়ের সবাই ধানের শীষের পক্ষেই কাজ করবেন। যদিও প্রার্থীতা ঘোষণার পর থেকে অনেকে নিজেদের অনুসারী গোষ্ঠী নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অনুসারীদের তদবির ও লবিং মনোনয়ন প্রাপ্তিতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
২৭ অক্টোবরের গুলশান সভায় তারেক রহমান বলেন, “মনোনয়ন যাকেই দেওয়া হোক না কেন, তার পক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এবারের নির্বাচন হবে চ্যালেঞ্জের। কেউ বিশৃঙ্খলা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে জামায়াতে ইসলামী থেকে দাড়িপাল্লা মার্কায় প্রার্থী ড. হাফিজুর রহমান এবং ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের হাতপাখা মার্কায় এম. এ. হানিফ সরকার ইতোমধ্যেই প্রার্থীতা ঘোষণা করেছেন।
বিএনপির শীর্ষ সূত্র জানিয়েছে, তারেক রহমানের ‘সবুজ সংকেত’ পাওয়া মানে এখনও নিশ্চিত মনোনয়ন নয়। মাঠপর্যায়ে প্রার্থীর জনপ্রিয়তা, দলীয় আনুগত্য, অতীত ভূমিকা এবং ৩৬ জুলাইয়ের আন্দোলনে অংশগ্রহণ বিবেচনায় নিয়ে বিশেষ টিম প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ করছে। সবশেষে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে—গাজীপুর-৬ আসনে বিএনপির চূড়ান্ত মনোনয়ন পাচ্ছেন কে? সময়ই দেবে তার জবাব।