আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র সাড়ে তিন মাস বাকি। নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপ অনুযায়ী, চলতি বছরের ডিসেম্বরের প্রথমার্ধেই ঘোষিত হবে তফসিল। এর মধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলো ব্যস্ত সময় পার করছে জোট গঠন, প্রার্থী বাছাই ও নির্বাচনী কৌশল নির্ধারণে। এমন প্রেক্ষাপটে সংশোধিত হয়েছে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও), যা নতুন করে ভাবনায় ফেলেছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোটকে।
সূত্র জানায়, বিএনপি মিত্রদের জন্য প্রায় ৫০টি আসন বরাদ্দ রাখার পরিকল্পনা করেছে। তবে পুরো বিষয়টি এখনো পর্যালোচনার পর্যায়ে রয়েছে, এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে দলের হাই কমান্ড।
জানা গেছে, বিএনপির চাওয়া অনুযায়ী যুগপথ আন্দোলনের শরিক দলগুলো মোট ১০৩ জন প্রার্থীর তালিকা জমা দিয়েছে। এর মধ্যে—
-
১২-দলীয় জোট থেকে ২১ জন,
-
জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট থেকে ৯ জন
-
গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য থেকে ১৯ জন,
-
এলডিপি থেকে ১৩ জন,
-
গণফোরাম থেকে ১৬ জন,
-
এনডিএম থেকে ১০ জন,
-
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) থেকে ৫ জন
-
বাংলাদেশ লেবার পার্টি থেকে ৬ জন,
-
এবং বাংলাদেশ পিপলস পার্টি (বিপিপি) থেকে ৪ জন প্রার্থীর নাম পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া, গণতন্ত্র মঞ্চ ও গণঅধিকার পরিষদও যথাক্রমে ৫০ জন ও ৩০ জনের প্রার্থী তালিকা শিগগির জমা দিতে পারে বলে জানা গেছে।
বিএনপির সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শরিক দলের এই ১০৩ জনের প্রার্থীর তালিকা এখন লন্ডনে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে রয়েছে। তিনি নিজ হাতে যাচাই-বাছাই করছেন প্রতিটি প্রার্থীর জনপ্রিয়তা, গ্রহণযোগ্যতা ও নির্বাচনী যোগ্যতা। পাশাপাশি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের শক্তিমত্তাও বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে সম্প্রতি উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের সংশোধনীর খসড়া, যেখানে বলা হয়েছে জোট গঠিত হলেও প্রতিটি দলকে নিজেদের প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে। এই বিধান বিএনপির জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে, কারণ এতে জোটের শরিক প্রার্থীদের ধানের শীষ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা সম্ভব হবে না।
বিএনপি সূত্র জানিয়েছে, বিষয়টি সুষ্ঠু রাজনীতি ও নির্বাচনের স্বার্থে পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়ে দলটি শিগগিরই নির্বাচন কমিশনে আনুষ্ঠানিক চিঠি দেবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, “মিত্রদের আসন বণ্টন নিয়ে আমরা এখনো পর্যালোচনায় আছি। তবে সংশোধিত আরপিও অনুযায়ী এখন শরিকদের নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে যা নতুন করে ভাবনার সৃষ্টি করেছে। এই বাস্তবতায় আমাদের আরও গভীরভাবে চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”
অন্যদিকে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় বিএনপি নেতৃত্বাধীন আওয়ামী ফ্যাসিবিরোধী যুগপথ আন্দোলনের শরিক দলগুলো দ্রুত নিজেদের আসনে মনোনয়নের নিশ্চয়তা চাচ্ছে।