Image description

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং গণঅধিকার পরিষদ একটি দলে একীভূত হওয়ার জন্য আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা তরুণদের দল দুটি একীভূত হলে এতে আরও একাধিক দল যুক্ত হতে পারে। তবে দলগুলোর একীভূত হওয়ার পথে রয়েছে বেশ কিছু জটিলতা। রয়েছে নানা রাজনৈতিক সমীকরণ। একীভূত হওয়া দলটি কী নতুন নামে আত্মপ্রকাশ করবে, নাকি একটি দলের নামেই পরিচালিত হয়ে অপর দলটিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হবে? আর দলের প্রধানই বা কে হবেন? একসঙ্গে দুই দলের শীর্ষ নেতারা কে কোন পদে থাকবেন? এরকম বেশ কিছু প্রশ্ন সামনে আসছে। অবশ্য দল দুটির নেতারা বলছেন, তারা আলোচনা অব্যাহত রেখেছেন। উভয়পক্ষ যথেষ্ট ছাড় দেওয়ার মানসিকতা নিয়ে আলোচনার টেবিলে বসছেন। গণঅধিকারের সভাপতি নুরুল হক নুর আজ (সোমবার) উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন। তিনি দেশে ফেরার পর শুরু হবে আনুষ্ঠানিক আলোচনা। এনসিপি সূত্রে জানা যায়, নতুন কোনো প্ল্যাটফর্ম নয়, একীভূত হওয়া দলটি এনসিপি নামেই রাজনীতি করবে। গণঅধিকার পরিষদকে এনসিপির পতাকাতলে নিয়ে আসা হবে। একীভূত দলটির প্রধান হিসেবে থাকবেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। গণঅধিকারের সভাপতি নুরুল হক নুরকে এনসিপির গুরুত্বপূর্ণ ও সম্মানজনক পদে অধিষ্ঠিত করা হবে। গণঅধিকারের অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতা নতুন দলীয় পরিচয়ে নিজ নিজ পদে বহাল থাকবেন। 

এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও রাজনৈতিক লিঁয়াজো প্রধান আরিফুল ইসলাম আদীব বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে এনসিপির গঠন প্রক্রিয়া এবং রাজনৈতিক আদর্শগত মিল রয়েছে। দুটি দলই তারুণ্যশক্তিনির্ভর। একীভূত করার বিষয়ে আমাদের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চলছে। এ প্রচেষ্টা সফল হলে আমরা তরুণরা রাজনীতিতে আরও ব্যাপক প্রভাব রাখতে পারব বলে মনে করি।

এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ বলেন, একটা কথা স্পষ্ট এনসিপির নাম পরিবর্তন হচ্ছে না। এক বা একাধিক দল এনসিপির সঙ্গে একীভূত হওয়ার ব্যাপারে আলোচনা চলছে। আর ইনশাআল্লাহ তরুণদের শক্তি ঐক্যবদ্ধ হলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক নতুন যুগের সূচনা হবে। গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমাদের দুটি দলের মধ্যেই অত্যন্ত ইতিবাচক মন-মানসিকতা নিয়ে আলোচনা চলছে। উভয় পক্ষই যথেষ্ট ছাড় দিতে রাজি আছে। গণঅধিকার পরিষদ এবং এনসিপি দুটি দলই রাজপথের লড়াই থেকে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে গড়ে উঠেছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে একসঙ্গে লড়াই-সংগ্রাম করছি। দেশের এবং মানুষের স্বার্থে আমরা এখন একসঙ্গে আগামীর পথ চলার বিষয়ে আলোচনা করছি।গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক শাকিল উজ্জামান বলেন, ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্য দিয়েই গণ অভ্যুত্থানের বীজ বপন হয়েছিল। এনসিপির অনেক নেতাই এক সময় গণঅধিকার পরিষদ ও এর অঙ্গসংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। গণ অভ্যুত্থানের আকাক্সক্ষায় তরুণদের ঐক্যবদ্ধ করে নতুন বাংলাদেশ নির্মাণে আমরা অনেক দিন ধরেই এনসিপিসহ আরও কয়েকটি প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছি। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে জুলাইয়ের মূল অংশীজনদের ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই।

গণঅধিকার পরিষদের যুব সংগঠন যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোরশেদ মামুন বলেন, আমাদের একীভূতকরণের প্রচেষ্টা সফল হলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক তৈরি হবে। কীভাবে এ প্রচেষ্টাকে সফলভাবে উতরানো যায় তা নিয়ে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চলমান রয়েছে।