Image description
ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বেহাল দশা যানজটে বাংলাদেশ প্রতি বছর ৬৫০ কোটি ডলার আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে :ঢাকা চেম্বার সভাপতি

যুগের চাহিদা অর্থনৈতিক উন্নয়ন। এ জন্য দ্রুত সেবা, দ্রুত উন্নয়ন নীতিতে চলছে গোটা বিশ্ব। কিন্তু বাংলাদেশ এখনো সেকেলেই পড়ে আছে। এখনও উন্নয়ন কাজ মানেই সময়-খরচ বৃদ্ধি। সড়কের উন্নয়ন মানেই অতিরিক্ত সময় ব্যয় ও অর্থের অপচয়। এর সঙ্গে রয়েছে সড়ক-মহাসড়কের যানজট। যানজটের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রতিদিন ব্যাপক ক্ষতি হয়- যার মধ্যে রয়েছে কর্মঘণ্টা নষ্ট হওয়া, জ্বালানি অপচয়, পরিবহন ও পণ্যের খরচ বৃদ্ধি এবং জিডিপিতে নেতিবাচক প্রভাব। দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথা অর্থনীতির লাইফলাইন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে খানাখন্দের সৃষ্টি হওয়ায় যান চলাচলে মারাত্মক বিঘœ ঘটছে। চলতি বর্ষায় মেরামতের কাজ তেমন না হওয়ায় ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা ও ফেনী জেলার বিভিন্ন অংশে খানাখন্দে সৃষ্ট যানজটে সময়ও নষ্ট হচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দরের মালবাহী ট্রাক চলাচল। একই সাথে বেড়েছে যাত্রীদের ভোগান্তি। অন্যদিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের অবস্থা আরও বেহাল। কথা ছিল ঢাকা থেকে সিলেট সাড়ে ৩ ঘণ্টায় পৌঁছে যাবেন যাত্রীরা। স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের আমলে মহাসড়কটি ৬ লেনে উন্নীত করা নিয়ে তোড়জোড় শুরু হলেও তিন বছরে কাজ হয়েছে মাত্র ১০ শতাংশ। চার ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে এখন ৮/১০ ঘণ্টা সময় লাগছে।

এই মহাসড়কে বিভিন্ন অংশে ৮/১০ কিলোমিটার যানজট নিত্য দিনের ঘটনা। এতে করে ঢাকা-সিলেট রুটের দূরপাল্লার বাসের ব্যবসা অনেক দিন ধরেই মন্দা যাচ্ছে। যাত্রীরা সিলেটে যাওয়ার জন্য ট্রেনের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। মহাসড়কের বেহাল দশায় একদিকে পণ্য পরিবহনে সময় ও অতিরিক্ত ব্যয় বাড়ছে। অন্যদিকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পরিবহনে পণ্যের গুণগতমান ঠিক রাখতে বরফ ব্যবহার করা হলে দেখা যায়, ওই সময়ের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছাতে না পারায় পণ্য নষ্ট হচ্ছে অথবা গুণগত মান থাকছে না। অনেক সময় দশ মিনিটের দূরত্ব পার হতে ২ ঘণ্টা লেগে যায়। পরিকল্পনামাফিক সময়কে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। ফলে সময়ের কাজ সময়ে করা যায় না। এতে আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে। অর্ধযুগ আগে বিনিয়োগ বোর্ডের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, যানজটের কারণে বছরে ক্ষতি হয় এক লাখ কোটি টাকা। উৎপাদন খাত, স্বাস্থ্যগত ও দুর্ঘটনার ক্ষতি হিসাব করলে এর পরিমাণ হবে প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা। যদিও বর্তমানে এই ক্ষতির পরিমাণ কয়েকগুণ। যে কারণে একদিকে দেশের সম্মান নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে ক্ষতিতে পড়ছে ব্যবসায়ীরা। পণ্যের পাশাপাশি যানজট ও খানাখন্দে গাড়ী ও টায়ারসহ এর সঙ্গে কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, দীর্ঘ যানজটে সময় ও আর্থিক ক্ষতি হিসাবে এলেও শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যগত ক্ষতি কয়েক গুণ বেশি। দীর্ঘক্ষণ যানজটে পড়ে নাগরিকদের মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাচ্ছে ও উদ্বেগ বাড়ছে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। হার্ট, ফুসফুস, কিডনি, হৃদযন্ত্র ও প্রজননতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে সড়ক ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে বছরে প্রায় সাড়ে ৪১ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় করে সরকার। জ্বালানি তেল ও যানবাহন থেকে শুল্ক, কর ও নিবন্ধন ফি আদায় এবং টোল বাবদ আয় হয় এ অর্থ। যদিও সড়ক রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় হয় তার মাত্র ২১ শতাংশ বা ৮ হাজার ৭৬০ কোটি টাকা। ফলে দেশের সড়ক নেটওয়ার্কের একটি বড় অংশই থেকে যাচ্ছে ভাঙাচোরা দশায়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দেশের বৃহত্তম বন্দর ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র চট্টগ্রামের সঙ্গে ঢাকার সংযোগকারী প্রধান সড়ক হিসেবে কাজ করে। দেশের অর্থনীতির অনেকটাই নির্ভরশীল এই মহাসড়কের উপর।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকিন আহমেদ বলেছেন, যানজটের কারণে বাংলাদেশ প্রতি বছর আনুমানিক ৬ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার (৬৫০ কোটি ডলার) আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। যার মধ্যে কর্মঘণ্টা নষ্ট হওয়া একটি প্রধান কারণ। তিনি বলেন, বড় মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হলেও যানজটের কারণে এই বিশাল অঙ্কের ক্ষতি হচ্ছে। যা দেশের অর্থনীতির জন্য একটি বড় বোঝা। একই সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি অন্যান্য সমাধান খোঁজার প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেন তাসকিন আহমেদ।

ভুক্তভোগীরা জানায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে প্রতিদিনই যানজটে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত ১০৫ কিলোমিটারের রাস্তাটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। নোয়াপাড়াসহ চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ অংশেরও একই হাল। গেল বছরের আকস্মিক বন্যায় নিশ্চিন্তপুর থেকে ক্যান্টনমেন্ট এলাকা পর্যন্ত দুই লেনের সড়কের বেশকিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সড়কের এই বেহাল অবস্থায় বিশেষ করে পণ্য বোঝাই বিভিন্ন যানবাহনের চালকরা সতর্কতার সঙ্গে গাড়ি চালাতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে যানবাহনের গতি কমেছে এবং ঘন ঘন যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। তার উপর মহাসড়কের উপর যত্রতত্র বাস স্টপেজ ও হাট-বাজার বসায় যানজটের ভোগান্তি আরও বাড়িয়েছে। ২০০৬ সালে কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ১৯২ কিলোমিটার দুই লেনের সড়কটিকে চার লেনে উন্নীত করার প্রকল্প পাস করা হয় একনেকে। এর আগে প্রথম দফায় ঢাকা থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত চার লেনের সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ হয়। ২০০৬ সালে প্রকল্প অনুমোদনের পর কয়েক দফায় সময় ও ব্যয় বাড়িয়ে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা এবং দশ বছর সময় ব্যয় করে ২০১৬ সালে উদ্বোধন করা হয় মহাসড়কটি। বিশেষজ্ঞদের মতে, চিন্তার দৈন্যতা এবং ভুল সিদ্ধান্তের কারণে দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কটি পণ্য ও যাত্রীবান্ধব হয়ে উঠতে পারেনি। ভুল পরিকল্পনায় রাস্তার বিভিন্ন স্থানে যানজট লেগেই থাকে। তিন ঘণ্টার পথ অতিক্রম করতে ৫/৬ ঘণ্টা পর্যন্ত লেগে যায়। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও ও মেঘনা এলাকায়ও খানাখন্দের কারণে প্রতিদিনই যানজট লেগেই থাকছে। অন্যদিকে ফেনীর বিভিন্ন অংশেও একই দশা।

দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ জাতীয় মহাসড়কটিতে যানজটের প্রধান কারণ যত্রতত্র বাজার। আরও কারণের মধ্যে রয়েছে যেখানে-সেখানে বাসস্ট্যান্ড, পণ্য উঠানামা, নিষিদ্ধ স্বল্পগতির থ্রি-হুইলার,ব্যাটারি চালিত রিকশা, অপরিকল্পিত হাইওয়ে রেস্টুরেন্ট-টোল প্লাজা ও ক্রসিং, আইন অমান্য করে উল্টোপথে যান চলাচলের প্রবণতা ইত্যাদি। নির্মাণকালে দুইপাশে যথেষ্ট জায়গা থাকা সত্ত্বেও রাস্তার অপরিকল্পিত নকশায় এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এক্সপ্রেসওয়ের আদলে রাস্তার নকশা প্রণয়ন করা হলে কোনো প্রতিবন্ধকতাই তৈরি হতো না। সাধারণ নকশার কারণে রাস্তার দুই ধারে গড়ে উঠেছে অসংখ্য হাট-বাজার। মহাসড়কে পায়ে হাঁটা পথসহ সকল ধরনের যানবাহন চলাচলের সুযোগ রয়েছে অবাধে। এক কথায়, মহাসড়কের কোনো চরিত্রই এই রাস্তায় খুঁজে পাওয়া যায় না। সওজ সূত্র জানায়, গত বছর হাসিনা পতনের পর দেশে অস্থিতিশীলতা পরিস্থিতির কারণে মেরামতের কাজ অনেকদিন বন্ধ ছিল। তারই প্রভাব পড়েছে এবার। বর্ষায় বেশ কিছু জায়গায় মেরামত কাজ শুরু হলেও এখনও বর্ষা চলমান থাকায় কাজ করা যাচ্ছে না।

ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক
স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের আমলে মহাসড়কটি ৬ লেনে উন্নীত করা নিয়ে তোড়জোড় শুরু হলেও তিন বছরে কাজ হয়েছে মাত্র ১০ শতাংশ। এক সময় যে পথে সাড়ে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টায় সিলেট পৌঁছা যেতো সেই পথে এখন ১০ থেকে ১২ ঘণ্টাও লাগে। আগামী বছরের মধ্যে ৩০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা থাকলেও ২০২৮ সালের আগে তা হচ্ছে নাÑ এটা অনেকটাই প্রায় নিশ্চিত। সওজের কর্মকর্তাদের দাবি, ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় সময় বেশি লাগছে। শুধুমাত্র ৬ লেনের কারণে সৃষ্ট যানজটে মহাসড়কের কোনো কোনো অংশে ১৫/২০ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে নরসিংদী থেকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ, গাউসিয়া পর্যন্ত ৮/১০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট এখন নিত্যদিনের ঘটনা। এতে করে যাত্রীবাহী বাস ও মালামাল পরিবহন ব্যাহত হচ্ছে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে দূরপাল্লার বাস কোম্পানীগুলো এখন যাত্রীর অভাবে যাত্রী পায় না। পরিবহন মালিকরাও লোকসান গুণছেন।

যাত্রীদের অভিযোগ সাড়ে তিন ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে এখন সময় লাগছে ১০-১২ ঘণ্টা। অথচ ৬ লেনের কাজ শুরু হওয়ার আগেও এই পথে ৫/৬ ঘণ্টায় যাওয়া যেতো। ঢাকা অথবা চট্টগ্রাম থেকে বড় বড় ট্রাক মাল নিতে খালি যায় রাস্তায় চাপ পড়ে কম, কিন্তু সিলেট থেকে যখন অতিরিক্ত মালামাল বোঝাই করে রওয়ানা দেয় তখন এসব ট্রাকের চাপে অনেক জায়গায় রাস্তা মারাত্মকভাবে দেবে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসব স্থানে চালকরা ডানদিকে গাড়ি নিয়ে যেতে চেষ্টা করেন। এতে প্রায়ই বিপরীত দিক থেকে দ্রুত গতিতে আসার গাড়ির জন্য দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে। তবে সড়ক ও জনপথ (সওজ) কর্মকর্তারা বলছেন, ছয়লেনের কাজ চলায় তারা ভাঙাচোরা মহাসড়ক মেরামতে খুব বেশি অর্থ ব্যয় করতে রাজি নন। কোনমতে জোড়াতালি দিয়ে সংস্কার চালিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছেন।

সওজ সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সিলেট-ঢাকা ৬ লেন মহাসড়ক প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়। এই প্রকল্পের আওতায় নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর থেকে সিলেট পর্যন্ত ২০৯ কিলোমিটার সড়ক ছয় লেনে উন্নীতকরণ, সম্প্রসারণ এবং সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের ৫৬ দশমিক ১৬ কিলোমিটার এলাকা চার লেনে উন্নীতকরণ করার কথা। এর মধ্যে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক প্রকল্পের মেয়াদ ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রকল্পের প্রায় চার বছর চলে গেলেও এখন পর্যন্ত প্রকল্পের ১০ শতাংশ কাজও সম্পন্ন হয়নি। মহাসড়কটির বিভিন্ন স্থানে একপাশ বন্ধ রেখে সম্প্রসারণ কাজ চলছে। বেশ কয়েকটি স্থানে চলছে সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ কাজ। এছাড়া মহাসড়কের সিলেট বিভাগ অংশের বিভিন্ন স্থানে নির্মাণ কাজ ছাড়াও ভোগান্তি বাড়িয়েছে মহাসড়কের খানাখন্দ। বিভিন্ন স্থানে সড়ক দেবে গেছে, কোথাও তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্তের। আবার কোথাও পিচ সরে গিয়ে নিচের পাথর বের হয়ে এসেছে। এসব কারণে যানবাহনের গতি কমে আসায় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। বাড়ছে দুর্ঘটনার সংখ্যাও।

মহাসড়কের সিলেট অংশের হবিগঞ্জের মাধবপুর থেকে অলিপুর পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার সড়ক এবং সেতু ও কালভার্ট সম্প্রসারণ কাজ চলছে। সিলেটের ওসমানীনগর, বালাগঞ্জ ও দক্ষিণ সুরমার কয়েকটি স্থানে সড়ক সম্প্রসারণের কাজ চলছে। কিন্তু কাজে ধীরগতি থাকায় দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না যাত্রীরা। শুধু তাই নয়, একবার যানজটে গাড়ি আটকে গেলে তা স্বাভাবিক হতে এক/দেড় ঘণ্টা সময় লাগছে। পথিমধ্যে এমন তিনটি স্থানে যানজটেই নষ্ট হচ্ছে কমপক্ষে ৪/৫ ঘণ্টা।

অর্থনৈতিক গুরুত্ব
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দেশের বৃহত্তম বন্দর ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র চট্টগ্রামের সঙ্গে ঢাকার সংযোগকারী প্রধান সড়ক হিসেবে কাজ করে। এই মহাসড়কটি গার্মেন্টস, ফার্মাসিউটিক্যালস এবং কৃষির মতো শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহনকে সহজতর করে, যা আমদানি-রফতানির জন্য চট্টগ্রাম বন্দরের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। বাংলাদেশের প্রায় ৮০শতাংশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এই রুট দিয়ে পরিচালিত হয়। যা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখার জন্য এর গুরুত্ব তুলে ধরে। যানজট নিরসন ও বাণিজ্য করিডোর হিসেবে মহাসড়কটির সক্ষমতা সংরক্ষণের জন্য যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করা জরুরি বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের অর্থনীতির লাইফলাইন খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উপর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য অনেকটাই নির্ভরশীল। আমদানি-রফতানির সিংহভাগ এই মহাসড়কের উপর নির্ভরশীল। মহাসড়কটি দেশের অর্থনীতিতে যেমন অবদান রাখছে একই সাথে বৈদেশিক বাণিজ্যকেও টিকিয়ে রেখেছে। মহাসড়কের মালামাল পরিবহনে ব্যাঘাত ঘটলে অর্থনীতিতে তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়ে। জিনিসপত্রের দাম রাতারাতি বেড়ে যায়। এজন্য সরকারের উচিত এই মহাসড়কটিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া। তা না হলে যে কোনো মুহূর্তে দেশের অর্থনীতিতে চাপ পড়তে পারে।