
বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সময় ফুরিয়েছে—এমন মন্তব্য করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, "শেখ হাসিনা নিজেই একজন সন্ত্রাসী, আর ছাত্রলীগ রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের প্রধান বাহিনী।"
বুধবার রাতে (৯ জুলাই) ঝিনাইদহ শহরের পায়রা চত্বরে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি ও দেশ গড়ার নতুন প্রত্যয় উপলক্ষ্যে এনসিপি আয়োজিত পদযাত্রা-পরবর্তী জনসভায় তিনি এসব বক্তব্য দেন।
সমাবেশে তিনি আরও বলেন, "মধ্য এশিয়ার কসাই গুজরাটের নরেন্দ্র মোদি আর বাংলাদেশের শেখ হাসিনা এখন দক্ষিণ এশিয়ার অশান্তির জোটে পরিণত হয়েছে। মোদি হাসিনাকে ব্যবহার করে বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে। ভারতে বসে শেখ হাসিনা জুলাই বিপ্লবীদের হত্যা করার ষড়যন্ত্র করছেন। এদেশে তার প্রেতাত্মারা এখনও সক্রিয়, কিন্তু জনতার রায়ে তারা চিরতরে বিদায় নিয়েছে।"
আগে বিচার-সংস্কার, পরে নির্বাচন
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, "এই দেশে আর সাজানো নির্বাচন হবে না। আগে হবে অপরাধীদের বিচার, রাষ্ট্রের কাঠামোগত সংস্কার, তারপর জনগণের নির্বাচনী অধিকার নিশ্চিত করা হবে।"
তিনি হুঁশিয়ারি দেন, বিচার ও সংস্কারের আগে কোনো নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না।
সাংবাদিকদের সম্মানহীন অবস্থার অভিযোগ
দেশের সাংবাদিকদের প্রতি অবমূল্যায়নের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, "সাংবাদিকদের হাতে বোমা ধরিয়ে দিয়ে বলা হয় যাও এলাকার লোকজনের কাছে অপমান খাও। অথচ তারা তাদের সম্মান ও ন্যায্য পারিশ্রমিক থেকে বঞ্চিত।" এক্ষেত্রে সাংবাদিকদের এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানান তিনি ।
সীমান্তে হত্যা, বিএসএফকে খুনি বাহিনী
নাহিদ ইসলাম বলেন,"ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিএসএফ পাখির মতো নিরীহ বাংলাদেশিদের হত্যা করছে। তারা এক নির্মম খুনি বাহিনী হিসেবে মানবতা বিরোধী অপরাধে লিপ্ত।"
নতুন সংবিধান ও জুলাই সনদের বাস্তবায়নের আহ্বান
নাহিদ বলেন, "আমরা ঘরে ফিরব সংবিধান সংস্কার, হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিচার, এবং জুলাই সনদের বাস্তবায়নের মধ্য দিয়েই।"
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য তারেক রেজা, শহীদ রাকিবের মা হাফিজা খাতুন এবং শহীদ সাব্বিরের পিতা আমোদ আলী।
সমাবেশ ঘিরে ঝিনাইদহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড় ও সড়কগুলো ব্যানার, ফেস্টুন ও রঙিন পোস্টারে সজ্জিত হয়। দলীয় শীর্ষ নেতাদের ছবি, স্লোগান ও বার্তায় রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে শহরজুড়ে।
আয়োজকদের মতে, কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নে জেলা ও থানা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা একযোগে দিনরাত পরিশ্রম করেছেন। শহরের সাধারণ জনগণের মাঝেও ছিল ব্যাপক আগ্রহ ও অংশগ্রহণ।