Image description

অবশেষে সকল গুজবের অবসান ঘটিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এ যোগদান করেছেন কলাপাড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি, সাবেক এমপি ও কলাপাড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি আজ মঙ্গলবার দুপুরে বরিশালে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর আমীর, চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মো. রেজাউল করিম সাহেবের হাতধরে দলটিতে যোগদান করেন। 

বিষয়টি নিয়ে কিছুদিন ধরেই গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। গতকাল রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মোস্তাফিজুর রহমান যোগদান করবেন এমন সম্ভাবনার কথা ছড়িয়ে পড়ে। যা আজকে বাস্তবে পরিণত হয়। এ খবরটি এখন কলাপাড়ার সর্বত্র আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। কলাপাড়ায় ব্যক্তি জনপ্রিয়তায় অন্যতম অবস্থানে থাকা এই সাবেক এমপি, বিএনপি নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আগামী সংসদ নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে ‘হাতপাখা’ প্রতীকের সম্ভাব্য প্রার্থী হতে যাচ্ছেন এমনটা মনে করছেন তার অনুসারী ভক্ত ও এখানকার চরমোনাই পীরের অনুসারীর অনেকে। তাকে হাতপাখা প্রতীকের  পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনে সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে অনেক ভক্ত অনুসারী ভাবতে শুরু করেছেন। বর্তমানে মোস্তাফিজুর রহমান কলাপাড়া উপজেলা বিএনপির সদস্য রয়েছেন।

কলাপাড়ায় এমনিতেই চরমোনাই পীরের অনুসারীরা আলাদা সাংগঠনিক শক্তি সঞ্চয় করতে সক্ষম হয়েছেন। রয়েছে তাদের আলাদা শক্ত ভোট ব্যাংক। ইতিপূর্বে তারা পতিত আওয়ামী লীগের একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের তৃণমূল পর্যায়ের নির্বাচনেও কলাপাড়া উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে বিজয় ছিনিয়ে নেন। এ ছাড়া চাকামইয়া ইউনিয়নে মাত্র দুই শতাধিক ভোটে পরাজিত হন ইসলামি আন্দোলন সমর্থিত প্রার্থী। এছাড়া প্রত্যেকটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে দলটির প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সম্মানজনক ভোট পেয়েছেন। এসব দিক বিবেচনা করে বিএনপির সাবেক নেতা মোস্তাফিজুর রহমানের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে যোগদান বলে মনে করছেন অনেকে।

 

তবে এ নিয়ে এই মুহূর্তে বিএনপির এখানকার দায়িত্বশীল পর্যায়ের কেউ কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তারপরও কলাপাড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি হাজী হুমায়ুন সিকদার জানান, তিনি বিএনপি থেকে অনেক কিছু পেয়েছেন। দুই বার উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি যদি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে যোগ দেন তাহলে আমার দলের কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মতে দলীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 
উল্লেখ্য মোস্তাফিজুর রহমান ১৯৮৯-১৯৯১ সাল পর্যন্ত এবং ২০০৯ সালের ৩১ মে থেকে ২০১৪ সালের ২০ মে পর্যন্ত কলাপাড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়া তিনি ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে পটুয়াখালী-৪ আসনে বিএনপি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। মোস্তাফিজুর রহমানের যোগ দেওয়ার কারণে তৃণমূল পর্যায়ের ইসলামি আন্দোলন নেতাকর্মীরা উচ্ছ্বসিত রয়েছেন। তার ব্যক্তি ভক্তরা বেজায় খুশি রয়েছেন।

এনিয়ে মোস্তাফিজুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান পীর সাহেবের কাছে গিয়ে তার দলে যোগ দিয়েছি এটি সত্যি। দীর্ঘদিন আমি বিএনপিতে নিষ্ক্রিয় ছিলাম। বর্তমান রাজনীতির প্রেক্ষাপটে আমি মনে করি বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলন সঠিক করছে। জীবনের শেষ বয়সে মানুষের জন্য কিছু করার জন্য তার এই দলে যোগ দেওয়া বলে জানান। আর প্রার্থী হিসেবে আমি নমিনেশন চাইবো। যোগ্য মনে করে মনোনয়ন দিলে এই আসন (পটুয়াখালী-৪) থেকে নির্বাচন করবো।

 

ইসলামি আন্দোলন কলাপাড়া উপজেলা শাখার সভাপতি মুফতি মো হাবিবুর রহমান জনকণ্ঠ কে জানান, মূলত নির্বাচনী কোন শর্ত ছাড়াই তিনি পীর সাহেব চরমোনাইয়ের দলের আদর্শের প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও সম্মান দেখিয়ে ইসলামের খেদমত করতে আজকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এ যোগ দিয়েছেন।  এমপি প্রার্থী মনোনয়ন কিংবা সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে সিদ্ধান্তের সাথে এর কোনো ধরনের সম্পর্ক নাই। যা আমাদের পীর সাহেব স্পষ্টভাবে যোগদানের আগে বলেছেন।

তবে যে যাই বলুক না কেন মোস্তাফিজুর রহমানের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এ যোগ দেওয়ার  বিষয় টি এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে। কলাপাড়ার  সর্বত্র এ নিয়ে সরব আলোচনা চলছে।