Image description

২ শতাধিক সুপারিশ করতে যাচ্ছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। এ ছাড়া ভবিষ্যতে বিসিএসে ক্যাডার শব্দটি না রাখতেও সুপারিশ করা হচ্ছে। পাশাপাশি ক্যাডার কমানোর প্রস্তাবও থাকছে বলে কমিশনের একাধিক সদস্য বাংলাদেশ প্রতিদিনকে নিশ্চিত করেছেন।

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন অংশীজনদের মতামত নেওয়ার পর কয়েকদিন ধরে বৈঠক করে কমিশনের রিপোর্ট চূড়ান্ত করেন। গতকাল শেরেবাংলা নগরে সকাল ১১টা থেকে ৭ ঘণ্টার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে জমে থাকা বাকি কাজ চূড়ান্ত করে কমিশন। এখন সুপারিশগুলো বই আকারে বাঁধাই করতে প্রেসে পাঠানো হবে বলে জানা গেছে। নাম প্রকাশ না করে কমিশনের এক সদস্য বলেন, আমাদের কাজ শেষ, এখন প্রিন্টিং হবে। এর পর প্রধান উপদেষ্টার সময়সাপেক্ষে আমরা সাক্ষাৎ করব। কমিশনের সুপারিশ নিয়ে আরেক সদস্য বলেন, আমাদের প্রস্তাবগুলো প্রধান উপদেষ্টাকে জানানোর সঙ্গে সঙ্গে সবাই জানবে। অন্য কমিশনের মতো আমরাও আমাদের রিপোর্ট পাবলিক করে দেব। আগামীতে আর কোনো ক্যাডার শব্দ থাকছে না, সে সুপারিশ করবে এই কমিশন। ক্যাডার শব্দটির মধ্যে একটা নেতিবাচক ভাব রয়েছে, পাশাপাশি শব্দটি নিয়ে অনেকের আপত্তি আছে। কী থাকছে ক্যাডারের পরিবর্তে, সে প্রশ্নের জবাবে ওই সদস্য বলেন, আমরা সার্ভিস রাখার প্রস্তাব রেখেছি। উদাহরণ দিয়ে বলেন, হেলথ সার্ভিস, অ্যাগ্রিকালচার সার্ভিস এমন। ২৬টি ক্যাডার থেকে কমানো হচ্ছে কি না জানতে চাইলে এক সদস্য বলেন, আমরা চলমান ক্যাডারগুলোকে পুনর্গঠনের প্রস্তাব করব। আমাদের মতো দেশে আসলেই এত ক্যাডার দরকার কি না সেটা বিবেচনার বিষয়। এ ক্ষেত্রে কিছুটা কমে অন্যদের সঙ্গে মানে রি-অর্গানাইজ থাকবে এটা আপাদত বলছি। বাকিটা রিপোর্ট পেলে দেখেেত পাবেন। কমিশনের সদস্যরা জানান, এমন সুপারিশ আমরা করতে যাচ্ছি কোনো সার্ভিসের কোনো ধরনের অসন্তুষ্ট হওয়ার সুযোগ নেই।

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, উপসচিব হওয়ার ইস্যুতে প্রশাসন ৫০ শতাংশ এবং অন্য ক্যাডার থেকে ৫০ শতাংশ যে বিষয়টি সামনে এসেছিল সেটিরও সুন্দর সমাধান থাকবে। পরীক্ষার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়নের ব্যবস্থা থাকবে। পাশাপাশি সব ক্ষেত্রে মেধাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে জানান কমিশনের সদস্যরা। দেশের পুরানো চারটি বিভাগকে চারটি প্রদেশ করার সুপারিশের কথা ভাবছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছাড়া অন্যান্য বিষয়ের ব্যবস্থাপনা প্রদেশের হাতে দেওয়ার পক্ষেও সুপারিশ করতে যাচ্ছে এ কমিশন। চারটি প্রদেশ করার বিষয়ে নাম প্রকাশ না করে এক সদস্য বলেন, বিকেন্দ্রীকরণের অংশ হিসেবে চারটি প্রদেশ করার প্রস্তাব থাকবে। এসব প্রদেশের পরিচালনা কাঠামো কেমন হবে, কাজ কী কী হবে, সে বিষয় জানা যায়নি। প্রশাসনের ওপর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ চাওয়ার প্রস্তাবও থাকছে কমিশনের সুপারিশে। কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৫ তারিখের মধ্যে সুপারিশ বই আকারে প্রিন্টিংসহ অন্যান্য কাজ সম্পন্ন হবে। আনুষ্ঠানিক বৈঠক আর না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এর পর শুধু প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা বাকি।  অন্তর্বর্তী সরকার গত সেপ্টেম্বর মাসে কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরীর নেতৃত্বে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন করে দেন। গত ৩১ ডিসেম্বর কমিশনের রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা থাকলেও কাজ অসমাপ্ত থাকায় সরকার কয়েক দফায় সময় বাড়িয়েছে।