Image description

বিশিষ্ট লেখক, কবি, দার্শনিক ফরহাদ মজহার বলেছেন, বিখ্যাত পালাকার ও বয়াতি মহারাজ আবুল সরকারের মুক্তি এবং মানিকগঞ্জে ভক্তদের ওপর বর্বর হামলার প্রতিবাদে আজ সোমবার (২৪ নভেম্বর) সকাল ১১টায় ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘সাধুগুরুভক্ত ও অলি–আওলিয়া আশেকান পরিষদ’ এক প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। তিনি সবাইকে সেখানে উপস্থিত হয়ে প্রতিবাদ জানাতে আহ্বান জানিয়েছেন।

সোমবার (২৪ নভেম্বর) সকালে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি লিখেছেন, যারা মহান আল্লাহতায়ালার কোরআনের নির্দেশ অনুযায়ী গায়েবে ঈমান এনেছেন; যারা নাফসের লোভ, লালসা, হিংসা, বিদ্বেষ কিংবা অন্যকে ক্ষতি করার বাসনা থেকে মুক্ত; যারা জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও রাসুলের মাধ্যমে নাজিল হওয়া ওহিকেই নশ্বর জীবনের একমাত্র পথনির্দেশ বলে মেনে নেন, এই সমাবেশ তাদের সবার জন্য।

এ ছাড়া যারা বুদ্ধি, বিবেক ও মানবিকতার শক্তিতে সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যান—ধর্ম-বিশ্বাস নির্বিশেষে—এই প্রতিবাদ সমাবেশ তাদের জন্যও উন্মুক্ত। আশা করা হচ্ছে, সবাই উপস্থিত থেকে সমাবেশ ও সরকারের কাছে স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচিকে সফল করবেন।

ফরহাদ মজহার আরো জানান, এই সভা থেকে পরবর্তী কর্মপরিকল্পনাও ঘোষণা করা হবে। দীর্ঘদিন ধরে তারা মাজার ভাঙার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছেন এবং বাংলাদেশে ভক্তি, আশেকানি ও পারস্পরিক সহমর্মিতার মাধ্যমে মতবিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন।

কিন্তু দুঃখজনকভাবে সরকার তাদের এই প্রতিবাদে গুরুত্ব দিচ্ছে না, যা আর চলতে পারে না।

তিনি বলেন, মহারাজ আবুল সরকার ‘মাজার ভাঙা’–বিরোধী আন্দোলন ও জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের পর মাজারকে গণপরিসর হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে একজন অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। প্রতিটি সমাবেশে তিনি পাশে ছিলেন। তাকে গ্রেফতারের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে মামলা না দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছিল।

কেউ তার কথায় কষ্ট পেয়ে থাকলে সংগঠনের পক্ষ থেকে ক্ষমাও চাওয়া হয়। কিন্তু তারপরও তার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়, যা অত্যন্ত হতাশাজনক।

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আজ মানিকগঞ্জে বাউলদের যেভাবে মারধর করা হয়েছে এবং প্রাণভয়ে যেভাবে তাদের পুকুরে ঝাঁপ দিতে বাধ্য করা হয়েছে, এতে আন্তর্জাতিক পরিসরে উপদেষ্টা সরকারের ভাবমূর্তি গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সামাজিক দ্বন্দ্ব সমাধানের ক্ষেত্রে আলোচনার বদলে আইন ও দমননীতির পথ বেছে নেওয়াই এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী। সংঘাত বা আইন কখনই সামাজিক বিরোধ মেটানোর একমাত্র উপায় হতে পারে না।

শেষে তিনি আবারও সবাইকে প্রতিবাদ সমাবেশে যোগ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।