দিনে দিনে পরিষ্কার হচ্ছে হিসাব। সিলেট-৫ আসন হয়তো ছেড়েই দিতে হবে বিএনপিকে। শরিক জমিয়তে উলামা ইসলাম এ আসন চেয়েছে। এখানে প্রার্থী জমিয়ত প্রধান মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক। তিনি ২০১৮ সালে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হয়েছিলেন। এবারো তিনি প্রার্থী। তবে এখনো জোটগত ভোটের ঘোষণা নেই। মাওলানা ফারুকের সাফ জবাবÑ ‘জোট হলেও ভোটে আছি। না হলেও আছি।’ ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত তিনি বলতে পারছেন না জোটের প্রার্থী। তবে তলে তলে হিসাব অনেক দূর এগিয়েছে। আসনে ভোট আছে জমিয়তের। বৈতরণী পার হওয়ার মতো নয়। সহযোগিতা লাগবে বিএনপি’র। এ আসনে ইসলামী দলের ভোট বিভক্ত। খেলাফত মজলিসের প্রার্থীও আছেন আলোচনায়। ফুলতলীর অনুসারীরা সরব হচ্ছেন। দলের চাপে হিসাবনিকাশ করছেন ইসলাহ সভাপতি ও সাবেক এমপি মাওলানা হুসামউদ্দিন চৌধুরী। নানা প্রেডিকশন এ আসনের ভোটে। বিএনপি’র শক্তিশালী ভোট ব্যাংক। এ আসনে গেল কয়েকটি নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী ছিলেন না। তবুও বিএনপি’র ভোট ব্যাংকের কমতি নেই। প্রার্থী দিলেই পাস- এমন ধারণা ভোটারদের। এ আসনে বিএনপি’র প্রার্থী একাধিক। মূল আলোচনায় কয়েকজন।
এর মধ্যে জেলা বিএনপি’র প্রথম সহ-সভাপতি মামুনুর রশীদ চাকসু মামুন, জেলা বিএনপি’র উপদেষ্টা আশিক চৌধুরী, জেলা বিএনপি’র যুগ্ম সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান পাপলু, ইইউ বিএনপি’র সভাপতি জাকির হোসাইন ও নগর স্বেচ্ছাসেবকদলের আহ্বায়ক মাহবুবুল হক চৌধুরী ভিপি মাহবুব। এ আসনে বিএনপি’র তরফ থেকে এখনো প্রার্থী ঘোষণা হয়নি। জোট- ভোটের হিসেবে সেটি আটকে আছে বলে ধারণা করছেন ভোটাররা। তবে মাঠ ছাড়ছেন না বিএনপি’র মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রার্থীরা। তারা ভোটের মাঠে বিরামহীন প্রচারণা চালাচ্ছেন। বিএনপি’র মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রার্থীদের মধ্যে অনেকের মধ্যে জোটগত ভোটের হিসাব নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। তবে ইতিমধ্যে ভোটের মাঠে কথাবার্তা বলতে শুরু করেছেন মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থী মামুনুর রশীদ চাকসু মামুন। ২০১৮ সালে বিএনপি’র দলীয় মনোনয়নও তিনি পেয়েছিলেন। তখন ঐক্যফ্রন্টের সমর্থন যায় জমিয়ত প্রার্থী মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুকের দিকে। দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে মাঠ ছেড়ে দেন চাকসু মামুন।
এবার বিএনপি’র তরফ থেকে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা না করলেও সিলেট-৫ আসনে অনেক কিছুই ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতিমধ্যে চাকসু মামুনের ভাষ্যে এসব বিষয় পরিষ্কার হয়েছে। জোটগত ভোট হলে তিনি থেকে যেতে পারেন ভোটের মাঠে। যদিও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তার তরফ থেকে আসেনি। তিনদিন আগে জকিগঞ্জে এক সমাবেশে তিনি বলেছেন- ‘কোন প্রতীকে নির্বাচন করবো জানি না। তবে আপনারা যদি চান আমি ‘বোতল মার্কা’ নিয়েও দাঁড়াতে পারি।’ তার সমাবেশে বিএনপি’র অনেক নেতাকর্মীই এবার হার্ডলাইনে। জোটে আসন হাতছাড়া হয় বিএনপি’র। দলীয় নেতাকর্মীরা এবার এ আসনে ধানের শীষের জন্য অন্তহীন অপেক্ষায় রয়েছেন। তারা চান দলীয় প্রার্থী। বার বার আসনটি হাতছাড়া হওয়ার কারণে নেতাকর্মীরা হতাশ। অনেক নেতাকর্মী ইতিমধ্যে দলের হাইকমান্ডের নজর কাড়ার চেষ্টা করছেন। সিলেটের এ আসনে এবার ধানের শীষের প্রার্থী যে-ই হবে তার অবস্থান ভালো থাকবে। আওয়ামী লীগ মাঠে নেই। ফুলতলীর অনুসারীরা ভোটে না আসতে পারেন। ফলে বিএনপি থেকে যাকেই প্রার্থী দেয়া হবে তার জয়ের সম্ভাবনা বেশি। আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রার্থী মামুনুর রশীদ চাকসু মামুন মানবজমিনকে জানিয়েছেন- বিএনপি’র কর্মী হিসেবে দল থেকে মনোনয়ন চাইছি। দলের প্রতি আমাদের বিশ্বাস ও আস্থা রয়েছে। দল এবার এ আসন থেকে বিএনপি’র প্রার্থী দেবে বলে আশা করি। তিনি বলেন- জকিগঞ্জ ও কানাইঘাটের বিএনপি’র নেতাকর্মী সহ সাধারণ মানুষ ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দেয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। এবারই সেই সুযোগ এসেছে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে অতীতের মতো এ আসনটি ধানের শীষের শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবে অক্ষত থাকবে বলে জানান তিনি।