Image description

চলতি সপ্তাহের মধ্যে পিয়াজের দাম কমে কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে নেমে না এলে আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে উপদেষ্টা এ কথা জানান। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই আপনাদের মনে আছে পিয়াজের দাম ৩৫-৪০ টাকায় নেমে এসেছিল, সেটা আমাদের কৃষকদের জন্য উৎপাদন ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না। বহুদিন পিয়াজের দাম ৬০ থেকে ৬৫ টাকার মধ্যে স্থির ছিল। আমরা গত এক সপ্তাহ থেকে ১০ দিন ধরে দেখছি পিয়াজের মূল্যের একটা ঊর্ধ্বগতি হয়েছে।

পিয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আমরা মনে করি পিয়াজের কোনো সংকট নেই। কৃষি মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে পিয়াজ সংরক্ষণকে সুবিধাজনক করার জন্য ১০ হাজার হাই ফ্লো মেশিন বিতরণ করেছে। এর ফলে পিয়াজের সংরক্ষণ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটেছে। সর্বোচ্চ গত দুই সপ্তাহ ধরে পিয়াজের দামের উল্লম্ফন ঘটেছে। আমরা জিনিসটার ওপর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখছি। বাণিজ্য সচিব নিজে এ বিষয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।

বশিরউদ্দীন বলেন, আমরা জানি অনেকেই পিয়াজ আমদানির জন্য আবেদন করেছেন। আমাদের কাছে বর্তমানে ২ হাজার ৮০০-এর মতো পিয়াজ আমদানির আবেদন আছে। তিনি বলেন, আমরা বাজারের ওপর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখছি। চলতি সপ্তাহের মধ্যে যদি পিয়াজের দাম প্রয়োজন অনুযায়ী না কমে আমরা আমদানির অনুমোদন ইস্যু করে দেবো। দাম স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এলে আমরা পিয়াজ আমদানির অনুমতি দেবো না।

একাধিক কারণে পিয়াজের দাম বেড়েছে জানিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, মৌসুমের শেষ সময়, শুকিয়ে পিয়াজের ওজনও কমে গেছে, হাইফ্লো মেশিন দিয়ে যারা পিয়াজ সংরক্ষণ করেছেন তাদেরও ব্যয় রয়েছে।

উপদেষ্টা আরও বলেন, আমাদের কাছে যে পিয়াজ আমদানির আবেদন আছে, এর ১০ শতাংশ যদি আমরা ছেড়ে দেই। স্থলবন্দরের ওপাশে অনেক পিয়াজ মজুত করা হয়েছে। আমরা যদি আমদানির অনুমতি দেই, তবে স্বাভাবিকভাবে বাজারে ধস নামবে। আমরা ধস নামাতে চাই না। আমরা চাই একটা স্বাভাবিক মূল্য পরিস্থিতি বিরাজ করুক। এতে আমরা আমাদের নিজস্ব কৃষি সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারবো। কৃষক যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। একইভাবে ভোক্তারা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পিয়াজের দাম বাড়ানোর কোনো তথ্য উপদেষ্টার কাছে নেই জানিয়ে উপদেষ্টা সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা আমাদের জানান যে, এই জায়গায় এভাবে সিন্ডিকেশনটা হচ্ছে।

সিন্ডিকেট করে পিয়াজের দাম বাড়ানো হচ্ছে, এখানে ব্যর্থতা কোথায়? সরকারের মনিটরিং ব্যবস্থা কি নেই? এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, সিন্ডিকেশন হচ্ছে সেটা আপনারা দেখিয়ে দেন। অনিয়ন্ত্রিত মজুতদারি হচ্ছে আমরা সেখানে আমাদের ক্ষমতা আছে সেটা দিয়ে সমাধান করা হবে।

মজুতদারির কোনো তথ্য আপনার কাছে আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার কাছে এই মুহূর্তে কোনো সিন্ডিকেট বা মজুতদারির তথ্য নেই।
কয়েকদিনের ব্যবধানে পিয়াজের দাম কেজিতে ৪০-৫০ টাকা বেড়ে যাওয়াকে যৌক্তিক মনে করেন কিনা জানতে চাইলে বশিরউদ্দীন বলেন, অবশ্যই যুক্তিসঙ্গত নয়। এমন কোনো বিশেষ ঘটনা ঘটেনি। এই মুহূর্তে কৃষকের কাছে পিয়াজ নেই এবং এ বাড়তি মূল্যের টাকা কৃষকের পকেটে যায়নি বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা।

বাণিজ্য সচিব বলেন, কৃষি সচিব আমাকে যে তথ্য দিয়েছেন সেই অনুযায়ী সাড়ে তিন লাখ টনের মতো পিয়াজ আমাদের আছে। এ মাসের মধ্যে আসবে ৮৫ থেকে ৮৭ হাজার টন এবং আগামী মাসে আসবে আড়াই লাখ টন। এরপর রেগুলার পিয়াজ বাজারে আসবে। আমাদের পিয়াজের কোনো সংকট নেই।