Image description
ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ নিয়ে চরম মতবিরোধ । ঐক্যের নামে অনৈক্য: এতদিনের কাজকে অর্থহীন প্রমাণের ঝুঁকি তৈরি করেছে-মত বিশ্লেষকদের । বাড়বে রাজনৈতিক সংঘাত-সহিংসতার আশঙ্কা। নির্বাচন নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিতে পারে । সংকটের দ্রুত সমাধান না হলে সুযোগ নেবে পতিত আওয়ামী লীগ

নানা কারণে ফের জটিল সমীকরণে দেশের রাজনীতি। বিশেষ করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ নিয়ে এখন দলগুলোর মধ্যে চরম মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। নোট অব ডিসেন্ট সুপারিশে লিপিবদ্ধ না করা ও গণভোটের সময় নিয়ে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির মধ্যে এই বিভক্তি প্রবল হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা আদেশ দেবেন কোন ক্ষমতাবলে-তা নিয়েও বেশ কয়েকটি দল প্রশ্ন তুলেছে। এছাড়া কমিশনের আরও কিছু জায়গায় অস্পষ্টতা চিহ্নিত করে তা সংশোধন করার আহ্বান জানিয়েছে কয়েকটি দল। এমন প্রেক্ষাপটে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দীর্ঘ সাড়ে ৮ মাসের কর্মকাণ্ডের ফলাফল কী-তা নিয়ে হিসাব মেলাতে পারছে না রাজনৈতিক মহল।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বেশ লম্বা সময় নিয়ে পরিশ্রমসাধ্য একটি জার্নির পর ঐকমত্য কমিশন অবশেষে কাজ শেষ করেছে। কিন্তু কমিশন যেভাবে তাদের সুপারিশ দিয়েছে, তাতে ‘শেষ ভালো যার সব ভালো তার’ এ কথাটি আর বলা যাচ্ছে না। বরং কমিশনের এতদিনের কাজকে অর্থহীন বলে প্রমাণ করার ঝুঁকি তৈরি করেছে। এছাড়া সৃষ্ট জটিল অবস্থার আশু সমাধান না হলে দেশ অস্থিতিশীল পরিস্থিতির দিকে চলে যেতে পারে। এমনকি নির্বাচন নিয়েও এক ধরনের অনিশ্চয়তা দেখা দিতে পারে।

তারা বলেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে হাতে সময় বাকি আছে সর্বোচ্চ সাড়ে তিন মাস। সরকার এমনিতেই নানা সংকটে আছে। দেশের অর্থনীতি ভালো চলছে না, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যথেষ্ট নাজুক। এর মধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভেদ, দ্বন্দ্ব বাড়ছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের যে পদ্ধতি প্রস্তাবিত হয়েছে, সেটা গ্রহণ করা কোনোক্রমে উচিত হবে না অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের। রাজনৈতিক দলগুলোকেও একে অন্যকে ছাড় দেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে। এমন পরিস্থিতিকে ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে। কারণ ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর বিভেদের সুযোগ নেওয়ার জন্য পতিত আওয়ামী লীগ ওতপেতে বসে আছে।

এ অবস্থায় সরকারের শীর্ষ পর্যায়সহ গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলগুলোর নীতিনির্ধারক মহলের নানান বক্তব্য ও মন্তব্যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে জটিল এক সমীকরণ তৈরি হয়েছে। প্রতিদিন দলগুলোর নানামুখী বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুধু সংকট ঘনীভূত হচ্ছে। সমাধান মিলছে না। আবার সরকারের তরফ থেকেও নানান শঙ্কার কথা জনমনে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা তৈরি করছে।

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বুধবার প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে যমুনায় প্রথম সমন্বয় সভা হয়। এতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ছোটখাটো নয়, বড় শক্তি নিয়ে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা হবে। নির্বাচন বানচালের জন্য ভেতর থেকে, বাইরে থেকে অনেক শক্তি কাজ করবে। ছোটখাটো নয়, বড় শক্তি নিয়ে বানচালের চেষ্টা করবে। হঠাৎ করে আক্রমণ চলে আসতে পারে। এই নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং হবে। যত ঝড়-ঝঞ্ঝাই আসুক না কেন, আমাদের সেটা অতিক্রম করতে হবে।’

এর আগে মঙ্গলবার সচিবালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার বদলে জাতীয় অনৈক্য প্রতিষ্ঠার একটা প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, যে জুলাই জাতীয় সনদে রাজনৈতিক দলগুলো স্বাক্ষর করেছে, সেই স্বাক্ষরিত সনদবহির্ভূত অনেক পরামর্শ বা সুপারিশ ও সনদ বাস্তবায়নের আদেশের খসড়ায় যুক্ত করা হয়েছে।

বুধবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, যে বিষয়গুলোতে তারা একমত ছিলেন না, সেখানে তারা নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছিলেন। সেই নোট অব ডিসেন্ট সুপারিশে লিপিবদ্ধ করার একটা প্রতিশ্রুতি ছিল কমিশনের। কিন্তু অবাক হয়ে তারা লক্ষ্য করলেন, সুপারিশে সেই বিষয়গুলো নেই। নোট অব ডিসেন্টগুলো পুরোপুরি উপেক্ষা করা হয়েছে। এটা তো ঐক্য হতে পারে না। তাহলে ঐকমত্য কমিশনটা করা হয়েছিল কেন? তিনি বলেন, জনগণের সঙ্গে এটা একটা প্রতারণা। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এটা প্রতারণা।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, এত বড় একটা অভ্যুত্থান, এত ত্যাগের বিনিময়ে, এত প্রাণের বিনিময়ে সেটাকে ঠিকভাবে জাতির কল্যাণে কাজে লাগানো যাচ্ছে না। দুর্ভাগ্যজনকভাবে দেখা যাচ্ছে, যতই দিন যাচ্ছে, ততই বিভক্ত বাড়ছে। বিভক্ত হয়ে পড়াটা, এটা কারা করছেন, কেন করছেন, এটাও উপলব্ধি করতে হবে।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বুধবার জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঠিক সময়ে হবে। তবে নির্বাচন কোনো কারণে পিছিয়ে গেলেও জুলাই সনদের বাস্তবায়ন যেন না পেছায়, সেজন্য আগে গণভোট করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে অবিলম্বে গণভোটের তারিখ ঘোষণার দাবি জানিয়ে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, গণভোটের তারিখ ঘোষণায় যত দেরি হবে, জাতীয় নির্বাচন তত সংকটের মধ্যে পড়বে। বুধবার রংপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, দেশে নানামুখী সংকট তৈরি হয়েছে। পতিত স্বৈরাচারী শক্তি ষড়যন্ত্র করছে। নানামুখী সংকটের জন্য আমাদের জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন। আমাদের দলগুলোর মধ্যে যে সমস্যা রয়েছে সেগুলো সমাধান করে এক জায়গায় থাকতে হবে। কেউ যদি মনে করে এককভাবে সব নেতৃত্ব দেবে, সরকার গঠন করে ফেলবে, এটি আসলে সম্ভব হবে না। দেশে সবগুলো পক্ষের মধ্যে ন্যূনতম ঐক্য না থাকলে এককভাবে সরকার গঠন ও সংসদ টিকিয়ে রাখা কারও পক্ষে সম্ভব হবে না। জনগণের ন্যূনতম আকাঙ্ক্ষা, সংস্কার, বিচারের দাবিকে উপেক্ষা করে নির্বাচনের দিকে যাওয়া হলে সেটি টেকসই হবে না।

একই দিন ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, কমিশনের প্রস্তাবিত প্রস্তাব-২-এর বিষয়ে কোনো স্পষ্ট বক্তব্য নেই। এর ফলে গোটা সংস্কার কার্যক্রমই ভন্ডুল হয়ে যেতে পারে। প্রস্তাব-১ এর ক্ষেত্রে কিছু জায়গায় অস্পষ্টতা চিহ্নিত করে তা সংশোধন করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে, ‘আগামী নির্বাচিত সভা সংবিধান সংস্কার বিষয়ে সাংগঠনিক ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে’-এ স্থানে ‘করতে পারবে’ এর স্থলে ‘করবে’ লিখতে হবে এবং সংবিধান সংস্কার বিলের বিষয় ‘বিবেচনা করবে’-এ অস্পষ্টতাও দূর করতে হবে। গণভোটে প্রদত্ত সংবিধান সংস্কার বিলের খসড়া দ্রুত প্রণয়ন এবং জনগণের কাছে উন্মুক্ত করতে সরকারকে আহ্বানও জানান তিনি।

গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি যুগান্তরকে বলেন, হঠাৎ করে মঙ্গলবার কমিশন সুপারিশ করেছেন, সেখানে নোট অব ডিসেন্টের উল্লেখ নেই। এটা তো কোনো ঐকমত্য হয়নি। এ প্রশ্নের ব্যাখ্যা নিশ্চয়ই কমিশন দেবে। তারা জুলাই সনদ সই করেছেন। সনদে নোট অব ডিসেন্ট (আপত্তি) লেখা আছে। এটা দলগুলো নিজ নিজ ইশতেহারে দেবে। যে দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে, ম্যান্ডেট পাবে, সেই দল নিজস্ব প্রস্তাব অনুযায়ী আপত্তির অংশগুলো মীমাংসা করবে।

জুলাই সনদের আদেশ জারি প্রসঙ্গে জোনায়েদ সাকি বলেন, অনেকে দাবি তুলছেন-আদেশ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা। প্রধান উপদেষ্টা আদেশ দেবেন কোন ক্ষমতাবলে? সরকার আদেশ দেয়, সেটা রাষ্ট্রপতির নামে যায়, এটা যে কোনো রাষ্ট্রের নিয়ম। রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন রাষ্ট্রের প্রতীক। যদি প্রধান উপদেষ্টা নিজে এটা জারি করেন, তার মানে তিনি নিজেকে রাষ্ট্রের প্রধান হিসাবে ঘোষণা করছেন এবং কার্যত সংবিধানকে স্থগিত করছেন। ঐকমত্য ছাড়া কেউ কারও সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিলে তা কার্যকর হবে না। এটা সবার উপলব্ধি করা দরকার।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, খসড়ায় আদেশ কে দেবে তা স্পষ্ট করা হয়নি। আদেশ জারির কারণ হিসাবে, ‘জনগণের জ্ঞাতার্থে ও সাংবিধানিক পরিষদের দায়িত্ব সম্পাদনের সুবিধার্থে’-উল্লেখ করা হয়েছে। এর অর্থ হলো-এই আদেশের কোনো বাধ্যবাধকতা থাকছে না। অবশ্য এই খসড়ার শুরুতেই গণ-অভ্যুত্থানের সার্বভৌম ক্ষমতা আছে বলে স্বীকার করা হয়েছে, কিন্তু জনতার অভিপ্রায়ের কোনো প্রয়োগ এই খসড়ায় দেখা যাচ্ছে না।

এদিকে বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার বলেন, জুলাইয়ে যারা প্রাণ দিয়েছেন, রক্ত দিয়েছেন, তাদের সবার আত্মত্যাগ ব্যর্থ হয়ে যাবে যদি গণভোটে জুলাই সনদ পাশ না হয়। এজন্য জুলাই সনদ পাশ করানোর দায়িত্ব সবার।

এদিকে এ ধরনের বক্তব্যের ভবিষ্যৎ কী হবে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, জাতীয় সংসদ ভবনে জুলাই সনদ যেভাবে স্বাক্ষর করা হয়েছিল, মঙ্গলবার সেভাবে উপস্থাপন করলে সমস্যাটা হতো না। এখন যেটা উপস্থাপন করা হয়েছে, তাতে নতুন নতুন কয়েকটা বিষয় এসেছে। যেমন- উচ্চকক্ষে আনুপাতিক নির্বাচন, সাংগঠনিক পরিষদ বা গণভোটের ব্যাপার। ফলে এ বিষয়গুলোতে প্রয়োজনে আরও কয়েকদিন লাগলেও দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে উপস্থাপন করলে ভালো হতো। এটা না হওয়ায় ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছে।

তবে এখনো সরকারের কোর্টেই বল আছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ঐকমত্য কমিশন তার কাজ শেষ করেছে। কিন্তু সরকারের কাছে তো কাজ আছে। সরকার গণভোট বা অন্য বিষয়গুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করতে পারে। তাদের বুঝাতে পারে। ঐকমত্যে আনতে হবে। ফলে আমার মনে হয়, আলাপ-আলোচনা করলে এই অনৈক্য কেটে যাবে।

সিনিয়র সাংবাদিক মাসুদ কামাল যুগান্তরকে বলেন, আগামী নির্বাচনে যেসব রাজনৈতিক দল অংশ নেবে, ধরেন ১০টি দল অংশ নেবে। তারা সবাই সরকার গঠন করে দেশ চালাতে চায়। তারা কি একইভাবে দেশ চালাবে? ১০টি দলের ১০ ধরনের প্লান আছে? সেই প্লান নিয়ে তারা জনগণের কাছে যাবে। জনগণ যাদের প্লান পছন্দ করবে, তাদের ভোট দেবে। ফলে যদি নতুন সরকার আসে, তারা কিভাবে দেশ চালাবে, সেটা তাদেরই বিষয়। সেটা কি অন্য কেউ ঠিক করে দেবে? কিন্তু এরা (জাতীয় ঐকমত্য কমিশন) বলতেছে, তোমরা যে-ই ক্ষমতায় আসো এভাবে দেশ চালাবে। এখন এগুলো যারা বলছে তারা কি জনগণের প্রতিনিধি? তারা কি এই দেশের জনগণকে সবচেয়ে ভালোবাসে? তারা তো অধিকাংশ দেশেই থাকে না। কতগুলো বিদেশি লোক, ভাড়াটে বুদ্ধিবীজী, আর কতগুলো এনজিও মিলে ঠিক করে দেবে দেশ কিভাবে চলবে? আমাদের দেশে রাজনৈতিক নেতা ও দলগুলো কি এগুলো মানবে?

তিনি আরও বলেন, যারা নিজেরাই দেশ ঠিকমতো চালাতে পারেন না, তারা অন্যদের কিভাবে ঠিক করে দেবেন- দেশ কিভাবে চালাতে হবে। ফলে কেন মানবে? কেউ মানবে না। এতদিন সবাই চুপচাপ সহ্য করে গেছে। সেখানে গেছে, চা-নাশতা, খাওয়াদাওয়া করেছে, আলোচনা করেছে। চলে এসেছে।

প্রসঙ্গত, গত ১২ ফেব্রুয়ারি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে সভাপতি করে সাত সদস্যের জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়। এই কমিশনের সহ-সভাপতি করা হয় প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজকে। জানা গেছে, জুলাই সনদ চূড়ান্ত করতে ২০ মার্চ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত ৩০টির বেশি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ৬৭টি বৈঠক করেছে কমিশন। দুই পর্বের আলোচনায় ৮২টি সংস্কার প্রস্তাবে ঐকমত্য ও সিদ্ধান্ত হয়। এগুলো নিয়ে তৈরি করা হয় জুলাই সনদ। গত ১৭ অক্টোবর যেখানে রাজনৈতিক দলগুলো স্বাক্ষর করে। তবে এখনো স্বাক্ষর করেনি এনসিপিসহ আরও চারটি দল। স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের পর থেকে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় ও পদ্ধতি-সম্পর্কিত সুপারিশ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বেশ কয়েক দফা সভা করে কমিশন। বৈঠক করে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও। মঙ্গলবার ঐকমত্য কমিশন সনদ বাস্তবায়নের রূপরেখা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে তুলে দেয়। এরপর থেকেই এ নিয়ে সমালোচনায় সরব বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপিসহ রাজনৈতিক দলগুলো।