বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, ‘ছাত্র সংসদ নির্বাচনের প্রভাব জাতীয় রাজনীতিতে পড়ুক, ব্যক্তিগতভাবে আমি চাই-না। তবে বাংলাদেশের বাস্তবতায় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের প্রভাব জাতীয় রাজনীতিতে পড়ে বা আগামীতেও পড়বে।’
বুধবার রাত ৯টায় ইসলামী ছাত্র শিবিরের জেলা সভাপতি সাগর আহমেদের সভাপতিত্বে চুয়াডাঙ্গার একটি রেস্টুরেন্টে স্থানীয় ছাত্র শিবিরের পাঠচক্র সদস্যদের নিয়ে মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে এ কথা বলেন তিনি।
শিবির সভাপতি বলেন, ‘আগামী জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন করে কেউ ফেসিস্ট হওয়ার মানসিকতা পোষণ করলে তারা এই প্রজন্মের কাছে প্রত্যাক্ষিত হবে। আগামীতে যারা নির্বাচনে অংশ নিতে চান তারা জুলাই আন্দোলনে শহীদ-গাজীদের আকাঙ্খাকে প্রাধান্য দিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিলে ইসলামী ছাত্র শিবির তাদের পাশে থাকবে। এবং আমরা চাই জুলাই সনদের আইনী ভিত্তি থাকুক। এজন্য গণভোটই বেশি যুক্তিযুক্ত।
জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আগের ধারার ছাত্র রাজনীতি পরিবর্তিত হয়ে গুণগতভাবে রাষ্ট্রের জন্য ভবিষ্যত নেতৃত্ব তৈরির কাজ করবে, ছাত্র রাজনীতি হবে সেবামূলক, ছাত্র রাজনীতি হবে শিক্ষাবান্ধব।’ইসলামী ছাত্রশিবির এখন বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় ছাত্র সংগঠনের পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, এটা ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবের মধ্য দিয়েই শুরু হয়েছে, বিষয়টা এমন নয়। ১৯৭৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠার লগ্ন থেকেই ইসলামী ছাত্রশিবির একটি নির্দিষ্ট আদর্শ ও লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে আসছে। আমাদের মূল উদ্দেশ্য হলো সমাজের ছাত্রদের মাঝে ইসলামের আদর্শ পৌঁছে দেওয়া, তাদের মধ্যে আদর্শিক চেতনা সৃষ্টি করা এবং তাদেরকে সৎ, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা। তার ধারাবাহিকতায় আজকের অবস্থানে পৌঁছেছে ইসলামী ছাত্রশিবির।
তিনি আরো বলেন, এই পথে কাজ করতে গিয়ে আমাদের ২৩৪ জন ভাই শাহাদাত বরণ করেছেন, শত শত ভাই গুম হয়েছেন। এই অঞ্চলেরই শহীদ সোহানের চোখ উপড়ে খুন করা হয়েছে। ঝিনাইদহ- চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলকে গুম ও খুনের অভয়ারণ্যে পরিণত করা হয়েছিল। এখনো পর্যন্ত আমাদের সাতজন ভাই গুম আছেন। বাংলাদেশের প্রায় প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই আমাদের ভাইদের রক্ত ঝরেছে। আমাদের অপরাধ ছিল একটাই— আমরা এই সমাজের ছাত্রদের সৎ, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কিছু আধিপত্যবাদী শক্তির প্রভাবে বা তাদের প্রেসক্রিপশনে কিছু রাজনৈতিক দল এই দেশের দেশপ্রেমিক তরুণদের ওপর জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছে, হত্যা করেছে।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ রাসেল, বাংলাদেশ ছাত্র শিবির কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও যশোর অঞ্চলের তত্বাবধায়ক গোলাম জাকারিয়া, সেক্রেটারি হাফেজ আমিরুল ইসলাম ।