প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আজাদ মজুমদার বলেছেন, কয়েকদিন আগেই আমেরিকার শুল্ক (ট্যারিফ) কমাতে ব্যবসায়ীদের পক্ষ নিয়ে সরকার একরকম বিশ্বজয় করেছে। তবুও এটা নিয়ে পোশাক ব্যবসায়ীদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ নেই। বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এই সংক্রান্ত একটি পোস্ট দেন আজাদ মজুমদার।
পোস্টে আজাদ মজুমদার লিখেছেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদের সর্বশেষ সভায় শ্রম আইন সংশোধন এবং তারও একদিন আগে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আইএলওর দুটি গুরুত্বপূর্ণ কনভেনশনে স্বাক্ষর— নিঃসন্দেহে যুগান্তকারী ঘটনা। সংশোধিত আইনে শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন গঠন আরও সহজ করা হয়েছে; আন্দোলন বা অন্য যেকোনো কারণে শ্রমিকদের কালো তালিকাভুক্ত করার প্রথা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।’
অন্তর্বর্তী সরকার কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করেনি উল্লেখ করে আজাদ মজুমদার লিখেছেন, ‘গরিব ও মেহনতি মানুষের স্বার্থের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত এসব উদ্যোগ অনেকেই গোষ্ঠী-স্বার্থের কারণে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার কোনো ধরনের চাপের কাছে নতি স্বীকার করেনি। একই দিনে নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট একটি আইন সংশোধনের ফলে শ্রম আইনের এই ঐতিহাসিক পরিবর্তনগুলো মিডিয়ায় তেমন কাভারেজ পায়নি।’
আজাদ মজুমদার বলেন, ‘এই ঐতিহাসিক পরিবর্তনে সমাজের এক শ্রেণির মানুষ ঠিকই অস্বস্তিতে ভুগতে শুরু করেছে। বিজিএমই সভাপতির আকস্মিক সরকারবিরোধী অবস্থানে তাই বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই।’
পোস্টে আজাদ মজুমদার লিখেছেন, ‘ক'দিন আগেই এই সরকার তাদের স্বার্থ রক্ষায় মার্কিন ট্যারিফ নেগোসিয়েশনে প্রায় এক প্রকার ‘বিশ্বযুদ্ধ’ জয় করেছে। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ তো দূরের কথা, বরং সুযোগ পেলেই তারা এখনও রবীন্দ্রনাথের সেই পুরনো গান গেয়ে চলেছেন— মোরে আরো, আরো, আরো দাও প্রাণ, তব ভুবনে তব ভবনে মোরে আরো, আরো, আরো দাও স্থান।’
মঙ্গলবার বিজিএমইএ কমপ্লেক্স ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, ‘আমরা চার মাস ধরে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ চেয়েও পাইনি। অথচ স্টারলিংকের কোম্পানি স্পেসএক্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট এলে তার সঙ্গে উনি দেখা করেন। যে কম্পানি ১০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে চায়। অথচ তিনি ৪০ বিলিয়ন ডলারের খাতের প্রতিনিধির সঙ্গে দেখা করেন না।’
এই প্রসঙ্গে মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টা ৫৪ মিনিটে দেওয়া ফেসবুক পোস্টে আজাদ মজুমদার লিখেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ পাননি বলে কাল ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিজিএমইএ প্রেসিডেন্ট। অথচ এলডিসি থেকে উত্তরণের প্রস্তুতি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ক'দিন আগে তাকে আমি নিজ চোখে উপস্থিত থাকতে দেখেছি। শুধু উপস্থিতই ছিলেন না, সেই সভায় তিনি বিজিএমইএ-এর বিভিন্ন উদ্বেগের বিষয়ও সরাসরি তুলে ধরেছিলেন।’
শীর্ষনিউজ