Image description

রাজধানীর মালিবাগের ফরচুন শপিং মলের শম্পা জুয়েলার্সের ‘৫০০ ভরি’ স্বর্ণালংকার চুরির ঘটনায় সরাসরি অংশ নেয় তিনজন। তাদের মধ্যে দু’জন রশি বেয়ে ভবনের ভেতরে ঢোকে। অপরজন ভবনের নিচে মোটরসাইকেল নিয়ে অপেক্ষা করে। চুরি শেষে তিনজনই দ্রুত সটকে পড়ে। পরবর্তীতে চুরি করা স্বর্ণালংকার নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয়। এ ঘটনার মূল অভিযুক্তদের শনাক্ত করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এদের কয়েকজনকে গ্রেফতারের পর এক চোরের বাড়ির খড়ের গাদা থেকে দেড়শ ভরির বেশি স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়েছে।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রশিক্ষিত দুর্ধর্ষ চোর চক্রের দুজন বোরখা পরে রশি বেয়ে ভবনে প্রবেশ করে। এরপর দোকানের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে স্বর্ণালংকার নেয়। চুরি শেষে ভবনের নিচে মোটরসাইকেলে অপেক্ষমাণ থাকা ব্যক্তির সঙ্গে দ্রুত সটকে পড়ে।

চোর চক্রকে গ্রেফতার করা হয়েছে এমন ঈঙ্গিত করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান মো. শফিকুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, কাল (শুক্রবার) সকালে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত বলা হবে।

এত বিপুল সংখ্যক স্বর্ণালংকার চুরির কয়েক দিনের মধ্যে রহস্য উদঘাটনকে ডিবির বড় ধরনের সফলতা বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, রাজধানীর মালিবাগের ফরচুন শপিং মলের দ্বিতীয় তলায় শম্পা জুয়েলার্স নামের একটি দোকান থেকে প্রায় ৫০০ ভরি স্বর্ণালংকার চুরির অভিযোগ করা হয়েছে। শম্পা জুয়েলার্সের মালিক অচিন্ত কুমার বিশ্বাস জানান, প্রতিদিনের মতো ৮ অক্টোবর রাত ৯টার দিকে দোকান বন্ধ করে বাসায় যান তিনি। পরদিন সকালে মার্কেটের দারোয়ানের মাধ্যমে খবর পেয়ে এসে দেখেন দোকানে কিছু নেই।

তার দাবি, দোকানে ৫০০ ভরি স্বর্ণালংকার ছিল, এর মধ্যে ৪০০ ভরি দোকানের নিজস্ব স্বর্ণালংকার। আর ১০০ ভরি বন্ধকি স্বর্ণালংকার। বর্তমানে দেশের বাজারে প্রতি ভরি সোনার দাম দুই লাখ টাকার বেশি। এ হিসাবে চুরি হওয়া সোনার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা। এ ঘটনায় শম্পা জুয়েলার্সের মালিক অচিন্ত কুমার বিশ্বাস অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন, ৮ অক্টোবর রাত ৯টার পর থেকে ৯ অক্টোবর ভোর সাড়ে ৬টার মধ্যে চুরির ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে তিনি দোকানে ছুটে আসেন। এসে দেখতে পান ৫০০ ভরি স্বর্ণালংকার ছাড়াও নগদ চল্লিশ হাজার টাকা চুরি হয়েছে। এদিকে মামলাটি বুধবার ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রমনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম ফারুক। সূত্র বলছে, ৮ অক্টোবর রাত ৩টা ১০ মিনিটের দিকে শপিং মলের পেছনের তৃতীয় তলার জানালার গ্রিল ভেঙে ভেতরে ঢোকে চোরেরা। পরে তারা দ্বিতীয় তলার শম্পা জুয়েলার্সের শাটার ভাঙে। দোকানের ভেতরে ঢুকে শোকেসে রাখা স্বর্ণালংকার তারা চুরি করে নিয়ে যায়।

তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, চোর চক্রটি স্বর্ণালংকার কয়েক ভাগে ভাগ করে নেয়। কিন্তু ডিবির তৎপরতায় সেগুলো বিক্রি করার সুযোগ পায়নি। অভিযান পরিচালনাকালে আটকদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এক চোরের বাড়ির উঠানের পাশের বড় খড়ের গাদা সরিয়ে মাটির নিচ থেকে একটি লাল রঙের শপিং ব্যাগ উদ্ধার করা হয়। তার মধ্যে ছোট ছোট পুঁটিলিতে স্বর্ণালংকার মোড়ানো ছিল। এক স্থান থেকেই চুরি হওয়া বড় অংশ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া আরেক স্থান থেকেও স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়।