Image description

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত রাষ্ট্রীয় সংস্কারের দলিল ‘জুলাই সনদ’ আজ স্বাক্ষরিত হতে যাচ্ছে। এতে অন্তর্ভুক্ত ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে একমত হয়েছে সকল রাজনৈতিক দল। তবে রাষ্ট্রীয় সংস্কারের এই দলিলের প্রকাশিত খসড়ায় ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ তুলেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

তারা বলছে, এতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে ’২৪-এর জুলাই ছাত্র-জনতার ধারাবাহিক লড়াই-সংগ্রামের ইতিহাস সম্পূর্ণভাবে অনুপস্থিত, যা জুলাইয়ের শহীদদের রক্তের সঙ্গে এক ধরনের বিশ্বাসঘাতকতা।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) রাতে প্লাটফর্মটির সভাপতি রিফাত রশিদের পাঠানো এক বার্তায় বলা হয়, ’২৪-এর জুলাই ছাত্র-জনতার যে রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট ও খুনি হাসিনার পলায়ন ঘটেছিল, তা ছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে ছাত্র-জনতার ধারাবাহিক লড়াই-সংগ্রামের ফসল। যার সূচনা হয় ১ জুলাই ২০২৪-এ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গঠনের মধ্য দিয়ে, যা ক্রমে ৯ দফা থেকে এক দফায় রূপান্তরিত হয়। সেই এক দফা ছিল ‘ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত’।

রিফাত বলেন, এই যে ৯ দফা এবং পরবর্তীতে এক দফা, যার মধ্য দিয়ে ছাত্র-জনতার অতি অভিপ্রায় স্পষ্ট হয়েছিল; সেই অভিপ্রায়ের ফলেই বাংলাদেশের আমূল সংস্কার, নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি, নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত এবং একটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্নের বুনিয়াদ স্থাপিত হয়েছিল। কিন্তু এই জুলাই সনদে সেই বুনিয়াদকে ধ্বংস করার পাশাপাশি ছাত্র-জনতার অভিপ্রায়ের বিকৃতি ঘটেছে।

তিনি আরও বলেন, সংস্কার প্রক্রিয়ার নানা সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে জুলাইয়ের শহীদ পরিবার, আহত ব্যক্তি ও ছাত্রদের উপেক্ষা করা হয়েছে। কেবল রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসে রাষ্ট্রের ইতিহাসকে বিলীন করা হয়েছে, যার নজির পূর্বেও রয়েছে। অতীতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে আমরা ছাত্র-জনতার আশা-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে বারবার প্রতারণা করতে দেখেছি। এখনও সেই একই প্রবণতা আমরা লক্ষ করছি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এ ধরনের ইতিহাস বিকৃতির পুনরাবৃত্তিকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছে।

বার্তায় রিফাত রশিদ আরও বলেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও ‘নোট অব ডিসেন্ট’-এর সমাধান না করেই দ্রুত স্বাক্ষর সম্পন্ন করার টালবাহানা চলছে। পূর্বেও জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে এমন টালবাহানা দেখা গেছে, অথচ সেই ঘোষণাপত্র এখনও আইনি বৈধতা পায়নি। অর্থাৎ ছাত্র-জনতা এখন আর কথার এসব ফুলঝুড়িতে বিশ্বাস করে না। তাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি জুলাই সনদের স্বাক্ষর কার্যক্রম সম্পন্নের আগে এর আইনি ভিত্তি ও ‘নোট অব ডিসেন্ট’-এর সমাধান নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছে। একই সঙ্গে সকল রাজনৈতিক দল, জুলাইয়ের শহীদ পরিবার ও আহত এবং আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী ছাত্রদের সঙ্গে নিয়ে ছাত্রদের মাধ্যমে জুলাই সনদের পরিপূর্ণতা ও বৈধতা নিশ্চিত করারও আহ্বান জানাচ্ছে।