
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বগুড়া জেলার সাতটি সংসদীয় আসনে ভোটের আগাম হাওয়া বইতে শুরু করেছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলসহ (বাসদ) বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা জেলায় আরো সক্রিয় হয়ে উঠেছেন।
জেলার একাধিক আসনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নেতাকর্মীরা প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান। নেতাকর্মীরা এও মনে করছেন, তাঁরা কোনো কারণে প্রার্থী না হলে দলীয় কৌশলগত কারণে এখানে প্রার্থী হতে পারেন তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান বা প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান।
চলছে আগাম প্রচারযুদ্ধ। মাঠে ও অনলাইনে এই যুদ্ধে এরই মধ্যে ঘোষিত প্রার্থী ও মনোনয়নপ্রত্যাশীরা নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন ভোটারদের। ভোটাররাও আগাম আলোচনায়, আগাম হিসাব-নিকাশে ব্যস্ত হয়ে উঠছেন।
বগুড়া-১ (সোনাতলা-সারিয়াকান্দি) : এই আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে আছেন জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি এ কে এম আহসানুল তৈয়ব জাকির, সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদ-উন-নবী সালাম, মনি পঞ্চায়েত গ্রুপের চেয়ারম্যান বিএনপির কর্মী ও দাতা সদস্য মহিদুল ইসলাম রিপন, জিয়া শিশু-কিশোর সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম টিটু, সাবেক সংসদ সদস্য কাজী রফিকুল ইসলাম, সারিয়াকান্দি উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান হিরু, জেলা বিএনপির উপদেষ্টা ডা. শাহজাহান আলী।
এখানে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সাবেক জেলা আমির অধ্যক্ষ মো. শাহাবুদ্দিন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী দলের জেলা কমিটির সদস্য এ বি এম মোস্তফা কামাল পাশা। বাসদ মনোনীত প্রার্থী সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্টের জেলা সদস্য মো. শাজাহান আলী।
বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) : এই আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক অ্যাসাইনমেন্ট অফিসার ডা. ফিরোজ মাহমুদ ইকবাল, সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট এ কে এম হাফিজুর রহমান, তাঁর ছেলে সৌদি আরব প্রবাসী বিএনপি নেতা ডা. গোলাম হাসনাইন সোহান, জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ও জেলা বিএনপির সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল বাছেদ, সহসভাপতি এম আর ইসলাম স্বাধীন ও মীর শাহে আলম।
বগুড়া-৩ (আদমদীঘি-দুপচাঁচিয়া) : এই আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন দৌড়ে আছেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও বগুড়া শহর বিএনপির সভাপতি হামিদুল হক চৌধুরী হিরু, জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও আদমদীঘি উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল মুহিত তালুকদার, জেলা অ্যাডভোকেটস বার সমিতির সভাপতি আতাউর রহমান খান মুক্তা ও ইসলামী স্টাডিজ গ্রুপের সম্পাদক বিএনপি নেতা ফজলুল বারী তালুকদার বেলাল এবং জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক লায়ন ফরিদ উদ্দীন আহমেদ।
এখানে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী দুপচাঁচিয়া উপজেলা জামায়াতের যুববিষয়ক সম্পাদক ও গুনাহার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ আবু তাহের, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী দলটির জেলা কমিটির অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অধ্যাপক শাহজাহান তালুকদার এবং বাসদ মনোনীত প্রার্থী দলটির জেলা কমিটির সদস্য শ্রমিক নেতা সুরেশ চন্দ্র দাস মনো।
বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) : এই আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন চাইছেন সাবেক সংসদ সদস্য জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন, সাবেক সংসদ সদস্য ডা. জিয়াউল হক মোল্লা, জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও নন্ন্দীগ্রাম উপজেলা বিএনপির সদস্য ফজলে রাব্বী তোহা। এখানে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী আন্তর্জাতিক ছাত্র ও যুব ফেডারেশনের মহাসচিব ড. মোস্তফা ফয়সাল পারভেজ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী দলের জেলা কমিটির সদস্য অধ্যাপক ইদ্রিস আলী, বাসদ থেকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের জেলা সভাপতি সাইফুজ্জামান টুটুলকে, গণতন্ত্রী পার্টির প্রার্থী দলের জেলা কমিটির সদস্য মনজুরুল ইসলাম।
বগুড়া-৫ (শেরপুর-ধুনট) : এই আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও তিনবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য সাবেক শেরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কে এম মাহবুবর রহমান হারেজ, জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ধুনট উপজেলা বিএনপির সভাপতি এ কে এম তৌহিদুল আলম মামুন, শেরপুর পৌর বিএনপির সভাপতি ও শেরপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র স্বাধীন কুমার কুণ্ডু। এ ছাড়া তালিকায় আছেন জেলা বিএনপির সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের ছেলে আসিফ রব্বানী, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, শেরপুর উপজেলা বিএনপির বহিষ্কৃত সভাপতি ২০০৮ সালের নির্বাচনে মনোনীত প্রার্থী বিএনপি নেতা জানে আলম খোকা।
জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী দলটির শেরপুর উপজেলা আমির ও শেরপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান দবিবুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী দলটির শেরপুর উপজেলা শাখার সভাপতি অধ্যপক মীর মাহমুদুর রহমান চুন্নু, বাসদ থেকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ জেলা সভাপতি সন্তোষ সিংকে।
বগুড়া-৬ (সদর) : এই আসনে বিএনপি থেকে প্রার্থী হিসেবে দলীয় নেতাকর্মীরা সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকেই চাইছেন। যদি শারীরিক অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে তিনি প্রার্থী না হলে এই আসনে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নেতাকর্মীরা প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান। দলীয় কৌশলগত কোনো কারণে এখানে প্রার্থী হতে পারেন তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান বা প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান । এই আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী শহর জামায়াতের আমির ও সাবেক সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবিদুর রহমান সোহেল। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী দলের জেলা কমিটির সভাপতি আ ন ম মামুনুর রশিদ। বাসদের প্রার্থী দলের জেলা কমিটির সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট দিলরুবা নূরী।
বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর) : এই আসনে বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রার্থী হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে চাইছেন। শারীরিক অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে তাঁরা প্রার্থী না হলে ডা. জুবাইদা রহমান বা সৈয়দা শর্মিলা রহমান এই আসনে প্রার্থী হতে পারেন। এই আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সহসভাপতি ও দলের মজলিসে শুরার সদস্য গোলাম রব্বানী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী দলের জেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম শফিক, বাসদ মনোনীত প্রার্থী সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম।