Image description
জাতীয় সংসদ নির্বাচন

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ। জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ইসিকে অন্তত ডজনখানেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে বলে মনে করছেন নির্বাচন বিশ্লেষকরা। এর মধ্যে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কারে আইন সংশোধন ও বাস্তবায়ন; রাজনৈতিক ঐকমত্য তৈরি; অদৃশ্য চাপমুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠান; সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা; প্রশাসন পুনর্গঠন, প্রশাসনিক কারসাজি, পেশিশক্তি বা টাকার খেলা নিয়ন্ত্রণ; পোস্টাল ব্যালটে প্রবাসীদের ভোট গ্রহণ; স্বচ্ছ নির্বাচন অনুষ্ঠানে রিটার্নিং অফিসার নির্ধারণ; লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি; নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন এবং ইসিকে দলীয় প্রভাবমুক্ত করাকে প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়া অপতথ্য ছড়ানো এবং এআইয়ের প্রভাব ইসিকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে বলে মনে করছেন কেউ কেউ।

এদিকে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থা ফেরানোর তাগিদ দিয়েছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। এ ছাড়া ‘মব ভায়োলেন্স’-এর বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে সজাগ থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা। রবিবার সংলাপ থেকে এমন পরামর্শ এসেছে। সংলাপে সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বলেন, ‘এ নির্বাচনে বড় চ্যালেঞ্জ ও অর্জনের বিষয় হচ্ছে সফলভাবে নির্বাচন কার্যক্রম সম্পন্ন করা। দেশের জন্য এটা ট্রানজিশন, বাংলাদেশ কোন দিকে যাবে তা নির্ভর করছে এ নির্বাচনের ওপর। ’৭০-এর নির্বাচন যেমন টার্নিং পয়েন্ট ছিল, এবারের নির্বাচনও তেমন।’ তিনি বলেন, ‘ইসিকে উঁচু নৈতিক মানদণ্ডে দেখতে চাইবে মানুষ। একটি দৃষ্টান্তমূলক নির্বাচন প্রত্যাশা করছে তারা। কর্মকর্তাদের ক্ষমতায়ন ও দক্ষ করতে হবে যেন তাঁরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এবারের নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে।’ গত ১৫ বছরে ভায়োলেন্স স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে গেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

হুমায়ুন কবির বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে ৮০ শতাংশ ক্যাম্পেইন হবে সোশ্যাল মিডিয়ায়, অনলাইনে। এর জন্য ইসি কতটুকু প্রস্তুত? মিথ্যা তথ্য, অপতথ্য, এআই জেনারেটেড তথ্য আসবে। নির্বাচনের আগেই অনেক উত্তেজনা করবে সোশ্যাল মিডিয়া। এ ধরনের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য নির্বাচন কমিশনকে কৌশল হাতে রাখতে হবে।’

সংলাপে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের ওপর আস্থা নেই। কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছে না। এমন চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নিয়েছেন (সিইসি)। বিশ্বাসযোগ্য ভোটার তালিকা, প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার এবং আচরণবিধি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘যারা নির্বাচনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া নস্যাৎ করতে চায়, তারা সর্বশক্তি প্রয়োগ করবে।’ পোস্টাল ব্যালটের চ্যালেঞ্জের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রযুক্তি ব্যর্থ হতে পারে। যে কোনো সময় হ্যাকিং হতে পারে। ওই পরিস্থিতিতে করণীয় কী? এ প্রশ্নগুলো কনসালট্যান্টকে করেছিলাম।’ তিনি বলেন, ‘যদি তারা সাইবার অ্যাটাক করে, ম্যালওয়ার ঢুকিয়ে দেয়... যেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভই নিরাপদ না, সেখানে আমার পোস্টাল ব্যালট কতটুকু সেফ বুঝতে হবে!’

তাই পোস্টাল ব্যালটে কী কী চ্যালেঞ্জ আসতে পারে তা বের করার নির্দেশ দিয়েছেন সিইসি। তিনি বলেন, ‘আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ব্যালট নিয়ে বিতর্ক উঠতে পারে। এটা নিয়ে পরের দিকে বিতর্ক হতে পারে। আরও প্রশ্ন উঠতে পারে। এটা আমরা জানি। তবে তারা (কনসালট্যান্ট) আমাকে আশ্বস্ত করেছন যে ব্যবস্থা নেবেন।’