Image description

বাংলাদেশ ইলেকট্রিক গাড়ির চাহিদা বেড়েছে। বিভিন্ন কোম্পানি বিদেশ থেকে আমদানি করে এসব বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রিও করছে। ঢাকার রাস্তায় এখন চলে বৈদ্যুতিক গাড়ি (ইভি)। বিশ্বখ্যাত গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগগুলো বিভিন্ন মডেলের বৈদ্যুতিক গাড়ি নিয়ে এসেছে। ছোট পরিসরে দু-একটি কোম্পানি দেশে ব্যাটারিচালিত এই গাড়ি তৈরির উদ্যোগও নিয়েছে। কিন্তু দেশজুড়ে ইলেকট্রিক গাড়ির স্টেশন হাতেগোনা। দেশজুড়ে বৈদ্যুতিক গাড়ির বিস্তৃত চার্জিং নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।

২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ বৈদ্যুতিক বাহন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ইলেকট্রিক মোটরযান রেজিস্ট্রেশন ও চলাচল সংক্রান্ত নীতিমালা ২০২৩ গ্রহণ করা হয়েছে। এই লক্ষ্যপূরণে মানুষকে বৈদ্যুতিক গাড়ি ব্যবহারের প্রতি আগ্রহী করে তুলতে সারা দেশে ইভি চার্জিং নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি।

বৈদ্যুতিক গাড়ি আসায় দেশের গাড়ির বাজারে এনেছে পরিবর্তন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যেসব ক্রেতা আগে ব্যাটারিচালিত গাড়িকে ব্যয়বহুল ও অপ্রয়োজনীয় মনে করতেন, তারা এখন এগুলোর দিকে ঝুঁকছেন। কারণ এগুলো পেট্রোল ও ডিজেলচালিত গাড়ির তুলনায় সস্তা, পরিবেশবান্ধব ও ঝামেলা কম। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও পর্যাপ্ত চার্জিং স্টেশন না থাকাই এই গাড়ি শিল্পের জন্য বড় বাধা বলে মনে করছেন তারা। বিআরটিএর একজন প্রকৌশল পরিচালক জানান, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে বিআরটিএর নতুন নীতিমালার আওতায় বৈদ্যুতিক গাড়ির নিবন্ধন শুরু হয়। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত ৫০০টির বেশি বৈদ্যুতিক গাড়ি নিবন্ধিত হয়েছে। পরিসংখ্যান এখনও হালনাগাদ করা হচ্ছে। গত বছর এই সংখ্যা ছিল প্রায় ৭০। এ বছর সেটি ৩০০ ছাড়াবে, এমনকি ৪০০ এর বেশি হতে পারে।

গাড়ি বিপণন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা জানান, ইভি মডেলের বিক্রি ধীরে ধীরে বাড়ছে। গ্রাহকরা দীর্ঘমেয়াদী সুবিধা বুঝতে শুরু করায় বাজারে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশে বেশকিছু বৈদ্যুতিক মডেল বিক্রি করছে, যার মধ্যে বিলাসবহুল সেলুন কার থেকে শুরু করে এসইউভিও রয়েছে। রাজনৈতিক পরিবেশ স্থিতিশীল হলে বিক্রি আরও অনেক বাড়তে পারে।

আরেক কর্মকর্তা বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সীমিত মডেল থাকার কারণে চ্যালেঞ্জ ছিল। এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০০টি গাড়ি বিক্রি হয়েছে এবং মাসিক সরবরাহ ৫০টি ছাড়িয়েছে। প্রথম দিকে তারা প্রিমিয়াম মডেলের গাড়ি বাজারে আনে, যার দাম ছিল ৯০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা। তবে ২০২৪ সালের নভেম্বরে তারা সাশ্রয়ী মডেল চালু করলে বাজার আরও চাঙা হয়। ওই মডেলের দাম শুরু হয় ৬৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা থেকে। বর্তমানে বিওয়াইডির ১৪টি চার্জিং স্টেশন রয়েছে এবং প্রতিটি গাড়ির সঙ্গে বিনামূল্যে হোম চার্জার সরবরাহ করা হয়।

বাংলাদেশে বিএমডাব্লিউর বৈদ্যুতিক গাড়ির দাম প্রায় ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আন্তর্জাতিক বাজারে একাধিক নতুন মডেল থাকলেও বাংলাদেশে আনা সম্ভব হচ্ছে না দুই কারণে, সরকারি প্রণোদনার অভাব এবং চার্জিং অবকাঠামোর ঘাটতি। সরকার শূন্য-কার্বন ভবিষ্যতের কথা বললেও কার্যকর নীতিমালা নেই।