Image description
পিয়াজ, রসুন, আদার দাম স্থিতিশীল

রাজধানীর বাজারগুলোতে সবজির দাম চড়া। টানা তিন মাসের বেশি সময় ধরে বাজারে সবজির দাম অতিরিক্ত বাড়তি যাচ্ছে। হাতেগোনা দু-একটি সবজি ছাড়া সবগুলোর দামই ৫০ টাকার উপরে। অর্থাৎ ৫০ থেকে দেড়শ’ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে সবজি। তবে সবজির বাজারে আগুন হলেও, কিছুটা নাগালের মধ্যে রয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পিয়াজ, রসুন ও আদার দাম। চালের দামও সামান্য কমেছে। প্রতি কেজি চালের দামে চালভেদে দু’তিন টাকা করে কমেছে। শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে সবজির বাজারের এমন চিত্র দেখা গেছে।  

বাজারে দেখা গেছে, কেজিপ্রতি আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ ও ৩০ টাকা দামে। আর পেঁপের পিসও একই দামে বিক্রি হচ্ছে। আলু ও পেঁপে ছাড়া বাকি সবজির দাম প্রায় আকাশচুম্বী। শুক্রবারের বাজারে ঢেঁড়স ৮০ টাকা, পটোল ৭০ টাকা, টমেটো কেজিপ্রতি ১৪০ টাকা, বেগুন ১২০ টাকা, ঝিঙা ৮০ টাকা, কচুর ছড়া ৫০ টাকা, মরিচ ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মরিচের দাম এক দিনের ব্যবধানে ৫০ টাকা বেড়েছে বলে জানিয়েছে বিক্রেতারা। তাছাড়া বাজারে চিচিঙ্গা প্রতি কেজি ৭০ টাকা, জালি কুমড়া ৫০ টাকা, প্রতি কেজি করলা ১০০ টাকা, কাঁকরোল প্রতি কেজি ৮০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৭০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মগবাজার কাঁচা বাজারের সবজি দোকানি আল-আমিন বলেন, দেশে এখন  বেশির ভাগ সবজিই ভারত থেকে আনা হচ্ছে। কাঁচা মরিচ থেকে ধনিয়া পাতাসহ সবকিছুই প্রায়। দেশে অতিবৃষ্টি, বন্যা এসবের কারণে সবজি সারা বছর রাখা বা চাষ করা সম্ভব হয় না। তাই বর্ষা মৌসুমে দাম বেশিই হয়। আর অল্প কিছুদিন পরই শীত আসছে। তখন  সবজির বাজার আবার নাগালের মধ্যে চলে আসবে।  

শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে কাওরান বাজারে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী মহসিন ইসলাম। তিনি বলেন, বাজারে সব সবজির দামই অতিরিক্ত বেশি। ৮০ থেকে ১০০ টাকার নিচে সবজির সংখ্যা তুলনামূলক কম। যা আছে সেগুলোও ৬০ থেকে ৭০ টাকা। দীর্ঘদিন ধরে বাজারে অতিরিক্ত দামে সবজি বিক্রি হচ্ছে, অথচ বাজার মনিটরিংয়ের কোনো উদ্যোগ দেখি না। সাধারণ ক্রেতারা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। মগবাজারে ওদিকে, লাগামহীন দামের মধ্যে পিয়াজ, আদা-রসুনের বাজার এক রকম স্থিতিশীল। নাগালের মধ্যে রয়েছে মানুষের। কোনো পরিবর্তন  দেখা যায়নি এসব পণ্যগুলোর দামে। কেবল চায়না আদার দাম প্রতি কেজিতে ২০ টাকা কমেছে। আকার ও মানভেদে ক্রস জাতের পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭৫ টাকায়। এর মধ্যে ছোট পিয়াজ ৭০ টাকা ও বড় সাইজের পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে। দেশি পিয়াজও ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে দেশি রসুন ১০০-১২০ টাকা, চায়না রসুন ১৪০-১৬০ টাকা, চায়না আদা ১৮০ টাকা, ভারতীয় আদা মানভেদে ১৬০-১৮০ দরে বিক্রি হচ্ছে। চালের বাজারও মোটামুটি স্থিতিশীল রয়েছে। কিছু চালে সামান্য কমেছে দাম। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মানভেদে আটাশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকার মধ্যে, মিনিকেট চাল ৮০ ও ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাটারি-নাজির প্রতি কেজি ৯০ ও মোটা গুটি স্বর্ণা চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৮ টাকায়।  মগবাজারের মালেক স্টোরের এক কর্মচারী বলেন, মুদি মালামালের মধ্যে পিয়াজ, রসুন আর আদার দাম কমেছে। পিয়াজে ৫ থেকে ১০ টাকা কমে গেছে। আদা-রসুনে ২০ থেকে ৩০ টাকা করে কমেছে সপ্তাহখানেকের মধ্যে। 

বাজারে মুরগির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে মাসখানেক আগে যে দাম ছিল তার চেয়ে কম। অর্থাৎ মাসখানেকের মধ্যে দাম বাড়েনি বা কমেনি বলে জানিয়েছে বিক্রেতারা। শুক্রবার বাজারে ব্রয়লার মুরগি  বিক্রি হয়েছে ১৭০ টাকা কেজিতে। যা আগে ১৮০ টাকা ছিল।  পাকিস্তানি মুরগি বিক্রি হয়েছে ৩০০ টাকায় আর দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। ডিমের দামও আগের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে বলে জানিয়েছে ডিম বিক্রেতারা। গতকাল প্রতি ডজন মুরগির লাল ডিম ১২৫-১৩০, সাদা ডিম ১২০ এবং হাঁসের ডিম ১৯০-২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।