
চুক্তি-ভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমানকে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সিনিয়র সচিব) হিসেবে বদলি করা হয়েছে। গতকাল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। অন্যদিকে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য সচিব মো. রুহুল আমীনকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। এ জন্য আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। তবে তাৎক্ষণিকভাবে নতুন জনপ্রশাসন সচিব হিসেবে কাউকে নিয়োগ দেয়া হয়নি। একটি সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বিদেশ থেকে আসা এতিমখানার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে রমনা থানায় একটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন। মামলায় বিএনপি’র চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমানসহ আরও ৫ জনকে আসামি করা হয়। ওই সময়ে দুদক সচিব মোখলেস উর রহমান সামনে থেকে পুরো মামলা প্রক্রিয়ার কলকাঠি নেড়েছিলেন। পরে দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে আদালত দুদকের করা ওই মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন। ওই মামলায় তারেক রহমানসহ অন্য আসামিদের ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ হয়।
সূত্র বলছে, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ভুয়া মামলার মূল ব্যক্তি ছিলেন দুদকের সাবেক সচিব মোখলেস উর রহমান। গত ১৭ই মার্চ এ বিষয়টি নিয়ে একটি পত্রিকা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। পরে ওই প্রতিবেদন গত ২৫শে মে মোখলেস উর রহমান ও দুদকের সাবেক তিন চেয়ারম্যানের নামে মামলা হয়। তাদের বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নামে মিথ্যা অভিযোগ সৃষ্টি করে মামলার অভিযোগ আনা হয়। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এ মামলার তদন্ত করছে। এ কারণেই তাকে সরিয়ে দেয়া হয়। মোখলেস উর রহমানকে আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাভোগী হিসেবেও অনেকে অভিযোগ করে আসছিলেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ই আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর ২৮শে আগস্ট দুই বছরের চুক্তিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হিসেবে নিয়োগ পান মোখলেস উর রহমান। তিনি অতিরিক্ত সচিব হিসেবে সরকারি চাকরি থেকে অবসর নিয়েছিলেন। এরপর তার বিরুদ্ধে ডিসি নিয়োগে অর্থ লেনদেন নিয়ে একটি পত্রিকা সংবাদ প্রকাশ করে। পরে এ বিষয়টি তদন্তে তিন উপদেষ্টার নেতৃত্বে কমিটিও হয়। কিন্তু তদন্তে কী পাওয়া গেছে- সে বিষয়ে আর কিছু জানা যায়নি।