Image description

চলতি মাসে প্রাথমিকের বই ছাপা শুরু করা গেলেও মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে এখনও জটিলতা কাটেনি। মাধ্যমিকের ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের টেন্ডার সম্পন্ন হয়েছে। অপরদিকে অষ্টম ও নবম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের টেন্ডারের মূল্যায়ন এখনও শেষ হয়নি। ফলে মাধ্যমিকের পাঠ্যবই সঠিক সময়ে ছাপার ক্ষেত্রে জটিলতা রয়ে গেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রাথমিকের পাঠ্যবই যথাসময়ে শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছানো গেলেও মাধ্যমিকের পাঠ্যবই ছাপার কাজ দেরিতে শুরু হচ্ছে। ফলে আগামী জানুয়ারির প্রথম দিন মাধ্যমিকের সব বই হাতে পাবে না শিক্ষার্থীরা। তবে মুদ্রণ মালিকদের আন্তরিকতা থাকলে ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যবই জানুয়ারির প্রথম দিকেই শিক্ষার্থীদের মাঝে সরবরাহ করা যেতে পারে।

অপরদিকে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তুক বোর্ডের দাবি—যথাসময়ে সব বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছানো যাবে। সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে এনসিটিবি।

জানতে চাইলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রবিউল কবীর চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছি—পাঠ্যবই যথাসময়ে শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য।’ তিনি বলেন, ‘মুদ্রণ শিল্প মালিকরা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করলে বছরের শুরুতেই সব পাঠ্যবই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছানো সম্ভব হবে।’

এনসিটিবির উৎপাদন নিয়ন্ত্রক আবু নাসের টুকু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যবই ছাপার জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। নবম ও দশম শ্রেণির পাঠ্যবই টেন্ডারের জন্য মূল্যায়ন কাজ চলমান, দ্রুতই শেষ হয়ে যাবে। ডিসেম্বরের মধ্যে পাঠ্যবই ছাপার জন্য আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি—যাতে জানুয়ারির ১ তারিখে বই দিতে পারি।’

এনসিটিবির বিতরণ নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মতিউর রহমান খান পাঠান বলেন, ‘প্রি-প্রাইমারি চুক্তি হয়ে গেছে। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির বই ছাপার চুক্তি প্রায় শেষ পর্যায়ে। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির নোয়া (নোটিশ অব অ্যাওয়ার্ড) দিয়েছি। নোয়া দেওয়ার পর ২৮ দিনের মধ্যে চুক্তি করার সময় পাবে। তার আগেই চুক্তি হয়ে যাবে। যথাসময়ে প্রাথমিকের পাঠ্যবই ছাপা এবং সরবরাহ করতে কোনও সমস্যা হবে না। বছরের প্রথম দিনই প্রাথমিকের পাঠ্যই হাতে পাবে শিক্ষার্থীরা।’’

সঠিক সময়ে পাঠ্যবই ছাপা এবং শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছানো সম্ভব হবে কিনা জানতে চাইলে বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির (বিএমএসএস) সাবেক সভাপতি তোফায়েল খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রাথমিকের পাঠ্যবই ছোট, কম সময়েই ছাপা হয়ে যাবে। যে মালিকরা প্রাথমিকের বই ছাপবেন, তারাই মাধ্যমিকের বইও ছাপবেন। পাঠ্যবই ছাপার কাজ যদি পুঞ্জিভূত না হয়, ধারাবাহিকতা ঠিক থাকে, তাহলে কোনও সমস্যা হবে না। বিগত সময়ের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী—এখনও সময় যা আছে, তাতে সঠিক সময়ে পাঠ্যবই ছাপা ও সরবরাহ সম্ভব। ছাপার কাজ শেষের দিকের জন্য জমিয়ে না রাখলে, সমস্যা হবে না। এ ক্ষেত্রে মুদ্রণ মালিকদের আন্তরিকতা থাকতে হবে। আর এনসিটিবির যথাযথ তদারকি প্রয়োজন হবে।’

জমিয়ে রেখে শেষ দিকে ছাপা হয় কেন, জানতে চাইলে তোফায়েল খান বলেন, ‘পাঠ্যবই শেষ সময়ে ছাপতে গিয়ে তাড়াহুড়োর কারণে তদারকি করা সম্ভব হয় না। তখন নিম্নমানের কাজ দিয়ে কিছু প্রতিষ্ঠান বেশি লাভ করতে চায়। সে কারণেই অনেকে ছাপার কাজ জমিয়ে রাখে।’