Image description

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ওসির পর এবার বদলি করা হলো উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. নাহিদুর রহমানকে। 

 

রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রেষণ শাখা-১-এর যুগ্ম সচিব আবুল হায়াত মো. রফিক স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ বদলির আদেশ জারি করা হয়। 

 

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কর্মকর্তাকে (সিনিয়র সহকারী সচিব) বদলিপূর্বক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর উপ-পরিচালক হিসেবে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাহিদুর রহমানকে (১৮১৭৮) প্রেষণে নিয়োগের নিমিত্তে তার চাকরি  সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হলো। আগামী ২১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদান করবেন, অন্যথায় আগামী ২১ সেপ্টেম্বর অপরাহ্ণ থেকে তাৎক্ষণিক অবমুক্ত (স্ট্যান্ড রিলিজ) হবেন।

 

এ বিষয়ে ইউএনও নাহিদুর রহমান বলেন, এটি সরকারি চাকরির নিয়মিত বদলির অংশমাত্র। এর সঙ্গে অন্য কোনো বিষয় সম্পৃক্ত নয়। আমাকে যেখানে বদলি করা হয়েছে সেখানে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করব।

 

প্রসঙ্গত, গোয়ালন্দের বিক্ষুব্ধ জনতা নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার কাবাসদৃশ ১২ ফুট উঁচু পাকা কবরটি নিচু করাসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছিলেন। কিন্তু প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি প্রদান ও সাংবাদিক সম্মেলন করে  দাবি আদায়ের জন্য ৪ অক্টোবর পর্যন্ত আলটিমেটাম দেন। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হওয়ায় ৫ সেপ্টেম্বর শান্তি সমাবেশ আহবান করা হয়। সমাবেশ চলাকালে একদল বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশ ও ইউএনওর গাড়ি ভাঙচুর করার পর নুরাল পাগলার বাড়িতে গিয়ে হামলা চালায়।

 

হামলাকালে রাসেল মোল্লা নামে নুরাল পাগলার এক ভক্ত তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করে। এ সময় জনতার হামলায় গুরুতর আহত হন রাসেল মোল্লা। পরে তাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর নেওয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। পরে জনতা নুরাল পাগলের বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এক পর্যায়ে একদল উচ্ছৃঙ্খল লোক নুরাল পাগলার লাশ কবর হতে তুলে নিয়ে মহাসড়কে নিয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।

এ ঘটনায় দায়ের হওয়া দুইটি মামলায় আসামি করা হয়েছে সারে ৭ হাজার থেকে ৮ হাজার জনকে। রবিবার পর্যন্ত ২৪ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতার আতঙ্কে উপজেলার অধিকাংশ মসজিদের ইমাম ও মাদ্রাসার শিক্ষকরা আত্মগোপনে রয়েছেন। গ্রেফতার আতঙ্ক রয়েছে বাজারের ব্যবসায়ী ও সাধারণ জনগণের মধ্যে।

 

বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন ও সাধারণ জনগণ এ বিষয়টির শান্তিপূর্ণ সমাধানে ব্যর্থ হওয়ায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ওসিসহ প্রশাসনের দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে সমালোচনা মুখর হয়ে ওঠে। বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও প্রশাসনের ব্যর্থতাকে ফলাও করে প্রচার করা হয়। আলোচনার মধ্যে ওসি রাকিবুলকে শুক্রবার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে বদলি করা হয়। দুই দিন পর বদলি করা হলো ইউএনওকে।