Image description

আরিফুল হক চৌধুরী সাবেক মেয়র। টানা ১০ বছর নগরের ক্ষমতার কেন্দ্রে ছিলেন। এখন বিএনপি’র চেয়ার পারসনের উপদেষ্টা। গণ-অভ্যুত্থানের দিন থেকেই নগরের মানুষের শান্তিশৃঙ্খলায় কাছে ছিলেন। এখনো আছেন। তবে সম্প্রতি আরিফুল নতুন করে সক্রিয় হয়েছেন। প্রশাসনের ডাকে সাড়া দিয়ে তার সক্রিয় হওয়া। আর সক্রিয় হয়েই নগরের জঞ্জাল দূর করার কাজে সঙ্গী হয়েছেন। প্রথম দিন এসেই সফলতা। জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলমের সঙ্গে মাঠে নেমে নগর পরিষ্কারে হাত দিয়েছেন। এরইমধ্যে কিন ব্রিজকে করেছেন হকারমুক্ত। হাঁটা-চলার জন্যই এই ব্রিজকে খোলা রাখা হয়েছে। কিন ব্রিজের দক্ষিণ অংশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে অংশ নিয়েছেন। নগর নিয়ে স্বপ্ন দেখেন আরিফুল হক। আওয়ামী লীগ জমানায় ছিলেন বিএনপি’র ম্যাজিকম্যান। জনপ্রিয় মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরানকে হারিয়ে ২০১৩ সালে মেয়র হয়েছিলেন। ২০২৩ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। দলের নির্দেশ মেনে শেষবার আর নির্বাচনে অংশ নেননি। তবে নগর নিয়ে রয়েছে তার দরদ। নিজের শাসনামলে নগরকে সাজিয়েছেন নিজের মতো করে। উন্নয়ন হয়েছে অনেক। সেগুলোর ধারাবাহিকতা থাকেনি। যেটুকু করে এসেছিলেন সেগুলোও অবহেলায় পড়ে আছে। এ নিয়ে আছে সমালোচনাও। তবে নগরের স্বার্থে আরিফ এক্টিভ, সেটি তিনি শনিবার প্রমাণ করলেন। প্রশাসনের তরফ থেকে আহ্বান ছিল সহযোগিতা করার। 

এ কারণে জেলা প্রশাসকের ডাকে সাড়া দিয়ে মাঠে নামলেন। নগরের সবকিছু তার নখদর্পণে। কোথায় কী করতে হবে সব মুখস্থ। এই অবস্থায় আরিফের সহযোগিতা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। কেউ কেউ প্রশ্ন করছেন; আরিফুল হক চৌধুরী কেন মাঠে। তিনি তো ১০ বছরে সফল হতে পারেননি। সেটির ব্যাখ্যাও শনিবার দিয়েছেন আরিফ নিজেই। বলেছেন; বিগত ১০ মাস নগরের জঞ্জাল দূর করতে প্রশাসনের কেউ এগিয়ে আসেননি। নিশ্চুপ ছিলেন। ডিসি মো. সারওয়ার আলম যোগদানের পরপর তিনি নগর সাজানোর বিষয়টি সামনে আনেন। আমাদের সহযোগিতা চান। সাবেক জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমি সহযোগিতায় নেমেছি। শুধু আমি নয়, নগরের সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। নগর ঠিকমতো চললে সবারই লাভ। এদিকে-সিলেটের হকার বড় সমস্যা। সেটি অনুধাবন করেছেন জেলা প্রশাসক নিজেই। আর সমস্যা নিয়ে তিনি কথা বলেছেন নগরের বিভিন্ন স্তরের মানুষের সঙ্গে। রাজনীতিবিদরাও ছিলেন। হকার পুর্নবাসনে আরিফুল হক চৌধুরী একমত। নিজেদের শাসনের সময় একাধিকবার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। বিভাগীয় প্রশাসনের সঙ্গে মিলে হকারমুক্ত মডেল সড়কও করেছিলেন। কিন্তু নানা অস্থিরতায় সেই প্রক্রিয়াও ভেস্তে গেছে। তবে সিটি করপোরেশন হকার পুনর্বাসনের জন্য নির্ধারিত জায়গা করেছে। হকার মার্কেট মাঠ। সেগুলো সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। ফলে হকাররা ওখানে থাকতে সমস্যা কোথায়। সেটি নিয়ে এখন ভাবছেন আরিফ। জানান কে কোথায় বসে ব্যবসা করবেন সেটি সিদ্ধান্ত নেবেন যারা ব্যবসা করবেন। 

নগরের সড়ক ও ফুটপাথে কেউ বসতে পারবেন না। সেটা জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশনের সিদ্ধান্ত। কোনো ভালো উদ্যোগ যখন প্রশাসন নেয় তখন তাদের সহযোগিতা করা উচিত। এ জন্য এবার ব্যবসায়ী, নগরের সচেতন নাগরিকসহ সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। এদিকে-সিলেট সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসক ও সাবেক মেয়র মাঠ পরিদর্শনের পর কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। তাদের পরামর্শ মতো হকার্স মার্কেট মাঠকে প্রস্তুত করা হবে। এজন্য ১০-১২ দিন সময় লাগতে পারে। মাঠ প্রস্তুতের পর খোলা জায়গায়ই হকারদের পুনর্বাসন করা হবে। ইতিমধ্যে বিষয়টি হকারদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে। সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাই রাফিন সরকার রোববার বিকালে মানবজমিনকে জানিয়েছেন, মাঠের সুযোগ-সুবিধা আগে থেকেই ছিল। সেগুলোকে এক্টিভ করা হবে। একইসঙ্গে মাঠের কিছু কাজ করতে হবে। এসব নিয়ে এখন চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে যাতে কাজ শেষ করা হয় সে নিয়ে পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।