
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সাম্প্রতিক কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক ঘনিষ্ঠতাকে ভারত কৌশলগত উদ্বেগের চোখে দেখছে।
নতুন উদ্যোগ বাণিজ্য ও সংযোগ : সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা-ইসলামাবাদের মধ্যে চাল আমদানির চুক্তি, সরাসরি বিমান চলাচল ফের চালুর উদ্যোগ, ভিসা শিথিলকরণ এবং শিক্ষার্থীদের জন্য পাকিস্তানের বৃত্তি কর্মসূচি ভারতীয় নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। ভারতের মতে, এসব পদক্ষেপ শুধু অর্থনৈতিক নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক ও কৌশলগত সমীকরণ তৈরি করছে।
ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল অনিল চৌহান খোলাখুলি মন্তব্য করেছেন, চীন-পাকিস্তান-বাংলাদেশের স্বার্থে এক ধরনের ‘অভিন্নতা’ তৈরি হচ্ছে, যা ভারতের নিরাপত্তার জন্য বড় ঝুঁকি। বিশেষ করে উত্তর-পূর্ব ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের সাথে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার পুরনো সম্পর্ক থাকার কারণে দিল্লি আশঙ্কা করছে, বাংলাদেশের ভূখণ্ডকে আবারো ‘সফট করিডোর’ হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে।
সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা উদ্যোগের প্রভাব : পাকিস্তান সরকার সম্প্রতি বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য বড় ধরনের বৃত্তি ঘোষণা করেছে। পাশাপাশি, সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচির মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথ-নজরুলের পরিবর্তে জিন্নাহ-ইকবালের ভাবধারাকে প্রাধান্য দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে ভারতের কূটনীতিকরা দাবি করছেন। এতে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ঐতিহাসিক ভিত্তি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়তে পারে বলেও তাদের শঙ্কা।
ভূরাজনৈতিক চাপ : যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়া নীতির পরিবর্তন, চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ এবং পাকিস্তানের কূটনৈতিক সক্রিয়তা মিলিয়ে ভারত এখন একসাথে পশ্চিমে পাকিস্তান, উত্তরে চীন এবং পূর্বে বাংলাদেশের সম্ভাব্য চাপের মুখে পড়ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ এক নতুন ধরনের ‘ত্রিমুখী চাপ’, যা ভারতের আঞ্চলিক প্রভাবকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে।