
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণের বার্তা দিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) জুয়েল রানা।
তিনি বলেন, “এবার নির্বাচনে শয়তানও আপনার এলাকায় ঢুকতে পারবে না। পুলিশের চোখে থাকবে ‘টিনের চশমা’। কোন দল, মত বা প্রভাব চিনে নয়— আইন যা বলবে, পুলিশ সেটাই কার্যকর করবে।”
তিনি আরও জানান, পুলিশের ওপর সরকারপ্রধান নিজেই আস্থা প্রকাশ করেছেন। “পুলিশ হচ্ছে সরকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও শক্তিশালী টিম। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা যা করা দরকার, তা-ই করা হবে,”— বলেন এডিসি জুয়েল।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এবারের নির্বাচনে এত বেশি মানুষ ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হবে যে বিকেল ৪টার পরেও লাইনে দাঁড়ানো থাকবে। কেউ আর কাউকে আগেভাগে হুমকি দিতে পারবে না, কেউ কাউকে ভোট দিতে বাধা দিতে পারবে না।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের কুমিল্লার এক ইউপি নির্বাচনে জুয়েল রানা ব্যাপক প্রশংসা কুড়ান ভোটকেন্দ্রে কঠোর অবস্থান নেওয়ার কারণে। তখন তিনি বলেছিলেন, “নৌকার প্রার্থী হয়েছেন বলে চেয়ারম্যান হবেন, এটা ভুলে যান। কেউ ব্যালট ছিনতাইয়ের চেষ্টা করলে ডাইরেক্ট গুলি চলবে।”
তার এই বক্তব্য ভাইরাল হলে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের অনুগত কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়। প্রথমে তাকে ক্লোজ করে চট্টগ্রাম রেঞ্জে, পরে সিলেট এপিবিএন এবং পরে খাগড়াছড়িতে বদলি করা হয়। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাও হয়।
তবে তিনি জানান, সেই নির্বাচনে শতভাগ নিরপেক্ষ ভোট হয়েছে এবং ক্ষমতাসীন দলের বহু প্রার্থী শোচনীয়ভাবে পরাজিত হলেও কেউ অভিযোগ তোলেনি। বরং প্রার্থীরা ভোটের পরিবেশে সন্তোষ প্রকাশ করে পুলিশের সঙ্গে কোলাকুলি করেছেন।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর তার বিরুদ্ধে থাকা সব অভিযোগ রাষ্ট্রপতির আদেশে প্রত্যাহার করা হয়। জুয়েল রানা বলেন, “আমি রাষ্ট্রপতির কাছে আপিল করি এবং তিনি সচিবের দেওয়া শাস্তি বাতিল করে দেন।”
এই কর্মকর্তা জানান, এবার দেশের মানুষ একটি স্মরণকালের সেরা নির্বাচন দেখতে যাচ্ছে। “পুলিশ নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারলে জনগণ তার ফল পাবেই। আমরা দল নয়, কাজের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ,”— বললেন তিনি।