হামাস বুধবার গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিমুক্তি চুক্তি অনুমোদন করেছে। ফিলিস্তিনি সূত্রের বরাত দিয়ে এএফপি এক প্রতিবেদনে এমন খবর জানিয়েছে। অন্যদিকে মধ্যস্থতাকারী কাতার আশা প্রকাশ করেছে, যুদ্ধ শেষ করার জন্য একটি চুক্তি খুব শিগগিরই সম্পাদিত হতে পারে।
গাজার ইতিহাসের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষ করার জন্য কয়েক মাসের ব্যর্থ প্রচেষ্টার পর মধ্যস্থতাকারীরা কাতারে চূড়ান্ত প্রচেষ্টা চালাচ্ছে যুদ্ধবিরতি স্বাক্ষর করতে।
আলোচনায় যুক্ত দুইটি ফিলিস্তিনি সূত্র এএফপিকে বুধবার জানিয়েছে, হামাস ও তার মিত্র ইসলামিক জিহাদ প্রস্তাবিত খসড়া চুক্তি অনুমোদন করেছে।
এ ছাড়া নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপির এক সূত্র জানায়, ‘প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলো নিজেদের মধ্যে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে এবং মধ্যস্থতাকারীদের জানিয়ে দিয়েছে, তারা (জিম্মি-বন্দি) বিনিময় চুক্তি ও যুদ্ধবিরতির পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালালে গাজায় যুদ্ধ শুরু হয়। সেই হামলায় এক হাজার ২১০ জন নিহত হয়, যার অধিকাংশই বেসামরিক। পাশাপাশি ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায় তারা, যাদের মধ্যে ৯৪ জন এখনো গাজায় রয়েছে। তবে তাদের মধ্যে ৩৪ জন মৃত বলে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে।
অন্যদিকে ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত ৪৬ হাজার ৭০৭ জন নিহত হয়েছে, যাদের বেশির ভাগই বেসামরিক নাগরিক। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এ পরিসংখ্যানকে জাতিসংঘ বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করে।
আলোচনায় অন্যতম বাধা ছিল যুদ্ধবিরতির স্থায়িত্ব, ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার ও ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে মানবিক সহায়তার পরিমাণ নিয়ে মতবিরোধ। জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) জানিয়েছে, ইসরায়েলের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও তারা প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান চালিয়ে যাবে, যা আগামী মাসের শেষের দিকে কার্যকর হবে। নেতানিয়াহু গাজার পুরোপুরি প্রত্যাহার অস্বীকার করেছেন এবং যুদ্ধপরবর্তী হামাসের ভূমিকা প্রত্যাখ্যান করেছেন।
এদিকে আলোচনার মাঝেই ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা বুধবার জানিয়েছেত, গাজার বিভিন্ন স্থানে হামলায় অন্তত ২৭ জন নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে একটি সাত বছরের শিশুও রয়েছে। তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা হামাসের বিদ্রোহী যোদ্ধাদের লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।