যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আঞ্চলিক পরিচালক নিয়োগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রভাব খাটিয়েছেন বলে অভিযোগ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। আজ বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুদক অভিযোগটি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, তার মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া ও শেখ রেহানার দেবর তারিক সিদ্দিকির পরিবারের দুর্নীতি অনুসন্ধান করছে দুদক।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা ছাড়াও তার স্ত্রী শাহিন সিদ্দিক, মেয়ে বুশরা সিদ্দিক, ভাতিজি সাবেক ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক এবং আজমিনা সিদ্দিকের দুর্নীতি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক।
দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, পুতুলের যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আঞ্চলিক পরিচালক বানাতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রভাবিত করেছেন—এমন অভিযোগ পেয়েছে দুদক। এসব অভিযোগে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
দুদক সূত্রে জানা যায়, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট তারিক সিদ্দিক ও তার পরিবারের সদস্যরা পরস্পর যোগসাজশে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, সরকারি জমি আত্মসাৎ, মানি লন্ডারিংসহ দেশে-বিদেশে নামে–বেনামে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থ পাচার, ঘুষ–বাণিজ্যসহ দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে সংস্থাটি।
ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিতে লেখাপড়া করা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল যুক্তরাষ্ট্রে স্কুল সাইকোলজিস্ট হিসেবে কাজ করেছেন। তার মা শেখ হাসিনা তাকে অটিজম ও নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডার বিষয়ক বাংলাদেশ জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসনের দায়িত্ব দেন। পরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞ উপদেষ্টা প্যানেলেরও তাকে সদস্য করা হয়।
২০২৩ সালের নভেম্বরে ভারতের নয়া দিল্লিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক কমিটির ৭৬তম অধিবেশনে সংস্থাটির দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক নির্বাচিত হন সায়মা ওয়াজেদ। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সেই দায়িত্ব নেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের দপ্তর ভারতের দিল্লিতে। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে পুতুল সেখানেই আছেন। আর গত ৫ অগাস্ট গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানোর পর থেকে শেখ হাসিনাও আছেন দিল্লিতে।