
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র চায় তেহরান যেন তাদের প্রতি ‘অনুগত’ থাকে, তবে ইরানের জনগণ কখনও এই ধরনের ‘গুরুতর অপমান’ মেনে নেবে না। কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
রোববার এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘তারা চায় ইরান আমেরিকার প্রতি অনুগত হোক। কিন্তু ইরানি জাতি তাদের সমস্ত শক্তি দিয়ে এই ভুল প্রত্যাশার বিরুদ্ধে দাঁড়াবে।’
খামেনি আরও বলেন, ‘যারা আমাদের আমেরিকার বিরুদ্ধে স্লোগান না দিতে বলে, তারা বাস্তবতা বোঝে না। এই সমস্যাটি এখনও অমীমাংসিত।’
তার এই বক্তব্য এসেছে এমন সময়, যখন ইরান ও ইউরোপীয় দেশগুলো পারমাণবিক আলোচনায় ফের বসতে সম্মত হয়েছে। ফ্রান্স, ব্রিটেন এবং জার্মানি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, যদি আলোচনা ব্যর্থ হয়, তবে তারা জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা ‘স্ন্যাপব্যাক’ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পুনরায় কার্যকর করতে পারে।
খামেনির মতে, শত্রুরা ইরানে বিভাজন সৃষ্টি করতে চায় এবং তিনি ‘আমেরিকা ও ইহুদিবাদী শাসনের এজেন্টদের’—ইসরাইলের প্রতি ইঙ্গিত করে—এই ষড়যন্ত্রের জন্য দায়ী করেন। তিনি ইরানিদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান; যাতে বিদেশি হস্তক্ষেপ ব্যর্থ হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ইরান যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় শক্তিগুলোর সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তিতে সই করেছিল, যার আওতায় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিনিময়ে পারমাণবিক কার্যক্রম সীমিত করা হয়। কিন্তু ২০১৮ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে সেই চুক্তি থেকে বের করে আনেন এবং ‘সর্বোচ্চ চাপ’ নীতির আওতায় ইরানের ওপর কড়া নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।
২০২৫ সালের জুনে, তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে পারমাণবিক আলোচনা শুরুর কথা থাকলেও, একই সময় ১২ দিনের একটি সামরিক সংঘাতের কারণে আলোচনা ভেঙে যায়। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছিল।
উল্লেখ্য,১৯৭৯ সালে ইসলামী বিপ্লবের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন রয়েছে। ইরান বরাবরই দাবি করে আসছে যে তার পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ, তবে পশ্চিমা দেশগুলো আশঙ্কা করে, তেহরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণে এগোচ্ছে।