
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোয় বোমা ফেলে ক্ষতি করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে অভিযোগ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে তেহরান। এ খবর জানিয়েছে ইরানের সংবাদ সংস্থা তাসনিম নিউজ।
আল মায়াদিন টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সাঈদ খাতিবজাদেহ বলেন, ইরানকে পারমাণবিক স্থাপনায় হওয়া ক্ষতিপূরণ ওয়াশিংটনকে দিতে হবে।
গত ১৩ জুন ভোরে ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালিয়ে আগ্রাসন অভিযান শুরু করে। ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে ইরান পাল্টা হামলা চালিয়ে প্রতিশোধ নেয়। এরপর ধারাবাহিকভাবে ইসরায়েলি হামলার পাল্টা জবাব দিতে থাকে ইরান।
প্রথমে এই সংঘাত ইরান-ইসরায়েলের বললেও, একটা সময় ইরানকে ‘নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করার জন্য চাপ দিতে শুরু করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে সতর্ক করে ট্রুথ সোশ্যালে বলেছেন, ‘আমাদের ধৈর্য্য ক্রমশ ভেঙে যাচ্ছে’। এরপর পোস্ট করেন, ‘নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ!’ তিনি আরও লেখেন, ‘আমরা জানি কোথায় খামেনেই লুকিয়ে রয়েছেন। তিনি সহজ টার্গেট। তবে তাকে আমরা এই সময় হত্যা করার কথা ভাবছি না।
একপর্যায়ে গত ২২ জুন ভোরে মার্কিন বোমারু বিমানগুলো তিনটি ইরানি পারমাণবিক স্থাপনায় আক্রমণ করে। পরের দিন সন্ধ্যায় তেহরান কাতারে অবস্থিত এই অঞ্চলের বৃহত্তম মার্কিন সামরিক বিমান ঘাঁটি আল উদেইদে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।
এরপর ২৪ জুন ট্রাম্প ঘোষণা করেন, ইসরায়েল ও ইরান যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে। ইসরায়েলও ঘোষণা করে, তারা মার্কিন প্রস্তাবে রাজি। পরে তেহরান জানায়, তারা তেল আবিবকে আগ্রাসন বন্ধ করতে বাধ্য করে বিজয় অর্জন করেছে।
সাঈদ খাতিবজাদেহ বলেন, ২৪ জুন কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির বার্তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই পাঠিয়েছিল।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইরানি জাতি প্রতিরোধের মাধ্যমে জায়নিস্ট সরকারের ওপর তাদের ইচ্ছা চাপিয়ে দিয়েছে এবং শত্রুকে একতরফাভাবে তাদের আগ্রাসন বন্ধ করতে বাধ্য করেছে।
ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন মাধ্যমে ইরানকে বার্তা পাঠালেও তেহরান বলে দিয়েছিল, যুদ্ধবিরতির বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে।
তিনি বলেন, ইরান জায়নিস্ট সরকারের সঙ্গে এমন কোনো লিখিত চুক্তি করেনি, যাতে নির্দিষ্ট কিছু ধারা থাকতে পারে; যা ঘটেছে তা হলো জায়নবাদের আগ্রাসন বন্ধ করা। ইরান প্রস্তুত থাকা সত্ত্বেও হামলা চালাবে না।