Image description

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদের (চাকসু) নির্বাচনকে ঘিরে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে ধরলেও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল বলছে, তারা ভোট বর্জন করবে না। আজ বুধবার বিকেল চারটায় ভোটগ্রহণ শেষে রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন অভিযোগ উত্থাপন করেন শাখা ছাত্রদলের নেতারা।

তাদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব পালনে গাফিলতি করেছে। অভিযোগ জানানো হলেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বরং ‘দেখছি’ বলেই দায় এড়িয়ে গেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন হৃদয় বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার আশ্বস্ত করেছিলেন ডাকসু ও জাকসু থেকে শিক্ষা নিয়ে চাকসুর নির্বাচন অনন্য উদাহরণ তৈরি করবে। কিন্তু আমরা দেখলাম প্রতিটি পদে পদে অনিয়ম কারচুপি ঘটেছে। কিন্তু আমাদের নির্বাচন কমিশনার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নির্বিকার ছিল।

রাত পর্যন্ত ভোট গণনা চললেও তিনি বলেন, তারা ফলাফল মেনে নাও নিতে পারেন। তিনি বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের ভোটাধিকার নিয়ে নির্বাচন করতে এসেছি। কিন্তু যেখানে অনিয়ম, পক্ষপাত আর বহিরাগত হস্তক্ষেপ–সেখানে ফলাফল গ্রহণ করা মানে অন্যায়ের বৈধতা দেওয়া।

”নির্বাচন কমিশন বলেছে, সব অভিযোগ বিবেচনা করা হবে এবং প্রয়োজনে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তবে এখনো পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক তদন্ত ঘোষণা আসেনি।”

সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের জিএস প্রার্থী মো. শাফায়াত বক্তব্য রাখেন। তার অভিযোগ, বিবিএ অনুষদে ৪০০ এর মত ব্যালট সাক্ষরহীনভাবে বক্সে ঢোকানো হয়েছে। ২৩১ ও ২৩২ নম্বর রুমে ফরহাদ হলের জিএস পদপ্রার্থী নিজে উপস্থিত ছিলেন। স্বতন্ত্র এক প্রার্থীকে সেখান থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।

তার ভাষ্য, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমরা চেয়েছিলাম সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচন এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছেন। এর বাইরে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক যাদের আমরা অনেক সম্মান করতাম। তারা পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছেন। এর বিচার সাধারণ শিক্ষার্থীরা করবেন।

ভিপি প্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন হৃদয় অমোচনীয় কালি না থাকা নিয়ে অভিযোগ করে বলেন, যখন নির্বাচন কমিশনারকে অভিযোগ করা হয়েছে তিনি তখন দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এবং বলেছেন যে তিনি অমোচনীয় কালি দিতে পারেননি। অথচ আমাদেরকে আজকের আগে তিনি কিছু জানাননি। সেখানে উনার ব্যর্থতার পরিচয় দেওয়া হয়েছে।

তিনি ভোটের স্বচ্ছতা নিশ্চিতে সার্বক্ষণিক এলইডি স্ক্রিন চালু থাকার আশ্বাস দেওয়া হলেও দিনভর বিভিন্ন কেন্দ্রে বারবার তা বন্ধ হওয়ার অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, এখন বিভিন্ন কেন্দ্রে যখন ভোট গণনা চলছে, বাইরে থেকে এলইডি স্ক্রিন অফ। আজ বিভিন্ন কেন্দ্রে যেখানে ছাত্রদলসহ বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরা ঢুকতে পারছিল না কিন্তু ইসলামী ছাত্রশিবির ও ছাত্রী সংস্থার প্রার্থীরা গিয়ে সেখানে প্রচারণা চালিয়েছে। আমরা বারবার অভিযোগ জানিয়েছি কিন্তু নির্বাচন কমিশন কোন ব্যবস্থা নেয়নি। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে বিবিএ ফ্যাকাল্টিতে প্রিসাইডিং ও রিটার্নিং অফিসারদের সাথে প্রার্থী ও ভোটারদের বাকবিতণ্ডা হয়।

নির্বাচন কমিশন নিরাপত্তা দিতে পারেনি অভিযোগ করে তিনি বলেন, নতুন কলা ভবনে বহিরাগতরা লাঠি ও ইট দিয়ে ছাত্রদলের ওপর হামলা করেছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশনার নির্বাচনকে কলঙ্কিত অধ্যায়ে পরিণত করেছে। বারবার অভিযোগ দেয়ার পরও তারা কোন পদক্ষেপ নেয়নি। ব্যর্থতায় পর্যবসিত করেছে।