Image description

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের জন্য টাকা দাবি করে এক চাকরিপ্রার্থী ও বিভাগের সভাপতির কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়েছে। রেকর্ডটি এআই দিয়ে তৈরি বলে দাবি করেছেন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মীর মেহবুব আলম।

তবে, রেকর্ডটি ‘আসল’ বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ফরেনসিক সাইকোলজি অ্যান্ড সায়েন্সেস (বিআইএফপিএস)। রাবি থিয়েটার অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের (আরইউটিএএ) সভাপতি হোসাইন মারুফের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই ফরেনসিক পরীক্ষা করে প্রতিষ্ঠানটি।

 

ওই চাকরিপ্রার্থীর নাম রাহাত ইসলাম (হৃদয়)। বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের এই শিক্ষার্থী স্নাতকে সিজিপিএ ৩ দশমিক ৬৩ ও স্নাতকোত্তরে ৩ দশমিক ৮৬ পেয়ে দুটিতেই প্রথম স্থান অধিকার করেন।

 

বিআইএফপিএস- এর ফরেনসিক পরীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী, রেকর্ডিং ও ভিডিওর মেটা ডেটা অ্যানালাইসিসে কোনও অস্বাভাবিক পরিবর্তন পাওয়া যায়নি, ফাইলটি মোবাইলে রেকর্ড করার পর কোনও রি-এনকোডিং চিহ্ন পাওয়া যায়নি, ভয়েসে প্রাকৃতিক ফরম্যান্ট প্যাটার্ন স্পষ্টভাবে বিদ্যমান, পিচ জিটার ও শিমার মানবকণ্ঠের স্বাভাবিক সীমায় রয়েছে, অডিওর ওয়েবফর্ম ও স্পেকট্রোগ্রামে কোনও এআই জেনারেটেড ভয়েস আর্টিফ্যাক্ট পাওয়া যায়নি, ফাইলের কোনও সম্পাদনার প্রমাণ পাওয়া যায়নি এবং রেফারেন্স ভয়েসের সঙ্গে আলোচ্য ভয়েসের উচ্চমাত্রার মিল পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে নাট্যকলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মীর মেহবুব আলমের মোবাইল ফোন নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, এখন আমাদের উনাকে ডেকে জিজ্ঞাসা করতে হবে এই বিষয়ে। আসলে যারা এক্সপার্ট তাদরকে সেই বিষয়টা দেখার জন্য সব ধরনের কাগজপত্র দেওয়া হয়েছে। যদি কোনও প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে আমরা ব্যবস্থা নেবো।

এর আগে, গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন রাহাত। কিন্তু তিনি মৌখিক পরীক্ষার (ভাইভা) জন্য মনোনীত হননি। তার অভিযোগ, নিয়োগ পরীক্ষার আগে তার কাছে অর্থ দাবি করা হয়েছিল। তিনি তা দিতে না পারায় তাকে মৌখিক পরীক্ষায় রাখা হয়নি।

এ নিয়ে ২১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সালেহ্ হাসান নকীবের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন রাহাত। অভিযোগের কপি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টার কার্যালয়সহ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে ডাকযোগে পাঠানো হয়। একই সঙ্গে বিভাগের চেয়ারম্যানের সঙ্গে নিয়োগ-সংক্রান্ত বিষয়ের আড়াই মিনিটের একটি কথোপকথনের অডিও রেকর্ড সংযুক্ত করা হয়।

রাহাতের অভিযোগ, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বজায় রাখা হয়নি। নিয়োগের সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন ব্যক্তি সরাসরি অর্থের বিনিময়ে পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচন করার চেষ্টা করেছেন।

নিয়োগ বোর্ডে প্রথমে যে অধ্যাপককে বিশেষজ্ঞ হিসেবে রাখা হয়েছিল, পরে তাকে বাদ দিয়ে অন্যজনকে রাখা হয় বলেও অভিযোগ করেন রাহাত। পাশাপাশি লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও নির্দিষ্ট বিষয় আগেই নির্দিষ্ট প্রার্থীদের দিয়ে অনৈতিক সুবিধা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তার।