
দেশে নির্বাচনী হাওয়া বইছে অন্তত আরো দু’মাস আগে থেকে। সর্বশেষ জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটা ঐকমত্য তৈরি হওয়ায় ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে সব সংশয় কেটে গেছে। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সাংগঠনিক প্রস্তুতি নিচ্ছে সব রাজনৈতিক দল। ভোটের মাঠে কৌশল-পাল্টা কৌশলে পথ চলছে তারা। আসছে ফেব্রুয়ারিতেই ভোট হচ্ছে: এমনটি মাথায় রেখেই মাঠ গোছাচ্ছে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশ নিতে ইচ্ছুক রাজনৈতিক দলগুলো।
বিশেষ করে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি তাদের দলীয় প্রার্থী বাছাই থেকে জোট ও শরিক দলের সঙ্গেও আসন সমঝোতার বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছে। জামায়াতে ইসলামী ছাড়া অন্য সব দলের সাথে তারা নির্বাচনের বিষয়ে আলোচনা করছে। খুব শিগগিরই এসব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে দলটি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দ্রুত দেশে ফিরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে তিনি ফিরে এলে দেশের পুরো রাজনৈতিক চিত্রই পাল্টে যাবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। তারা বলছেন, তারেক রহমান দেশে ফিরলে বিএনপির প্রার্থী বাছাই ও শরিকদের সঙ্গে আসন সমঝোতা খুব সহজেই হয়ে যাবে। সেই সাথে বিএনপির নির্বাচনী তৎপরতাও আরো বেগবান হবে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে বিএনপি অত্যন্ত সতর্কতার সাথে অগ্রসর হয়েছে। শেষ পর্যন্ত তাদের মতামতের সঙ্গেই একমত পোষণ করেছে বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল। সব মিলিয়ে বিএনপির রাজনৈতিক অবস্থান অত্যন্ত ইতিবাচক বলেই জনমনে প্রতীয়মান হচ্ছে।
অন্যদিকে, ভোটের মাঠে রাজনৈতিক কৌশলে জামায়াতে ইসলামী এত দিন নিজেদের অগ্রগামী মনে করলেও জুলাই সনদ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে তারা কিছুটা ব্যাকফুটে চলে গেছে। অন্যদিকে, রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশেও এ দলটি নির্বাচনী মাঠে ক্রমেই যেন একা হয়ে পড়ছে। শুরুতে জামায়াতে ইসলামী রাজনৈতিক অঙ্গনে নিজেদের শক্তি ও বলয় বাড়াতে বেশ তৎপর ছিল। ভোটকে সামনে রেখে নির্বাচনী জোট গঠনের উদ্যোগ নিয়েছিল জামায়াত। কিন্তু তাতে শুরুতেই হোঁচট খেতে হয় দলটিকে। জামায়াতের শীর্ষ নীতিনির্ধারকদের প্রত্যাশা ছিল: ইসলামভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি অন্য কিছু সাধারণ দলও তাদের সঙ্গে নির্বাচনী জোটে আসবে। তবে শেষ পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে, সাধারণ দল দূরে থাক: ইসলামভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোও জামায়াতের ডাকে সাড়া দিচ্ছে না। ভোটকে সামনে রেখে নির্বাচনী জোট গঠনেরও উদ্যোগ নেয় জামায়াত। কিন্তু এই উদ্যোগের শুরুতেই হোঁচট খেতে হয় দলটিকে। জামায়াতের শীর্ষ নীতিনির্ধারকদের প্রত্যাশা ছিল: ইসলামভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি অন্য কিছু সাধারণ দলও তাদের সঙ্গে নির্বাচনী জোটে আসবে। তবে শেষ পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে, সাধারণ দল দূরে থাক: ইসলামভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোও জামায়াতের ডাকে সাড়া দিচ্ছে না। রাজনৈতিক দলের বাইরে শক্তিশালী ইসলামী শক্তি হচ্ছে ‘হেফাজতে ইসলাম’ নামে অরাজনৈতিক একটি বৃহত্তর সংগঠন। সংগঠনটি ইতোপূর্বে রাজপথে নিজেদের শক্তি ও সামর্থ্য জানান দিয়েছে। এই হেফাজতে ইসলাম কাগজে-কলমে অরাজনৈতিক সংগঠন হলেও দলটির শীর্ষ অনেক নেতাই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন। সম্ভাব্য নির্বাচনকে সামনে রেখে হেফাজতে ইসলামকে পাশে চেয়েছিল জামায়াতে ইসলামী; কিন্তু হেফাজত জামায়াতে ইসলামীকে সমর্থন না দিয়ে উল্টো জামায়াতের আকিদাগত নানা নেতিবাচক দিক তুলে ধরে সমালোচনা করছে। খোদ হেফাজতের আমিরও জামায়াত নিয়ে সমালোচনা করছেন সবসময়। ফলে নির্বাচনের আগে জামায়াত-হেফাজত কোনো জোট বা অভ্যন্তরীণ সমঝোতা যে হচ্ছে না তা স্পষ্ট হয়ে গেছে। এ ছাড়া হিন্দু সম্প্রদায়ের দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে জামায়াত নেতাদের ম-প পরিদর্শন ও নানান মন্তব্যও ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।
অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামী জুলাই সনদ বাস্তাবায়ন ও পিআর পদ্ধতির নির্বাচনসহ কয়েক দফা দাবিতে যে আন্দোলন শুরু করেছিল সেটিও আপাতত মাঠে মারা গেল। জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট আয়োজনে সব দল একমত হয়েছে। যদিও এই গণভোট কখন হবে তা নিয়ে কিছুটা দ্বিমত রয়েছে। তারপরও এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা সরকারের উপর দেয়া হচ্ছে। আর প্রধান উপদেষ্টার উপস্থিতিতেই আগামী ১৫ অক্টোবর সব রাজনৈতিক দল জুলাই সনদে স্বাক্ষর করার কথা রয়েছে। আর জুলাই সনদে স্বাক্ষর করা মানে সব কিছু মেনে নেয়া। সে ক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামীর পিআরসহ অন্যান্য দাবি আদায়ের আর কোনো সুযোগ থাকছে না।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির নেতাদের নিয়ে গঠিত বহুল আলোচিত নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির-এনসিপির ভবিষ্যৎ নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এখনই আশাবাদী হতে পারছেন না। তরুণদের নিয়ে গঠিত এ দলটির অনেক নেতা শুরুতেই, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, বদলি বাণিজ্য, নারী কেলেঙ্কারিসহ নানান অপকর্মে জড়িয়ে পড়ায় সাধারণ জনগণের মনে তাদের প্রতি নেতিবাচক ধারণার জন্ম নেয়। এর ফলে অঙ্কুরেই তাদের অনেকটা বিনাশ ঘটেছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। সম্প্রতি এ দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম উপদেষ্টাদের সেফ এক্সিট বা নিরাপদ প্রস্থান নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বিতর্কের জন্ম নিয়েছে। এটি রাজনীতিতে নতুন ধোঁয়াশারও সৃষ্টি করতে পারে বলে অনেকে মনে করেন। সব মিলিয়ে নতুন এ দলটি খেই হারিয়ে রাজনৈতিক মাঠে কিছু এলোমেলো হয়ে ঘুরছে। এরপরও তারা আগামী নির্বাচন নিয়ে নতুন করে হিসাব-নিকাশ করছে। গণঅধিকার পরিষদের সাথে একীভূত হওয়া অথবা জোট গঠন করে তাতে আরো কয়েকটি দল যুক্ত করে নির্বাচনী জোট গঠনের চেষ্টাও এ দলটি করছে। তবে তা খুব একটা আশাজাগানিয়া নয়। এর বাইরে এ দলটি সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির সাথে আসন সমঝোতায়ও যেতে পারে এমন আলোচনাও রাজনৈতিক অঙ্গনে বিরাজমান।
সব মিলিয়ে এতদিন রাজনৈতিক দলগুলো তাদের নির্বাচনী মঠে যত কৌশল-পাল্টা কৌশল, সব কিছু সাজিয়ে ছিল জুলাই জাতীয় সনদকে সামনে রেখে। এই সনদ বাস্তবায়নে সব রাজনৈতিক দল গণভোট আয়োজনের বিষয়ে একমত হয়েছে। ১৫ অক্টোবর জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষরিত হবে বলে জানিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সনদ বাস্তবায়নে গণভোট নিয়ে ঐকমত্য থাকলেও গণভোটের ভিত্তি, সময় ও পদ্ধতি নিয়ে দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে শেষ পর্যন্ত সব দল সনদে সই করবে কি-না, তা এখনো পরিষ্কার নয়। কমিশনের সুপারিশে বাস্তবায়নের উপায় বিশেষ করে গণভোটের সময় ও ভিন্নমত থাকা প্রস্তাবগুলোর বিষয়ে কী থাকছে, এগুলো আগে দেখতে চায় দলগুলো। এসবের ওপর সনদে সই করা না করার বিষয়টি নির্ভর করছে বলে দলগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
ঐকমত্য কমিশন সূত্র জানায়, গণভোটের সময় ও পদ্ধতি নিয়ে মতভিন্নতা থাকলেও এ বিষয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য হওয়ায় সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি হিসেবে এটাকেই প্রাধান্য দিচ্ছে কমিশন। এ ক্ষেত্রে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, অধ্যাপক ও আইনজীবীদের সমন্বয়ে গঠিত বিশেষজ্ঞ প্যানেল যে মতামত দিয়েছে, সেটি ভিত্তি ধরছে কমিশন। প্রয়োজনে এটি আরো সুনির্দিষ্ট ও কিছুটা বিস্তারিত করা হবে। সূত্র জানায়, গণভোটের সময়ের বিষয়টি অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর ছেড়ে দেয়ার চিন্তা করছে কমিশন। আগামী ১২ অক্টোবরের মধ্যে বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সরকারের কাছে সুপারিশ দেবে কমিশন। বাস্তবায়নের সুপারিশ সনদের অংশ হবে না।
রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য তৈরির লক্ষ্যে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি যাত্রা শুরু করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দুই পর্বের আলোচনায় ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে ঐকমত্য ও সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে কিছু প্রস্তাবে কোনো কোনো দলের ভিন্নমত আছে। এই ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে তৈরি হচ্ছে জুলাই জাতীয় সনদ। প্রথম পর্বে ৩৩টি এবং দ্বিতীয় পর্বে ৩০টি দল আলোচনায় অংশ নেয়। তবে সংবিধান-সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের পাঁচ দিন আলোচনা হলেও ঐকমত্য হয়নি। সর্বশেষ গত ৮ অক্টোবরের আলোচনায় দলগুলোর অনড় অবস্থানের মুখে ঐকমত্য কমিশন জানায়, বিশেষজ্ঞ ও রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত সমন্বয় করে বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সরকারকে সুপারিশ দেবে কমিশন।
সনদে সংবিধান-সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে বিশেষজ্ঞরা কয়েকটি ধাপের কথা বলেছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সুপারিশ তৈরি করার ক্ষেত্রে কমিশন বিশেষজ্ঞদের মতামতকে গুরুত্ব দিচ্ছে। কমিশনও মনে করে, একটি বিশেষ আদেশ জারি করে তার ভিত্তিতে গণভোট করতে হবে। এ ছাড়া আগামী সংসদকে দ্বৈত ভূমিকা পালনের (সংবিধান সংস্কার পরিষদ ও জাতীয় সংসদ) ক্ষমতা দিতে হবে এবং কত দিনের মধ্যে সংবিধান-সংস্কার করা হবে, তা-ও নির্ধারণ করে দিতে হবে। ঐকমত্য কমিশন সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত তারা মনে করছে, গণভোটে প্রশ্ন হতে পারে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন চান কি-না। এ ক্ষেত্রে দুটি প্রশ্ন রাখার চিন্তা করা হচ্ছে। একটিতে থাকবে, যেগুলোতে ঐকমত্য আছে, সেগুলোর বাস্তবায়ন চান কি-না। আরেকটিতে থাকবে ভিন্নমত থাকা প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়ন চায় কি-না।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. জাহেদ উর রহমান বলেন, জুলাই সনদ বাস্তায়নের যে সুপারিশ ঐকমত্য কমিশন দেবে তাতে সব দলের একমত হওয়া উচিত। সরকার যদি এ ক্ষেত্রে কোনো মত চাপিয়ে দেয় তাহলে সেটি হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই এ ব্যাপারে সব দলের সম্মতিতেই অগ্রসর হওয়া উচিত।
শুরু থেকেই বিএনপি বলে আসছে, জুলাই সনদ নিয়ে সংবিধান আদেশ জারি করা যাবে না, সনদকে সংবিধানের ওপরে স্থান দেয়া যাবে না। দলটি বলছে, আদেশ নয়; বরং জুলাই সনদ নিয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা যায়। তার ভিত্তিতে একটি নতুন অধ্যাদেশ করে গণভোট করা যায়। আর সে গণভোট হবে সংসদ নির্বাচনের সাথে। সনদের অঙ্গীকারনামায় যুক্ত করা হবে যে, ভিন্নমতগুলোর বিষয় দলগুলো নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ করবে। নির্বাচিত হলে তারা ভিন্নমত অনুসারে সনদ বাস্তবায়ন করতে পারবে। সর্বশেষ গত ৮ অক্টোবরের আলোচনাও বিএনপি তাদের এই অবস্থান তুলে ধরে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, জুলাই সনদের বিষয়ে বিএনপি সবসময়ই আন্তরিক। এ বিষয়ে ঐকমত্য কমিশনে বিএনপির অবস্থানের সঙ্গে প্রায় সবাই একমত হয়েছে। সবাই গণভোটের পক্ষে মতামত দিয়েছে এবং সেটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সাথে যাতে একই দিন হতে হবে। জনগণ নিশ্চয় সংস্কারের বিষয়ে বিএনপির আন্তরিকতা ও সদিচ্ছা বুঝতে পেরেছে। কয়েকটি দল নির্বাচনের আগে গণভোট চাইছে। এ ক্ষেত্রে বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে ঐকমত্য কমিশন যে সুপারিশ দেবে, তা বিএনপি মানবে কি-না। জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ঐকমত্য কমিশন কী সুপারিশ দেয়, তা দেখে এ বিষয়ে মন্তব্য করা যাবে।
জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি চায়, সংস্কার টেকসই করতে সংবিধান আদেশ না হলেও জুলাই বাস্তবায়ন আদেশ জারি করে তার ভিত্তিতে গণভোট করতে হবে। আগামী জাতীয় সংসদকে দ্বৈত ভূমিকা পালনের ক্ষমতা দিতে হবে। ভিন্নমত থাকা প্রস্তাবগুলোও সনদ ও গণভোটে থাকতে হবে।
ঐকমত্য কমিশন জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে যে সুপারিশ দেবে জামায়াতে ইসলামী মেনে নেবে কি-না এবং সনদে সই করবে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, কমিশনের সুপারিশে কী আসে, সেটি আগে দেখতে হবে। তবে সংস্কার নিয়ে দীর্ঘ এক বছর কাজ করার পর যদি সরকার কিছু চাপিয়ে দেয়, সেটি জনগণ মানবে বলে মনে হয় না।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক গতকাল বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে দেয়া এক বক্তব্যে বলেন, জুলাই সনদের ভিত্তিতেই আগামীর বাংলাদেশ চলবে। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির মাধ্যমেই ত্রয়োদশ নির্বাচন দিতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। আর সংসদ নির্বাচনের আগে অর্থাৎ আগামী নভেম্বর মাসে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদানের লক্ষ্যে গণভোট দিতে হবে।
এনসিপিও সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ আগে দেখতে চায়। এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে কমিশনের কী সুপারিশ আসে, গণভোট কখন হবে, নোট অব ডিসেন্টের (ভিন্নমত) বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত আসে, এসব দেখে তারা তাদের পরবর্তী অবস্থান জানাবেন।
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেন, গণভোটের মাধ্যমেই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে হবে। এর ভিত্তিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন জনগণ চায়। এ ক্ষেত্রে জনগণের অভিপ্রায়কে সরকার প্রাধান্য দেবে বলে আমরা মনে করি।