
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) মলচত্বরে এক নারী শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে প্রবেশের সময় কিছু ভুল বোঝাবুঝির ঘটনাকে কেন্দ্র করে ‘নারী শিক্ষার্থীদের জন্য রাত ১০টার পর ক্যাম্পাসে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ’— এমন কিছু তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে।
এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এ প্রতিবাদের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা দলবদ্ধ হয়ে হলের নিয়ম-কানুন ভেঙ্গে রাত ১০টার পর রাতে ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়িয়ে ছবি তুলেছেন।
রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে দলবদ্ধ হয়ে ঘুরে মলচত্বরে ছবি তুলে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন।
এমনই একজন প্রতিবাদী শিক্ষার্থী হলেন রোকেয়া হলের আনিকা তাহসিন হাফসা। তিনি রবিবার রাত ১০টার পর সহপাঠীদের সঙ্গে ঘুরে মলচত্বরে তোলা একটি ছবি ১০ টা ৫২ মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদ-২ গ্রুপে পোস্ট করেন। এতে তিনি লেখেন, ‘’রাত ১০:৫২। মলচত্বর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’। এ ছবিতে ১৪-১৫ জনের নারী শিক্ষার্থীদের একটি গ্রুপকে উৎফুল্ল চিত্তে দেখা যায়।
এর আগের দিন (শনিবার) রাতে হাফসা ফেসবুক গ্রুপটিতে পোস্ট করে হাফসা রাত ১০টার পর বের হয়ে প্রতিবাদ জানানোর ঘোষণা দেন। সেই পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আগামীকাল (রবিবার) রাত ১০টার পর থাকছি মল চত্বরে। ১০টার পর হলে ঢুকতে না দিলে কীভাবে তালা ভাঙতে হয় তা কিন্তু জানি ভায়া! আর হ্যাঁ, প্রক্টরিয়াল টিম সাবধান! মেয়েরা যারা ফ্রি থাকবেন, চলে আসবেন। শুভ রাত্রি।’
অন্যদিকে, হাফসার ফেসবুক স্ট্যাটাসসহ এ বিষয়ে বিভিন্ন আলোচনা-সমালোচনার মাঝেই গত শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মলচত্বরে এক নারী শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে প্রবেশের সময় কিছু ভুল বোঝাবুঝির ঘটনায় আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর। রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে প্রক্টর অফিস থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য রাত ১০টার পর ক্যাম্পাসে প্রবেশ নিষিদ্ধ—এ ধরনের কোনো নির্দেশনা বা বিজ্ঞপ্তি তাদের পক্ষ থেকে জারি করা হয়নি। গতকাল রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মলচত্বরে একজন ছাত্রী প্রবেশের সময় কিছু ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। এই ঘটনার আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছেন ঢাবির প্রক্টর ।
প্রক্টর অফিস আরও জানিয়েছে, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ক্যাম্পাসে বহিরাগত ও ভবঘুরে প্রবেশ নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। নিরাপদ ক্যাম্পাস গঠনে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।