Image description

অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতাগ্রহণের পর থেকে আলোচনায় সংস্কার। সে লক্ষ্যে গঠিত কমিশনগুলোর সুপারিশ নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আহ্বানে সাড়া দিচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলো। সবার নিজস্ব প্রস্তাব, সুপারিশ, পাল্টা সুপারিশে সবার দৃষ্টি সংস্কারের দিকে।

কিন্তু সংস্কারের প্রস্তাবের কী কী চূড়ান্ত হতে যাচ্ছে? নানা বিষয়ে এরইমধ্যে দ্বিমত দেখা দিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো বলছে, অংশীজনরা যেসব বিষয়ে একমত হয়ে জাতীয় ঐকমত্য গঠন করবে, সেগুলোই বাস্তবায়নযোগ্য।

দেশের অন্যতম বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপি মনে করে, সংস্কার নিয়ে কেউ কেউ রাজনীতি করছে। দলটির নেতারা বলছেন, সংস্কার প্রশ্নে কারও দ্বিমত নেই, বরং সংস্কার ইস্যু সামনে এনেছেই বিএনপি। কিন্তু কমিশনের যেসব সুপারিশে জাতীয় ঐকমত্য হবে সেগুলোই বাস্তবায়িত হবে।

স্থানীয় সরকার, গণপরিষদ, গণভোট— কোনোকিছুরই বাস্তবতা নেই বলে মনে করে বিএনপি। তাই জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করে রাজনৈতিক সরকারের দিকে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান দলটির নেতাদের।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বললেন, যেখানে ঐকমত্য আছে, সেখানে এগুলো করা যাবে। যেখানে থাকবে না এবং না থাকার যথেষ্ট কারণ আছে। বিভিন্ন দলের বিভিন্ন ভাবনা-দর্শন-চিন্তা আছে, তাই ওগুলো তো জনগণের মতামত নিয়ে আপনাকে করতে হবে। গণতন্ত্রে যদি আপনি বিশ্বাস করেন, এর বাইরে কোনো প্রক্রিয়া নাই।

দলের স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, যে সমস্ত বিষয়ে বৃহত্তর জাতীয় ঐকমত্য হবে সেই বিষয়গুলো বাস্তবায়নের জন্য তারা একটি চার্টার করবেন, সে রকম একটা ঘোষণা আছে। তাছাড়া অন্যান্য বিষয় যেগুলোতে বিভিন্ন পার্টি ও বিভিন্ন কর্ণার ভিন্ন মত পোষণ করতে পারে, করবে এটাই স্বাভাবিক, সেগুলো আলাদাভাবে চিহ্নিত করে কাজ করা যাবে। জাতীয় সংসদে আলাপ আলোচনা করা যাবে, কারণ সব বিষয়ে সবাই একমত হবেন, এটা তো আশা করাও ঠিক নয়।

জাতীয় নির্বাচনের আগে অন্য কিছুর সুযোগ নেই বলে মনে করেন বিএনপি নেতারা। তাদের মতে, স্থানীয় সরকার নির্বাচন, গণপরিষদ, গণভোটের প্রসঙ্গ উদ্দেশ্যমূলক।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, গণপরিষদ ও গণভোট করার মতো কোনো বাস্তবতা এখন নেই। আর গণপরিষদের মাধ্যমে সংবিধান প্রণয়ন করার মতো বাস্তবতা নেই। যারা এটা প্রস্তাব করেছেন, সেটা তাদের দলীয় প্রস্তাব হতে পারে। আর অনেকেই বলেছেন যে গণপরিষদ ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন একই সাথে হতে পারে। হয় দুইজন প্রতিনিধি অথবা একই প্রতিনিধি গণপরিষদের এবং জাতীয় সংসদের প্রতিনিধি হিসেবে থাকবে। সেই বিষয়ে তো আমরা পরিষ্কারভাবে দ্বিমত পোষণ করেছি।

বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, আজকের এই সংস্কার, সাংবিধানিক পরিবর্তন সবকিছু কিন্তু একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে করতে হবে। যে আইনেই করি না কেন, সেই আইনটা তো নেক্সট পার্লামেন্ট কতৃক রেটিফাই করতে হবে। উইদাউট পার্লামেন্ট নো ওয়ান হ্যাজ অ্যানি রাইটস টু রেটিফাই এনিথিং।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, যারা সংস্কারের কথা বলতেছে নতুনভাবে, সেটা তো তাদের রাজনীতি, করতে চাইলে রাজনীতি করতেই পারে। কিন্তু সংস্কারের ধারক, বাহক ও উদ্যোগ সে সব বিএনপির।

বিএনপি নেতারা বলছেন, যতদূত রাজনৈতিক সরকার আসবে, ততো দ্রুত স্বস্তি ফিরবে জনমনে।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, পরস্পরের সম্মানবোধের বাইরে গিয়ে সাংঘর্ষিক রাজনীতির দিকে যাবে সেই জায়গাটাই কিন্তু স্বৈরাচারের জন্য উন্মুক্ত করা হচ্ছে।