Image description
হাদিকে গুলির প্রতিবাদে সমাবেশ

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরীফ ওসমান হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশে একযোগে ফ্যাসিবাদী শক্তিকে প্রতিহত করার শপথের পাশাপাশি সর্বদলীয় ঐক্যের ডাক দেয়া হয়। এ ছাড়া হাদির ওপর হামলাকারীদের ভারতে আশ্রয় দেয়ায় তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। সর্বদলীয় সমাবেশে জামায়াত, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, এবি পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। বিএনপি’র কোনো শীর্ষ নেতা অংশ না নিলেও দলটির পক্ষ থেকে সমাবেশের প্রতি সংহতি প্রকাশ করা হয়।  

সোমবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত ওই সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ওসমান হাদি শুধু একটা মানুষ নন, তিনি ভারতবিরোধী ঐক্যের প্রতীক। সিইসি কী করে বলতে পারলেন, এটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা? প্রকাশ্য গুলি করাটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা হতে পারে না। আমি গুলিবিদ্ধ হলে আমার দুঃখ নাই। এই সময়ে যত হত্যাকাণ্ড হয়েছে তাতে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা আছে। কেন অস্ত্রধারীদের গ্রেপ্তার করতে পারেননি? আপনার প্রশাসন জানে কারা অস্ত্রধারী, তাদের গ্রেপ্তার কেন করা হলো না? অস্ত্র উদ্ধার করুন। ভারতের পরিকল্পনা আমরা সফল হতে দেবো না। ভারত বাংলাদেশে নির্বাচনকে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে দিতে চায় না। গোটা জাতিকে ঐক্য করে তুলতে হবে। অন্য কোনো দলকে আওয়ামী লীগ বানিয়ে ক্ষমতায় আনা যায় কিনা সেই প্রচেষ্টাও সফল হতে দেবো না।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ আজ ঐক্যবদ্ধ। জুলাইযোদ্ধারা ঐক্যবদ্ধ। হাদির গায়ে গুলি লাগার কারণে বাংলাদেশ আক্রান্ত হয়েছে। অভ্যুত্থানে অংশ নেয়া, শহীদ পরিবারকে টার্গেট করা হয়েছে। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থারা এত অভিজ্ঞ। তারা গুম, খুন সব করেছে। কিন্তু ৫ই আগস্টের পর তাদের কর্মদক্ষতা কোথায় গেল। তারা হাদির ওপর আক্রমণকারীদের গ্রেপ্তার করতে পারে না কেন? না এটা ভাবতে হবে।

বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, হাদিকে ঠাণ্ডা মাথায় হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে বলতে চাই, জীবনে হুমকি থাকা সত্ত্বেও কী ব্যবস্থা আপনারা নিয়েছেন? প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলছেন, এটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এটা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। এর দায়িত্ব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নিতে হবে। খুনিকে ধরতে ৫০ লাখ টাকা ঘোষণা করা হয়েছে। এর মানে তাদের ধরার ক্ষমতা নাই। এই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাটা দিয়ে নির্বাচন হবে না। তাকে পদত্যাগ করতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে বলবো, দায়িত্বশীল পদে থেকে এরকম বক্তব্য দেয়া যায় না।  

এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, সীমান্তের ওপারে যারা আছে তারা আমাদের বন্ধু না। গোয়েন্দা সংস্থা থাকতে কীভাবে হামলাকারীরা ভারতে পালায়? আওয়ামী লীগ আমলে তারা মাইক্রোস্কোপ দিয়ে খুঁজে বিএনপি, জামায়াত বের করতো। এই মাইক্রোস্কোপগুলো কই? দেশে কাউন্টার ক্যু করে শৃঙ্খলা নষ্ট করা হয়। বাংলাদেশের খলনায়ক প্রশাসনের ভেতরে ঘাপটি মেরে আছে। নির্বাচনকে ভণ্ডুল করার চেষ্টা চলছে। সুশীলগিরি চালান এটা কিন্তু আরেক অশনি সংকেত। আগে আজাদির লড়াই কীভাবে নষ্ট করা হয়েছিল তা দেখতে হবে। অভ্যুত্থানের শক্তিকে নিজদের মধ্যে ঐক্য ধরে রাখতে হবে। 

এনসিপি মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেন, আমরা ’২৪-এ জীবন দিয়ে দেশের স্বাধীনতা রক্ষা করার লড়াই করেছি। কিন্তু আমরা শকুনদের নজর এড়াতে পারিনি। দুই বছর হতে না হতেই এই শকুনেরা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে, মানচিত্রকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে। তারা মনে করেছে, এক ওসমান হাদিকে হত্যা করে দেশের মানচিত্রকে আবার কুক্ষিগত করবে। কিন্তু আমরা বলতে চাই, প্রত্যেক স্বাধীনতাকামী-বিপ্লবী এক-একজন ওসমান হাদি। এক আবু সাঈদ, লক্ষ আবু সাঈদে পরিণত হয়েছিল। একইভাবে এক ওসমান হাদি, লক্ষ ওসমান হাদিতে পরিণত হবে।