Image description
অপরাধজগৎ

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ যতই ঘনিয়ে আসছে, অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের সঙ্গে অপরাধজগৎ দাপিয়ে বেড়ানো ভয়ংকর শুটারদের ঘিরে দুশ্চিন্তা বাড়ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর। এসব শুটার সচরাচর অপরাধজগতের অন্ধকার চোরাগলিতে থাকলেও মাঝেমধ্যেই ফিল্মি স্টাইলে গুলি করে নিজেদের দুর্ধর্ষতার জানান দিচ্ছে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধে সম্পৃক্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্রগুলো বলছে, নির্বাচনের আগে শুধু রাজধানী ঢাকাতেই অন্তত ২০ ভয়ংকর শুটারকে ঘিরে দুশ্চিন্তা বাড়ছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হলেও তাদের সাঙ্গোপাঙ্গরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহীতেও রয়েছে ভয়ংকর কয়েক শুটারের প্রভাববলয়।

শুধু গত দেড় মাসের মধ্যেই অন্তত চারবার এই শুটারদের ভয়ংকর রূপ দেখেছে মানুষ। এর মধ্যে গত নভেম্বরে চট্টগ্রামে বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য (এমপি) প্রার্থীর গণসংযোগের মধ্যেই গুলি করে দুর্ধর্ষতার জানান দেয় অস্ত্রধারী। একই মাসে শুটারের আগ্নেয়াস্ত্রের নির্ভুল নিশানায় রাজধানীর পল্লবীতে প্রাণ যায় যুবদল নেতার। পুরান ঢাকায় শুটারের নিখুঁত নিশানায় প্রাণ যায় আরেক তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীর। এর আগে আলাদা দুই ঘটনায় শুটারদের নিশানায় পরিণত হয়ে গুলিবিদ্ধ হন পুলিশের ৩ সদস্য। সর্বশেষ গত শুক্রবার ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি দক্ষ এক শুটারের অস্ত্রের নিশানায় পড়েন। যে ঘটনা দেশের আইনশৃঙ্খলার নড়বড়ে চিত্রের সঙ্গে অস্ত্রধারী শুটারদের ভয়ংকর রূপ সামনে নিয়ে আসে।

অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে যুক্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা শঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, ভোটের দিন যত ঘনিয়ে আসছে এমন নির্ভুল নিশানার বন্দুকবাজরাও নানা কারণে ততই আরও সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে। এ ছাড়া নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা ঘিরে এলাকাভিত্তিক ঘাপটি মেরে থাকা শুটাররাও তাদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠতে পারে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) শফিকুল ইসলাম গতকাল সোমবার কালবেলাকে বলেন, ‘আমরা এ ধরনের অস্ত্রধারী ও শুটারদের ব্যাপারে সব সময় সচেতন থাকি। নির্বাচন ছাড়াও তাদের ব্যাপারে আমরা জিরো টলারেন্স (শূন্য সহনশীলতা) নীতি অনুসরণ করি। তবে তপশিল ঘোষণার পরই সম্প্রতি কিছু স্পর্শকাতর ঘটনা ঘটায় এবং সামনে নির্বাচন থাকায় আমরাসহ অন্যান্য বাহিনী এ ধরনের অস্ত্রধারী ও শুটারদের ব্যাপারে বিশেষভাবে কাজ করছি।’

আর পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) এ এইচ এম শাহাদাত হোসাইন জানিয়েছেন, উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় অস্ত্রধারী ও পেশাদার অপরাধীদের হালনাগাদ তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার এবং অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

মোটা টাকায় ভাড়ায় খাটছে গ্যাংস্টারদের পালিত শুটাররা: রাজধানীর পুরান ঢাকার ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের সামনে গত ১০ নভেম্বর সকালে ফিল্মি স্টাইলে টানা ১০ রাউন্ড গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয় এক সময়ের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ ওরফে মামুনের। এক মিনিটেরও কম সময়ে কিলিং মিশনটি সম্পন্ন করে শুটাররা নিরাপদে ঘটনাস্থল ছাড়ে। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, মামুনকে লক্ষ্য করে সরাসরি গুলি চালায় ফারুক হোসেন ফয়সাল ওরফে কুত্তা ফারুক এবং রবিন আহম্মেদ ওরফে পিয়াস। হাসপাতাল গেটে ভিড়ে ভরা মানুষের মধ্যে এই দুই শুটারের অস্ত্র চালানোর ধরন ও বডি ল্যাঙ্গুয়েজ (শারীরিক ভাষা) দেখে বিস্মিত হন খোদ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। কিলারদের ব্যাকআপ টিমে ছিল পুলিশের তালিকায় থাকা আরেক শুটার আব্দুর রাজ্জাক রনি। যার নাগাল পাওয়া যায়নি এখনো।

মামুন হত্যায় জড়িত গ্রেপ্তার দুই শুটারকে জিজ্ঞাসাবাদে সংশ্লিষ্ট ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) এক কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, ‘ওই হত্যার মিশনে অংশ নেওয়া বন্দুকধারীরা প্রত্যেকেই শার্প শুটার (অত্যন্ত দক্ষ)। একযুগ আগে গুলশানে যুবলীগ নেতা রিয়াজুল হক খান মিল্কি হত্যায় জড়িত শুটারদের পরে এমন অভিজ্ঞ ও অব্যর্থ শুটারের দেখা মেলেনি। এ ধরনের বন্দুকধারীরা মূলত ভাড়ায় খাটে এবং হাই-প্রোফাইল ব্যক্তিদের হত্যার চুক্তি নেয়। রাজনীতিক, শক্ত প্রতিপক্ষ গ্যাং স্টারদের মারার জন্য তারা পারস্পরিক সমঝোতা বা মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে থাকে।’

মিরপুরের ফোর স্টার গ্রুপের ছয় শুটারে ভয়: রাজধানীর মিরপুরের পল্লবীতে যুবদল নেতা গোলাম কিবরিয়াকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় আলোচনায় আসে ফোর স্টার গ্রুপের নাম। গত ১৭ নভেম্বর তাকে পয়েন্ট-ব্ল্যাংক রেঞ্জ (অস্ত্র ঠেকিয়ে) থেকে এলোপাতাড়ি গুলিতে হত্যা করা হয়। নাইন এমএম রিভলবার দিয়ে তিনজন শুটার তার মৃত্যু নিশ্চিত করে। ওই কিলিং মিশনে ফোর স্টার গ্রুপের সোহেল ওরফে পাতা সোহেল, মাসুম ওরফে ভাগিনা মাসুম, সোহাগ ওরফে কাল্লু, রোকন ও জনি অংশ নেয়। তাদের মধ্যে রোকন এখনো অধরা।

মিরপুর এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, ‘ফোর স্টার গ্রুপে ঠিক কতজন শুটার রয়েছে, সেটির নিশ্চিত ধারণা নেই। তবে এই সন্ত্রাসী গ্রুপটির আরও অন্তত পাঁচজন দক্ষ শুটারের তথ্য রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে। এর মধ্যে জাকির অন্যতম। জাকির হলো সম্প্রতি ডিবি হেফাজতে অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করা মোক্তারের অনুসারী। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্ত করছে ডিবি ও র্যাব।’ তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কিবরিয়ার কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া শুটাররা প্রাথমিকভাবে ৩০ হাজার টাকা পেয়েছিল।

পুলিশকে গুলি করতেও কাঁপে না শুটার বাপ্পির হাত: দুর্ধর্ষ আরেক শুটার বাপ্পি। তাকে মো. আলী ওরফে ফিরোজ আলম ওরফে আহসানুল হক নামেও চেনে অপরাধ জগতের অন্ধকার চোরাগলির লোকজন। রাজধানীর ডেমরা-যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে শুরু করে সাভার ও আশুলিয়াতেও রয়েছে তার বিচরণ। খুচরায় ফেনসিডিল বিক্রির মাধ্যমে অপরাধজগতে হাতেখড়ি। এক পর্যায়ে পুরোপুরি মাদক কারবারে জড়িয়ে যায়। ফেনসিডিল ছেড়ে ইয়াবার কারবারে প্রবেশের পর নিজের মাদক সাম্রাজ্যের নিরাপত্তায় আগ্নেয়াস্ত্র রাখতে শুরু করে।

বাপ্পিকে নিয়ে খোঁজ রাখেন পুলিশের এমন একজন কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, ‘৭ হাজার টাকা দিয়ে ২০১০ সালে মেহের আলী নামে একজনের মাধ্যমে পাবনা থেকে বাপ্পি নিজের জন্য একটি অস্ত্র আনায়। ২০২৫ সালের মধ্যে হয়ে ওঠেন শার্প (নিপুণ দক্ষতা) শুটার। এই বাপ্পি মাদক কারবারের সঙ্গে ২০১৪ সাল থেকে সমানভাবে চালিয়ে যায় অস্ত্র বিক্রি ও ভাড়ার কারবার। বাদল নামে একজন তার অন্যতম সহযোগী।’

চলতি বছরের জুনে এ বাপ্পির ভয়াবহ রূপ দেখেছিল খোদ পুলিশই। রাজধানীর পল্টনে গভীর রাতে ইয়াবার চালান নিয়ে সহযোগীদেরসহ পুলিশের মুখে পড়ে। রাতের অন্ধকারেই পুলিশকে নিখুঁত নিশানায় পরিণত করে গুলি চালায় তারা। এতে ডিবির তিন সদস্য গুলিবিদ্ধ হন। শেষ পর্যন্ত ওই ঘটনায় যশোর থেকে বাপ্পিসহ তার সহযোগী আবু খালিদ সাইফুল্লাহ ও কামরুল হাসানকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। যদিও এর ছয় মাস না যেতেই জামিনে মুক্ত হয়ে ফের গা ঢাকা দিয়েছে সে।

জবানবন্দিতে বাপ্পি জানিয়েছিল, বিভিন্ন মামলায় কয়েকবার কারাগারে গিয়ে একাধিক শীর্ষ সন্ত্রাসীর সঙ্গে পরিচয় ও ঘনিষ্ঠতা। সেখান থেকেই মূলত অবৈধ অস্ত্রের অন্ধকার জগতে পা রাখে। ওই জগতে প্রবেশের পর চলতি জুন মাস পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকার সন্ত্রাসীদের কাছে বিক্রি ও সরবরাহ করেছে অন্তত ৭০টি অবৈধ অস্ত্র।

কিশোর গ্যাং ও দলছুট শুটাররাও মাথাব্যথার কারণ: ইনকিলাব মঞ্চের শরিফ ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় আলোচনায় এসেছে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল করিম মাসুদের নাম। দেশজুড়ে আলোড়ন তোলা এ ঘটনার পর তার দেশ ছাড়ার খবর মিলেছে। এর আগে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তারও হয়েছিল সে। যদিও সে সময়ে শুটার হিসেবে তার নাম আলোচিত ছিল না। তবে হাদিকে গুলির পর তাকেও ‘শার্প শুটার’ হিসেবে বিবেচনা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। যদিও আদাবর-শ্যামলী এলাকায় ফয়সাল অস্ত্রবাজ হিসেবেই চিহ্নিত।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্র বলছে, মোহাম্মদপুরে কিশোর গ্যাংসহ অন্য সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোতে অন্তত দশজন সক্রিয় শুটার রয়েছে। তাদের মধ্যে অন্যতম হলো—কিলার পাপ্পু গ্রুপের সাইফুল, শরিফ ও বাবলা। অন্য একটি গ্রুপের আলোচিত শুটার কালু ও রাজু। মোহাম্মদপুরের অস্ত্রধারী ও শুটারদের বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইবনে মিজান কালবেলাকে বলেন, ‘নির্বাচনের আগে আমরা এ ধরনের বিষয়গুলোর প্রতি সর্বোচ্চ সতর্ক থাকি। এখনো সেরকমই। তবে এলাকাভিত্তিক অস্ত্রধারী ও শুটারদের কোনো তালিকা নেই। বিভিন্ন সময়ে সোর্সের মাধ্যমে আমরা তথ্য পেয়ে অস্ত্রধারী শুটারদের গ্রেপ্তার করেছি, এখনো করছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

শুটারদের আছে নিজস্ব অস্ত্র ভান্ডার: গত সাত মাসে শুটারদের দুটি অস্ত্র ভান্ডারের সন্ধান পেয়েছে ডিবি। এর মধ্যে সম্প্রতি যুবদল নেতা গোলাম কিবরিয়া হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারে গিয়ে একটি অস্ত্র ভান্ডারের খোঁজ পায় ডিবি। পল্লবীর একটি রিকশা গ্যারেজ থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করে কিবরিয়ার হত্যাকারী। এই অস্ত্র ভান্ডার দেখভাল করত মো. মোক্তার হোসেন। এ ছাড়া পুলিশকে গুলি করার ঘটনায় বাপ্পির ডেমরা ও আশুলিয়ার বাসা থেকেও বিপুল সংখ্যক আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এসব অস্ত্র শুটার নিজের কাজে ব্যবহার করার পাশাপাশি বিভিন্ন সময় ভাড়াতেও দেওয়া হয়। এসব অস্ত্র ভাড়া করে এক গ্রুপ আর ব্যবহার করে আরেক গ্রুপ। ভাড়া যে দেয়, যে নেয় এবং যে ব্যবহার করে, অনেক সময় কেউই কাউকে চেনে না। এসব ক্ষেত্রে ছদ্মনাম ব্যবহার করা হয়।

বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তার হওয়া শুটারদের কাছ থেকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাতে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, সাধারণত অবৈধ অস্ত্রধারী ও শুটারদের অনুশীলন বা প্রশিক্ষণের কোনো নির্দিষ্ট জায়গা থাকে না। ঢাকাকেন্দ্রিক শুটার অনুশীলন করার জন্য বেছে নেয় গভীর রাত ও নির্জন নদীর মাঝখানের জায়গা।

অপারেশনের ধরনে নির্ধারিত হয় অস্ত্র ও শুটার ভাড়ার হার: আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্র জানায়, মাত্র ছয়শ থেকে তিন হাজার টাকায়ও অনেক সময় শুটার ভাড়া পাওয়া যায়। তবে কাকে গুলি করা হবে, ভয় দেখানো হবে, নাকি হত্যা করা হবে—এসবের ওপর নির্ভর করে শুটারের ‘মজুরি’। বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হওয়া অন্তত পাঁচজন শুটারের ভাষ্য থেকে এসব তথ্য মিলেছে।

এ প্রসঙ্গে ডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হলে টাকার পরিমাণ বাড়ে। হাই-প্রোফাইল ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে আবার কখনো কখনো সম্পর্কের খাতিরে বিনা টাকায় কাজ করতে হয়। তবে এক্ষেত্রে পরবর্তী সব ঝামেলা এড়ানোর দায়িত্ব থাকে অপর পক্ষের প্রতি।’

সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক কালবেলাকে বলেন, ‘নির্বাচনের আগে অস্ত্রধারী ও শুটারদের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা উচিত। এ বিষয়টিতে গুরুত্ব না দিলে নির্বাচনে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়ার শঙ্কা রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনী মাঠে আমরা সংঘাত, সহিংসতা, পেশিশক্তির ব্যবহার, আধিপত্য বিস্তারের মতো ঘটনাগুলো দেখেছি। এমন প্রেক্ষাপটে অস্ত্রবাজদের, কিলারদের চাহিদা বাড়ে। এরই মধ্যে আমরা তেমন দু-একটি ঘটনা দেখেছি। সেক্ষেত্রে আমরা বলছি যে, আইন প্রয়োগের জায়গা থেকে যথাযথভাবে নিশ্চিত করতে পারলে তখনই সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ব নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।’

অবৈধ অস্ত্রধারী ও শুটারদের দৌরাত্ম্যের বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) এ এইচ এম শাহাদাত হোসাইন বলেন, ‘নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার পর অস্ত্রধারী ও শুটারদের অপতৎপরতার বিষয়ে পুলিশ অত্যন্ত সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। এরই মধ্যে অস্ত্রধারী ও পেশাদার অপরাধীদের হালনাগাদ তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। পাশিপাশি গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার এবং অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।’