Image description

সিলেটের ছয়টি সংসদীয় আসনের চারটিতে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। বাকি দুটি আসনের মধ্যে একটিতে বিএনপির একাধিক প্রার্থী চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচারণা। আর অপরটিতে ভবিষ্যৎ জোটসঙ্গী জমিয়তকে ছেড়ে দেওয়ার গুঞ্জন রয়েছে। ফলে জেলার ছয়টি আসনের মধ্যে পাঁচটিতে বিএনপি ও জামায়াত এবং অপরটিতে জমিয়তের সঙ্গে জামায়াতের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন ভোটাররা। তবে কয়েকটি আসনে বিএনপির প্রার্থী বদলের দাবিও উঠেছে।

সিলেটে লড়াই বিএনপি-জামায়াতসিলেট-১ : মর্যাদাপূর্ণ এ আসনে প্রচারণায় রাতদিন ব্যস্ত সময় পার করছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির। সভা, সেমিনার, কর্মশালা ও মতবিনিময়ের মাধ্যমে তরুণ ভোটারদের মাঝে তিনি তাঁর আধুনিক চিন্তাভাবনা শেয়ার করছেন। এতে নতুন ভোটারদের মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বাবা প্রয়াত সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার আবদুল মালিকের ক্লিন ইমেজও তাঁর নির্বাচনের পাল্লা ভারী করছে। এবারও খন্দকার মুক্তাদিরের পক্ষে বিএনপি নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছেন। তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান এর আগে সিলেট-৬ আসন থেকে নির্বাচন করেছিলেন। সিলেট-১ আসনে প্রথমবারের মতো প্রার্থী হয়ে তিনি নির্বাচনি মাঠ জমাতে নিরলসভাবে কাজ করছেন। দলের নেতা-কর্মীরা ‘আদাজল খেয়ে’ মাঠে নেমেছেন।

সিলেট-২ : বিএনপির গুম হওয়া নেতা ইলিয়াস আলীর ইমেজ কাজে লাগিয়ে এ আসনে বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছেন তাঁর সহধর্মিণী তাহসিনা রুশদীর লুনা। আসনটিতে লুনার প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াতে ইসলামীর অধ্যক্ষ আবদুল হান্নান। আবদুল হান্নানের সঙ্গে দলীয় নেতা-কর্মী ও তাঁর ছাত্ররা মাঠে কাজ করছেন। এ আসনে খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব মুহাম্মদ মুনতাসির আলীও কাজ করছেন।

সিলেট-৩ : এ আসনে যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালিক দলীয় মনোনয়ন পেয়ে কাজ করছেন। নির্বাচনি এলাকায় নেতা-কর্মীদের নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছেন তিনি। আসনটিতে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াতের প্রার্থী মাওলানা লোকমান আহমদ। সিলেটের যেসব আসনে জামায়াতের শক্ত অবস্থান রয়েছে তাঁর মধ্যে অন্যতম এটি।

সিলেট-৪ : এ আসনে বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী ঘোষণা না দিলেও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী দলীয় প্রার্থী দাবি করে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তাঁর দাবি, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তাঁকে প্রার্থী হওয়ার কথা বলেছেন। তবে আরিফের দাবি সঠিক নয় আখ্যা দিয়ে প্রতিদিন মাঠে প্রচার-প্রচারণা ও শোডাউন করে যাচ্ছেন জেলা বিএনপির উপদেষ্টা আবদুল হাকিম চৌধুরী। আসনটিতে আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে রয়েছেন কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী। এ আসনে বিএনপির শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন।

সিলেট-৫ : এ আসনটিতেও বিএনপি প্রার্থী ঘোষণা করেনি। জোট হলে নির্বাচনে আসনটি জমিয়তে উলামায়ে ইসলামকে ছেড়ে দেওয়া হবে- এমনটা মনে করছেন বিএনপি নেতা-কর্মীরা। আসনটিতে জমিয়তের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক প্রচার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ২০১৮ সালেও তিনি বিএনপি জোট থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন। আসনটিতে জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন মাওলানা আনোয়ার হোসেন খান।

সিলেট-৬ : আসনটিতে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরীকে মনোনয়ন দিয়েছে দল। এরই মধ্যে আসনভুক্ত উপজেলা বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জে বিশাল বিশাল শোডাউনের পাশাপাশি দিনরাত প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। তবে মনোনয়ন ‘রিভিউ’র প্রত্যাশায় আছেন ২০১৮ সালে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রার্থী হওয়া বিএনপি নেতা ফয়সল আহমদ চৌধুরীর অনুসারীরা। আসনটিতে জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ঢাকা উত্তর জামায়াতের আমির মো. সেলিম উদ্দিন।