Image description
প্রার্থিতা নিয়ে বিক্ষোভ থামছেই না

প্রার্থিতা নিয়ে বিএনপিতে ক্ষোভ-বিক্ষোভ থামছেই না। ঘোষিত ২৩৭ আসনের মধ্যে কমপক্ষে অর্ধশত আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে বিক্ষোভ চলমান রয়েছে। মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বিকল্প প্রার্থীরা নির্বাচনী এলাকায় বিশাল বিশাল জনসভা, গণমিছিল, অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে কেন্দ্রেও জমা হয়েছে বেশ কয়েকটি রিভিউ আবেদন। জানা গেছে, প্রার্থিতা নিয়ে বিরোধ নিরসনে স্থানীয় পর্যায়ে দায়িত্বশীল নেতারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। স্থানীয় পর্যায়ে সমাধান না হলে ঢাকায় ঘোষিত প্রার্থী ও প্রত্যাশীদের ডেকে সমঝোতার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে কয়েকটি আসনে প্রার্থিতায় পরিবর্তন আসতে পারে। বয়োজ্যেষ্ঠ ও বিতর্কিত এই দুই ক্রাইটেরিয়াতে বাদ যেতে পারেন কয়েকজন।

বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের দাবি, ঘোষিত অনেক আসনে নব্য, হাইব্রিড, বিগত দিনের সুবিধাভোগী, আন্দোলন-সংগ্রামে নিষ্ক্রিয়দের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। বাদ পড়েছেন ত্যাগী, যোগ্য আর জনপ্রিয় অনেকে। এর ফলে কমপক্ষে ৫০টির মতো আসনে কম বেশি ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। দেখা দিয়েছে বিভক্তি। এর মধ্যে ২৫টির মতো আসনে ক্ষোভ তুঙ্গে রয়েছে। কোনো কোনো আসনে বিএনপির কোনো কোনো নেতা স্বতন্ত্র নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন।

প্রার্থী ঘোষণার পর বিতর্কের জেরে মাদারীপুর-১ (শিবচর) আসনে কামাল জামান মোল্লার প্রার্থিতা স্থগিত করে বিএনপি। বিতর্কিত ওই আসনের প্রার্থিতা স্থগিত করায় অনেক আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা আশান্বিত হয়ে উঠেছেন। তারাও একই প্রক্রিয়ায় আন্দোলন শুরু করেছেন। যোগ্য প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়ার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছেন। কোথাও কোথাও সঙ্ঘাত-সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এম ইকবাল হোসেইনকে পরিবর্তনের দাবিতে গৌরীপুরে বিক্ষোভ সমাবেশ করছেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক তায়েবুর রহমান হিরন। গত রোববার এ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন উত্তর জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি তানজিল আহমেদ মিঠু। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনে সাবেক এমপি মুশফিকুর রহমানকে মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। নব্বই ঊর্ধ্ব একজন অসুস্থ নেতাকে মনোনয়ন দেয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছেন নেতাকর্মীরা। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বলছেন, বিগত ১৭ বছর মুশফিকুর রহমান কানাডা প্রবাসী ছিলেন। ৫ আগস্টের পর দেশে ফেরেন মুশফিকুর রহমান। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট শাহ আলমের কাছে পরাজয়ের পর তিনি সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে যান। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি তাকে মনোনীত করলেও মনোনয়নপত্রে ভুল হলে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে যান। এই আসনে অপর মনোনয়নপ্রত্যাশী কবির আহমদ ভূইয়ার পক্ষে দুই উপজেলার নেতাকর্মীরা মাঠে নেমেছেন। প্রতিদিনই কর্মসূচি পালন করছেন।

কুষ্টিয়া-৪ আসনে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে সাবেক এমপি সৈয়দ মেহেদি আহমেদ রুমিকে। ৮০ বছর ঊর্ধ্ব বয়সী এই নেতার আসনে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ সাদী মনোনয়ন চাইছেন। শেখ সাদী তরুণ প্রজন্ম আর নারী ভোটারদের কাছে টানতে দীর্ঘদিন ধরে কর্মসূচি পালন করে আসছেন। এখানে মনোনয়ন পরিবর্তন না আসলে অঘটন ঘটতে পারে বলে জানিয়েছেন খোকসা উপজেলা বিএনপির সাবেক নেতা মোস্তাফিজুর রহমান।

গাইবান্ধা-৪ আসনে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে ওয়ান-ইলেভেনের সংস্কারপন্থী নেতা মোহাম্মদ শামীম কায়সার লিঙ্কনকে। তার মনোনয়ন মানতে পারছেন না তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। এই আসনের আরেক জনপ্রিয় প্রার্থী জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদকে মনোনয়ন না দিলে এই আসনটি হাতছাড়া হবে বলে আশঙ্কা করছেন নেতাকর্মীরা। স্থানীয় পর্যায়ে এ নিয়ে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে লিঙ্কনের মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে চিঠি দেয়া হয়েছে।

মাগুরা-২ আসনে প্রার্থী করা হয়েছে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরীকে। তার মনোনয়নকে কেন্দ্র করে বিভক্ত হয়ে পড়েছে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। একপাশে নিতাই রায় অন্যদিকে সাবেক এমপি কাজী সলিমুল হক কামালের সমর্থকরা। এর মধ্যে এই আসনের মোহাম্মদপুর, শালিথা ও সদর উপজেলার ১৭১টি ওয়ার্ড বিএনপির ৫০১ জন নেতাকর্মী নিতাই রায় চৌধুরীর প্রার্থিতা বাতিলের দাবি জানিয়ে দলের হাইকমান্ডের কাছে লিখিত দাবি জানিয়েছেন।

জামালপুর-২ (ইসলামপুর) আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় বিএনপির একটি পক্ষের কর্মী-সমর্থকরা। এই আসনে ইসলামপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি এ ই সুলতান মাহমুদকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। তবে সেখানে দলটির একটি অংশ বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব এ এস এম আবদুল হালিমের মনোনয়নের দাবিতে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছে।

টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ব্যবসায়ী ফকির মাহবুব আনাম। তার মনোনয়ন বাতিল চেয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছেন এই আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী আরেক বিএনপি নেতা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ আলীর সমর্থকরা।

সাতক্ষীরা-২ (সদর ও দেবহাটা) আসনে বিএনপি-মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন এই আসনে মনোনয়ন চাওয়া পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতীর অনুসারীরা। আসনটিতে মনোনয়ন পেয়েছেন সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির বহিষ্কৃত সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুর রউফ।

কুড়িগ্রাম-১ (ভুরুঙ্গামারী ও নাগেশ্বরী) আসনে বিএনপি-মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন জেলা বিএনপির সদস্য ও বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) যুগ্ম মহাসচিব ইউনুছ আলীর সমর্থকেরা। তারা এই আসনে ইউনুছ আলীকে দলীয় মনোনয়ন দেয়ার দাবি জানান। এই আসনে জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাইফুর রহমানকে মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি।

রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে স্থানীয় নেতাদের কাউকে প্রার্থী না করায় বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, রাজশাহীর ছয় আসনের মধ্যে পাঁচটিতেই স্থানীয় প্রার্থী দেয়া হলেও এই আসনে বহিরাগত একজনকে প্রার্থী করা হয়েছে। তিনি হলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসনবিষয়ক সহসম্পাদক শফিকুল হক। তিনি দীর্ঘদিন স্থানীয় রাজনীতি থেকে দূরে ছিলেন। তিনি রাজশাহী-২ (সদর) আসনের ভোটার।

নওগাঁ-২ (পতœীতলা-ধামইরহাট) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী পুনর্বিবেচনার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন হয়েছে। এ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির কৃষিবিষয়ক সম্পাদক সামসুজ্জোহা খানের নাম ঘোষণা করেছে দলটি। এ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন পতœীতলা উপজেলা বিএনপির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি খাজা নাজিবুল্লাহ চৌধুরী।

ঢাকা-৫ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে নবীউল্লাহ নবীকে। তাকে নিয়ে একদিকে যেমন বিতর্ক রয়েছে তেমনি তার বয়সের হিসাবও ভাবাচ্ছে দলকে। এই আসনের প্রার্থী বদল করা হতে পারে বলে দলের একটি সূত্র জানিয়েছে।

নেত্রকোনা-৫ (পূর্বধলা উপজেলা) আসনে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের ঘোষিত প্রার্থী আবু তাহের তালুকদারের বিরুদ্ধে অসন্তোষ বাড়ছে নেতাকর্মীদের মধ্যে । তার বিরুদ্ধে ফ্যাসিবাদীদের সহযোগীদের অর্থের বিনিময়ে পুনর্বাসন, বিএনপির বিভিন্ন কমিটিতে স্থান দেয়া, কর্মীদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত করাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।

চট্টগ্রাম-১২ আসনে ৫ আগস্টের পর এস আলম গ্রুপের গাড়িকাণ্ডে দল থেকে বহিষ্কৃত ও বিতর্কিত নেতা এনামুল হককে মনোনয়ন দিয়েছে দল। নেতাকর্মীরা জানান, এস আলম পরিবারের তদবিরেই এনামুলকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে নানাবিধ অভিযোগ থাকলেও তা আমলে নেয়নি দলের হাইকমান্ড। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক নেতিবাচক প্রচারণা চলছে। এই আসনে বিগত আওয়ামী আমলে গুমের শিকার সৈয়দ সাদাত আহমেদের মতো উচ্চশিক্ষিত, মার্জিত আর কর্মীবান্ধব নেতাকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন নেতাকর্মীরা।

নরসিংদী-৪ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুলের নাম ঘোষণা করেছে বিএনপি। সাবেক এই এমপি ওয়ান-ইলেভেনে সংস্কারপন্থী ছিলেন। জিয়া পরিবারকে নিয়ে কটূক্তি করা ছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিগত বছরে আওয়ামী লীগের সাথে তার সখ্য নিয়েও নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। এখানে ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েল বছরের পর বছর কাজ করছেন, সংগঠনকে শক্তিশালী করেছেন। মামলা-হামলায় জর্জরিত এই নেতাকে মনোনয়ন না দেয়ায় নেতাকর্মীরা হতাশ।

ঝিনাইদহ-৪ আসনে ২০১৮ সালে নির্বাচন করেছিলেন সাইফুল ইসলাম ফিরোজ। এলাকায় এবারের নির্বাচনের জন্য সব প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছেন। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে এই আসনের প্রার্থীও ফাঁকা রাখা হয়েছে। কেন এটা করা হয়েছে তা নিয়ে হতাশ তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।

নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনে বিএনপির মরহুম নেতা ফজলুর রহমান পটলের ছোট মেয়ে জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির যুগ্ম আহবায়ক অ্যাডভোকেট ফারজানা শারমিন পুতুলকে মনোনয়ন দিয়েছে দল। কিন্তু তার আপন বড় ভাই ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের সাবেক ভিপি ডা: ইয়াসির আরশাদ রাজন তার বোনের প্রার্থিতা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছেন। এই আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহদফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু বিগত বছরগুলোতে দলের সাংগঠনিক তৎপরতা কিংবা নেতাকর্মীদের সংগঠিত করতে কাজ করেছেন। টিপুকে মনোনয়ন না দেয়ায় সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশ চলছে।

কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির কাজী মফিজুর রহমানকে মনোনয়ন দেয়ার দাবিতে নোয়াখালী-২ আসনে বিক্ষোভ মিছিল অব্যাহত রেখেছেন নেতাকর্মীরা।

রাজবাড়ী-১ আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক ও রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক সড়ক ঘণ্টাব্যাপী অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে স্থানীয় বিএনপির একটি পক্ষ। এ সময় কারো কারো গায়ে কাফনের কাপড় দেখা যায়। এই আসনে কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহসভাপতি, রাজবাড়ী জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী মো: আসলাম মিয়ার মনোনয়নের বিষয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীদের অনেকে আশায় ছিলেন। কিন্তু দল বেছে নিয়েছে রাজবাড়ী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়মকে। এই মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে আসছেন আসলাম মিয়ার অনুসারীরা।

সুনামগঞ্জ-৫ আসনে (ছাতক ও দোয়ারাবাজার) বিএনপির মনোনীত প্রার্থী পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছেন দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ছাতক উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান চৌধুরী ও তার সমর্থকরা। এই দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আমিনুল ইসলামকে পরিবর্তনের দাবিতে রেললাইনের ওপর বিক্ষোভ করেছে নেতাকর্মীদের একাংশ। এই আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন সংরক্ষিত আসনে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য আসিফা আশরাফী (পাপিয়া), জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম (তুহিন), জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক মাসুদা আফরোজ হক, প্রকৌশলী এমদাদুল হক ও রতনপুর পৌর মেয়র তারিক আহমেদ। কিন্তু বিএনপি প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন দিয়েছে দলের কেন্দ্রীয় শিল্প-বাণিজ্যবিষয়ক সহসম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য আমিনুল ইসলামকে। এতে অন্যরা নাখোশ। তারা আমিনুল ইসলামের দলীয় মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছেন।

চট্টগ্রাম-১৩ আসনে সরওয়ার জামাল নিজামকে সম্ভাব্য প্রার্থী করেছে বিএনপি। নেতাকর্মীদের অভিযোগ, বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে তিনি মাঠে ছিলেন না। তার প্রার্থিতা পরিবর্তনে সেখানে বিক্ষোভ মিছিল হচ্ছে।

এছাড়া ক্ষোভ বিক্ষোভ চলছে বরিশাল-২, ফেনী-২, হবিগঞ্জ-৪, নোয়াখালী-৫, সাতক্ষীরা-৩, নীলফামারী-১, সিরাজগঞ্জ-৪ সহ আরো বেশ কিছু আসনে।

দলের স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য গতকাল আলাপকালে জানান, কয়েক দফা মাঠ জরিপ, সাংগঠনিক নেতাদের মতামতের ভিত্তিতে এবারের সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এটাই চূড়ান্ত নয়। তফসিল ঘোষণার আগে-পরে এই তালিকায় প্রয়োজন অনুসারে কিছু কিছু পরিবর্তন হতে পারে। তবে কোন অবস্থাতেই তৃণমূলের কোন্দলকে মেনে নেয়া হবে না। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে নির্বাচনে যেতে হবে। এজন্য যা যা করার দরকার দল তাই করবে। দলের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে- এই তালিকা চূড়ান্ত নয়। দলের স্থায়ী কমিটি যদি মনে করে, পার্লামেন্টারি বোর্ড যদি মনে করে, তারা কোনো আসনে পরিবর্তন আনবেন তাহলে সেটা করা হবে।