
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকসু নির্বাচনের ভোট গণনা চলাকালে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর গেট এলাকায় মুখোমুখি অবস্থান নেয় শিবির ও ছাত্রদল–সমর্থিতরা। তারা সবাই ছিল বহিরাগত।
উভয়পক্ষের প্রায় দেড় হাজার নেতাকর্মী সেখানে অবস্থান নিয়েছেন।
বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় সরেজমিন দেখা যায়, এক নম্বর গেটের এক পাশে শিবিরের বহিরাগত সদস্যদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। অন্যপাশে অবস্থান নেয় ছাত্রদল–সমর্থিত নেতাকর্মীরা। দুই পক্ষের মধ্যে মাঝে মাঝে স্লোগানধর্মী হট্টগোল শোনা গেলেও কোনো সংঘর্ষ ঘটেনি। তবে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে পুরো এলাকাজুড়ে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মী মো. মনির হোসেন নামে একজন বলেন, দুই পক্ষের লোকজন আলাদা আলাদা অবস্থান নিয়েছে। পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা মোতায়েন রয়েছেন। এখন পর্যন্ত কোনো সংঘর্ষ হয়নি, তবে পরিবেশ উত্তপ্ত।
এ সময় গণনা কক্ষের সামনে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা জানান, তারা ভোটের ফল দেখতে চাইলেও বাইরে এই উত্তেজনার কারণে অনেকে কেন্দ্রে যেতে সাহস পাচ্ছেন না। বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া ইসলাম বলেন, ভিতরে গণনা চলছে, বাইরে আবার স্লোগান ও উত্তেজনা—সব মিলিয়ে আমরা ভয়ে আছি।
ছাত্রদলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, এক নম্বর গেটে শিবিরের ‘বহিরাগত’ সদস্যরা অবস্থান নিয়েছে এবং তারা উত্তেজনা সৃষ্টি করছে। ছাত্রদলের চবি শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, বহিরাগত শিবির কর্মীরা এসে উসকানিমূলক আচরণ করছে। তারা সেখানে অবস্থান নিয়েছে।
অন্যদিকে শিবির সমর্থিত সম্প্রীতি জোটের নেতারা বলছেন, ছাত্রদলের নেতাকর্মীরাই আগে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। জোটের ভিপি প্রার্থী ইব্রাহিম হোসেন রনি বলেন, ছাত্রদল এসে স্লোগান দিয়ে উসকানি দেয়। আমরা সংঘর্ষ চাই না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসের একজন কর্মকর্তা (নাম প্রকাশ করেনি) বলেন, পরিস্থিতি আমরা ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। পুলিশ, র্যাব এবং নিজস্ব নিরাপত্তা দল প্রস্তুত আছে। কোনো দলকেই গণ্ডি ছাড়তে দেওয়া হবে না।
রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি আরো উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠছে। একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, গণনার সময় সবচেয়ে বেশি উদ্বেগ তৈরি করছে এক নম্বর গেট এলাকা। সামান্য উসকানিতেই পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে যেতে পারে। ফল গণনা এখনো চলছে। কিন্তু গণতন্ত্রের উৎসবের এই রাতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাতাসে শান্তির চেয়ে উদ্বেগের ঘ্রাণই বেশি দেখা গেছে।