Image description

বেসরকারি সংস্থা ইনোভিশন কনসালটিংয়ের ‘পিপলস ইলেকশন পালস সার্ভে, দ্বিতীয় পর্ব - দ্বিতীয় খণ্ড’-এর প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী বয়স যত বেশি, বিএনপির প্রতি ভোটারদে সমর্থন তত বেশি। বিএনপিকে বেশি পছন্দের তালিকায় রেখেছেন জেনারেশন-জি থেকে শুরু করে ষাটোর্ধ্ব ভোটাররা। অপরদিকে জামায়াতে ইসলামী ক্ষেত্রে উল্টো প্রবণতা দেখা গেছে; বয়স যত কম, দলটির প্রতি সমর্থন তত বেশি। যদিও জামায়াত বয়সভিত্তিক শ্রেণিতে দ্বিতীয় পছন্দের তালিকায়, তবে দলটির বয়স্ক ভোটার বিএনপির সমর্থকের তুলনায় অর্ধেকেরও কম।

আজ সোমবার (১৩ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অবস্থিত বিডিবিএল ভবনে অনুষ্ঠিত ‘ভোটারদের সিদ্ধান্তে সামাজিক প্রেক্ষাপট ও ভিন্নতার প্রভাব’ শীর্ষক গোল টেবিল আলোচনায় এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংস্থাটি।

জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, বয়স অনুযায়ী জেন জি (১৮-২৮ বছর), মিলেনিয়ালস (২৯-৪৪ বছর), জেন এক্স (৪৫-৬০ বছর) ও বুমারস (৬০+ বছর) সব বয়সের পছন্দ বেশি বিএনপিকে। জেন জি (১৮-২৮ বছর) ভোটারদের মধ্যে ৩৪ দশমিক ৩ শতাংশ বিএনপিকে, ৩২ দশমিক ৮ শতাংশ জামায়াতকে, ১৮ দশমিক ৮ শতাংশ আওয়ামী লীগকে (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ), ৬ দশমিক ৮ শতাংশ এনসিপিকে এবং ৭ দশমিক ৩ শতাংশ অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে পছন্দে রেখেছেন। মিলেনিয়ালস (২৯-৪৪ বছর) ভোটারদের মধ্যে ৪১ দশমিক ৬ শতাংশ বিএনপিকে, ৩১ দশমিক ৪ শতাংশ জামায়াতকে, ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ আওয়ামী লীগকে (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলের কোন তথ্য প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়নি।

জেন এক্স (৪৫-৬০ বছর) ভোটারদের মধ্যে ৪৬ দশমিক ৪ শতাংশ বিএনপিকে, ২৮ দশমিক ০ শতাংশ জামায়াতকে, ১৮ দশমিক ৮ শতাংশ আওয়ামী লীগকে (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ)। এছাড়া বুমারস (৬০+ বছর) ভোটারদের মধ্যে ৪৮ দশমিক ৬ শতাংশ বিএনপিকে, ২৬ দশমিক ৫ শতাংশ জামায়াতকে, ১৯ দশমিক ০ শতাংশ আওয়ামী লীগকে (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) পছন্দে রেখেছেন।

ইনোভিশনের প্রকাশিত জরিপ

পিপলস ইলেকশন পালস জরিপ ইনোভিশন জানায়, দ্বিতীয় পর্বের তথ্য সংগ্রহ করা হয় ২ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর। দ্বিতীয় পর্বের দুটি খণ্ড রয়েছে। এর মধ্যে প্রথম খণ্ডে জনগণের দৃষ্টিভঙ্গি যেমন- নির্বাচনের সময়কাল, নির্বাচনী পরিবেশ এবং অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যসম্পাদন সম্পর্কিত বিষয়ে তুলে ধরা হয়েছে এবং দ্বিতীয় পর্বটি প্রথম পর্বের ধারাবাহিকতায় অনুষ্ঠিত হয় ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ মার্চ। প্রথম পর্বের ফলাফল প্রকাশিত হয় চলতি বছরের ৮ মার্চ।

দ্বিতীয় পর্বের দ্বিতীয় খণ্ডে পালস পয়েন্টস, ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক, ভবিষ্যৎ সরকারের প্রতি প্রত্যাশা, দলীয় পছন্দ, দলের অনুমোদন ও ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত সম্পর্কিত বিষয়ে তুলে ধরা হয়েছে।

জরিপটি ১০ হাজার ৪১৩ ভোটার-বয়সী জনগণের মধ্যে পরিচালনা করা হয়। এর মধ্যে খানা/পরিবারের রয়েছে ৯ হাজার ৩৯৮ জন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যায়ে ভোটার রয়েছেন ১ হাজার ১৫ জন। জরিপের সময়কাল ছিল ২ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর। ৮টি বিভাগের ৬৪টি জেলায় এ জরিপের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। 

বিভাগ অনুযায়ী ঢাকা বিভাগে ২৫ দশমিক ৬ শতাংশ, চট্টগ্রামে ২০ দশমিক শূন্য শতাংশ, রাজশাহী বিভাগে ৫০ দশমিক শূন্য শতাংশ, খুলনা বিভাগে ১১ দশমিক ২ শতাংশ, রংপুর বিভাগে ১১ দশমিক শূন্য শতাংশ, ময়মনসিংহ বিভাগে ৯ দশমিক ৫ শতাংশ, বরিশাল বিভাগে ৬ দশমিক ২ শতাংশ ও সিলেট বিভাগে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। 

এলাকা অনুযায়ী ৬৯ দশমিক ৫ শতাংশ গ্রামীণ এবং ৩০ দশমিক ৫ শতাংশ শহুরে নমুনা ভোটার জরিপে অংশ নেন। এর মধ্যে ৫৪ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ, ৪৫ দশমিক ৪ শতাংশ মহিলা এবং শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ তৃতীয় লিঙ্গ রয়েছে। বয়স অনুযায়ী জেন জি (১৮-২৮ বছর) ৩৭ দশমিক ৬ শতাংশ, মিলেনিয়ালস (২৯-৪৪ বছর) ৩৩ দশমিক ৪ শতাংশ, জেন এক্স (৪৫-৬০ বছর) ১৯ দশমিক ৮ শতাংশ ও ৬০+ বছরের ১ দশমিক ৩ শতাংশ নমুনা ভোটার অংশ নেন।

ফাহিম মাশরুর সঞ্চালনায় গোলটেবিল আলোচনায় প্যানেলিস্ট হিসেবে ড. আসিফ শাহান, এনসিপি নেতা জ্যোতি রহমান জাকারিয়া, জামায়াত নেতা ড. নকীবুর রহমান, বাংলা আউটলুকের ড. অনন্যা রাইহান মোকতাদির, বেসরকারি সংস্থা ব্রেইন’র ড. শফিকুর রহমান অংশ নেন। আলোচনায় বেসরকারি সংস্থা ইনোভেশন কনসালটিংয়ের রুবাইয়াত সারওয়ার জরিপের ওপর প্রেজেন্টেশন প্রদান করেন। জরিপ পরিচালনায় সহযোগিতায় ছিল বেসরকারি সংস্থা ব্রেইন ও ভয়েস ফর রিফর্ম।