
বিএনপি’র নীতি-নির্ধারকদের কাছে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন সিলেটে দল থেকে পদত্যাগকারী নেতা এডভোকেট শামসুজ্জামান জামান। নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে তিনি মাজার জিয়ারত করে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণা শুরুর কথা জানিয়েছেন। জামান ছিলেন সিলেট বিএনপি’র তুখোর নেতা। বিগত আড়াই দশকে সিলেটের নানা আন্দোলন সংগ্রামে তার নাম জড়িয়ে আছে। সিলেট বিএনপি’র মধ্যে শক্তিশালী বলয় তিনি পরিচালনা করতেন। ২০২১ সালে স্বেচ্ছাসেবক দলের সিলেট জেলা ও নগর কমিটি গঠনকে কেন্দ্র স্বেচ্ছায় দল থেকে পদত্যাগ করেছিলেন জামান। ওই সময় তিনি ছিলেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক। তার সঙ্গে সিলেটের সিনিয়র নেতারা একই ইস্যুতে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নিয়ে জামান ত্রিশের অধিক মামলার আসামি ছিলেন।
পদত্যাগ করলেও জামান অন্য কোনো দলে যোগদান করেননি। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের শেষ দিকে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। দলবল নিয়ে মাঠে সক্রিয় ছিলেন। ওই সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত হন জামান ও তার অনুসারীরা। এদিকে, গেল কয়েক মাস ধরে জামান দলে ফেরার গুঞ্জন রয়েছে। অনুসারীরা জানিয়েছেন, পদত্যাগকারী জামান নিজ থেকে দলের নীতি-নির্ধারক মহলে যা বলার তা বলে দিয়েছেন। নীতি-নির্ধারক মহলের অনেকেই তার ওপর সন্তুষ্ট। এখন পদত্যাগের বিষয়টি তুলে নেয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন তার অনুগত নেতাকর্মীরা। এ ব্যাপারে দল থেকে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসবে বলে মনে করেন তারা। এদিকে, জামানকে বর্তমানে ভোটের মাঠে সক্রিয় হতে দেখা গেছে। বাড়ি সিলেট শহরে হলেও সিলেট-৪ আসনের সঙ্গে তার নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। এ আসন থেকে তিনি ২০১৮ সালে দলের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। প্রাথমিক মনোনয়নও পেয়েছিলেন। পরে এ আসনের সিনিয়র নেতা দিলদার হোসেন সেলিমকে ছাড় দেন। ওই নির্বাচনে অবশ্য দিলদার হোসেন সেলিম পাস করতে পারেননি। এবারের নির্বাচনকে সামনে রেখে জামান নতুন করে মাঠে নেমেছেন।
এরইমধ্যে তিনি আনুষ্ঠানিক প্রচারণার ঘোষণা দিয়েছেন। জামান জানিয়েছেন, ২০১৮ সালে দলের মনোনয়ন পেলেও সিনিয়র নেতাকে ছাড় দিয়েছেন। ২০২১ সালে দল থেকে পদত্যাগ করলেও আন্দোলন সংগ্রামে সরব ছিলেন। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে তিনি আহতও হয়েছেন। সিলেট-৪ আসনে ত্রিশ বছরের রাজনৈতিকভাবে কাজ করছেন জানিয়ে জামান বলেন, ‘যদি আগামীতে সুষ্ঠু নির্বাচন হয় তাহলে আমরা চেষ্টা করবো জনগণের ভালোবাসা নিয়ে যেন আমরা নির্বাচনে দাঁড়াতে পারি। নমিনেশন অবশ্যই আমি দলের কাছে চাইবো। দল যদি যাচাই করে মনে করে আমাকে নমিনেশন দিবে, তাহলে দেবে। আর যদি না দেয় যাকে দেবে সেই ইলেকশন করবে। সেটাই তো নিয়ম। সেটির প্রতি আমাদের অবিচল আস্থা ও দৃঢ় ধারণা আছে।’ জামান প্রচারণা শুরুর সময় বলেন; আপনারা জানেন পাহাড় নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সবকিছুর জন্য আমরা আল্লার কাছে প্রার্থনা করেছি। দোয়া করেছি আমাদের বাংলাদেশের অখণ্ডতা যেন বজায় থাকে এবং গাজার মানুষের জন্য আমরা প্রার্থনা করেছি। পাশপাশি আমরা আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে বলেছি যদি বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে যদি কোনো ষড়যন্ত্র হয়, আল্লাহ যেন আমাদের সেই শক্তি দান করেন আমরা যেন তা প্রতিহত করতে পারি। জামান বলেন, আমার জানামতে, কাউকেই দল থেকে এখন পর্যন্ত গ্রিন সিগন্যাল দেয়া হয়নি। প্রার্থীরা তো তাদের আগাম কিছু প্রচারণা চালাচ্ছেন। কাউকে এখনো প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো সিগন্যাল দেয়া হয়নি। জামান বলেন, প্রথমে আল্লাহ যদি চান এবং পরে যদি মানুষ চায় তখন নির্বাচন করবো।