
ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে আবার হাজার জাহাজ নিয়ে ফিলিস্তিন যাবেন বলে জানিয়েছেন আলোকচিত্রী ও দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলম।
ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে দেশে ফেরার পর শনিবার (১১ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর পান্থপথের দৃকপাঠ ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি একথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে ফিলিস্তিনিদের জন্য পরবর্তী কী করার পরিকল্পনা রয়েছে জানতে চাইলে শহিদুল আলম বলেন, এই যাত্রায় অসাধারণ কিছু ব্যক্তি একসাথে হওয়ার কারণে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, আমরা এখন আন্তর্জাতিকভাবে একটা নেটওয়ার্ক দাঁড় করাব। যেহেতু গ্লোবাল লিডাররা ফিলিস্তিনিদের জন্য কিছু করবে না। আমরা অ্যাক্টিভিস্টরা কীভাবে করতে পারি, সেই লড়াইয়ের প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি। সেটার বিস্তারিত আলাপ এখন করব না। কিন্তু একটা ব্লুপ্রিন্ট আমরা করে রেখেছি। ফেরার আগেই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, আমরা আবার যাব এবং হাজারটা জাহাজ নিয়ে যাব।
গাজা অভিমুখে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় যাত্রা এবং ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক হওয়ার পর আড়াই দিন কারাগারে থাকার বর্ণনা তুলে ধরে শহিদুল আলম বলেন, ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলের আক্রমণ নতুন নয়। বহু বছর ধরে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন চলছে। পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে কিছু কিছু আরব দেশ যুক্ত হয়ে যেভাবে ইসরায়েলকে সমর্থন, মদদ ও সহযোগিতা করেছে, এতে পরিষ্কার এর রাজনৈতিক বিষয়টি শুধু গাজাকে নিয়ে নয়, বরং পুরো পৃথিবীটা একভাবে সাজানোর চেষ্টা। এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবাদ হয়েছে। তারপরও আগ্রাসন চলছে। আমরা বলছি, সেখানে (গাজা) যুদ্ধবিরতি হয়েছে। কিন্তু এই মুহূর্তেও সেখানে মানুষ মারা যাচ্ছে। আগ্রাসনের কারণে যেমন মানুষ মারা যাচ্ছে, তেমনি খাবার, পানি না পেয়ে মারা যাচ্ছে। আমাদের অনেকের মনে হয়েছে, শুধু কথা বললে চলবে না। আমাদের কিছু একটি করে দেখাতে হবে। ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় যে অবরোধটা করেছে, সেটাকে দৈহিকভাবে ভাঙার চেষ্টা করতে হবে।
গাজার উদ্দেশ্যে যাত্রা করা সুমুদ ফ্লোটিলার বিষয়ে তিনি আরও বলেন, সুমুদ ফ্লোটিলা যাত্রা শুরু করে ৩০ আগস্ট। তাদের অপহরণ করা হয় ২ অক্টোবর। আমরা যাত্রা শুরু করি ৩০ সেপ্টেম্বর। আমাদের অপহরণ করা হয় ৮ অক্টোবর। আমাদের (কনশান্স জাহাজ) একদিন আগে আরও ৮টি ছোট নৌকা এবং পরে আরও দুটি মাঝারি নৌকা রওনা দেয়।
কনশান্স জাহাজ প্রসঙ্গে শহিদুল আলম বলেন, আজ পর্যন্ত যত ফ্লোটিলা গাজার উদ্দেশে গেছে তার মধ্যে কনশান্স সবচেয়ে বড়। আমাদের এই ফ্লোটিলায় ৯২ জন ছিলেন। এতে প্রধানত ছিলেন সাংবাদিক এবং স্বাস্থ্যকর্মী। এর কারণ, অবরোধের কারণে সাংবাদিকদের সেখানে বিচরণ করতে দেওয়া হয়নি, ইসরায়েল সেটা বাধা দিয়েছে এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজ করতে দেওয়া হয়নি, হাসপাতালে আক্রমণ করা হয়েছে, খুন করা হয়েছে। যেকোনো যুদ্ধ পরিস্থিতিতে এই দুই দল পেশাজীবীদের অবাধ আসা-যাওয়া হওয়ার কথা। সেটা হচ্ছে না। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, আমরাই যাব এই অবরোধটা ভাঙার জন্য এবং আমাদের সহকর্মী যারা গাজায় আছেন, আমরা তাদের পাশে দাঁড়াব। সেই কারণেই এই ফ্লোটিলাটি বিশেষভাবে করা। এই ফ্লোটিলা সবচেয়ে কম সময়ে পৌঁছেছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের (কনশান্স জাহাজ) আগে যাত্রা করা ৮টি নৌকা ও পরে যাত্রা করা দুটি নৌকার গতি অনেক কম। এগুলো ছিল পাল তোলা নৌকা। আমরা ৮টি নৌকার একদিন পরে যাত্রা শুরু করেও তাদের অতিক্রম করে ৬ অক্টোবর কাছাকাছি পৌঁছে যাই। সেক্ষেত্রে আমরা ৭ অক্টোবর গাঁজায় পৌঁছে যেতাম। কিন্তু আমরা সিদ্ধান্ত নেই আমরা অন্যদের জন্য অপেক্ষা করব। অন্য দুটি নৌকা, যেগুলো পরে যাত্রা শুরু করেছিল, সেগুলো যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মাঝপথ থেকে ফিরে গেছে। আমাদের অপেক্ষা করার আরেকটি কারণ, ইসরায়েল বলে যাচ্ছে, আমরা হামাস সমর্থনকারী। ৭ অক্টোবর যদি আমরা পৌঁছে যাই, তাহলে তারা এটি বলার সুযোগ অনেক বেশি পাবে। তাই আমরা ট্যাকটিক্যালি সিদ্ধান্ত নেই, আমরা ৮ অক্টোবর পৌঁছানোর চেষ্টা করব। সে কারণে আমরা বাড়তি একদিন সেখানে ছিলাম।
কনশান্স ফ্লোটিলায় অসাধারণ কিছু মানুষ ছিলেন জানিয়ে শহিদুল আলম বলেন, হুয়াইদা আরাফ নামের একজন ছিলেন, যিনি আগে সেখানে ছিলেন। তার ১০ জন সহকর্মীকে তার সামনে হত্যা করা হয়। বিপদের কথা জেনেও তিনি আমাদের সঙ্গে গেছেন। আমাদের সঙ্গে দুজন ক্যাপ্টেন ছিলেন। তারা আমাদের যাওয়ার আগে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন। জহুরা নামের একজন নারী ছিলেন, তার একটি পা ছিল না। তিনি নকল পা নিয়ে গেছেন। ৮৪ বছরের একজন নারী আমাদের সঙ্গে গেছেন, যিনি প্রেসিডেন্ট ম্যাঁক্রোর ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তিনি নৌকা থেকে লাইভ করে ম্যাঁক্রোকে প্রশ্ন করেছেন। অথচ মেইনস্ট্রিম মিডিয়া থেকে একটি ব্যক্তি এই যাত্রায় যাননি, তারা ঝুঁকি নেননি। এটা আমাদের মনে রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সাধারণ যাত্রীবাহী জাহাজে যেগুলো দিনের পর দিন পানিতে থাকে, সেগুলোতে শোয়ার ব্যবস্থা থাকে। কিন্তু ১৯৭২ সালে নির্মিত কনশান্স ফ্লোটিলা ছোট দূরত্বের জন্য বানানো হয়েছে। এটিতে বসার জায়গা আছে, কিন্তু শোবার জায়গা ছিল না। শুধু ক্রুদের শোয়ার জায়গা ছিল। এই জাহাজটি আমরা নিলাম কারণ, গাজায় যাওয়ার মতো আর জাহাজ ও ক্রু পাওয়া বিরল। কারণ কোন মালিক তার জাহাজ গাজায় যেতে দেবে?
ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটকের পর বন্দিশালার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে চাইলে শহিদুল আলম বলেন, আমাদের আগে থেকেই প্রস্তুতি ছিল। আমরা মহড়া দিয়েছিলাম। আক্রমণ হবে, সেটা আমরা ধরেই নিয়েছিলাম। আক্রমণ হলে কী করব, সেটি একেবারে মিলিটারি কায়দায় আমাদের প্রত্যেকের প্রশিক্ষণ করা ছিল। যেমন রোল কল করা। কেউ যদি মিসিং হয় তাকে কীভাবে খুঁজে পাব, আবার যখন আক্রমণ হবে, তখন কে প্রতিহত করবে, কে স্পোকসপার্সন হবে—সবকিছু আমরা ঠিক করে রেখেছিলাম। এর বাইরে আমি এবং আরেকজন সাংবাদিক শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ফিল্মিং করব, যাতে আমরা এই তথ্যটা দিতে পারি। সেজন্য আমাদের বিশেষ জায়গায় থাকতে হয়েছে, যেখান থেকে আমরা ইন্টারনেট সিগনাল পাব। আমরা এটাও জানতাম যে, ইসরাযেলি বাহিনী যখন আমাদের নৌকায় এসে যাবে, তখন আমরা আমাদের ফোন, ল্যাপটপ সমুদ্রে ফেলে দেব। কারণ এর মধ্যে অনেক তথ্য আছে, যেগুলি তাদের হাতে গেলে অন্যদের বিপদ হতে পারে। সেই কারণে আমরা আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু একেবারে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত যাতে ফিল্মিং করতে পারি, সেই কারণে আমরা একদম নিজেরা আগে গবেষণা করে কোন জায়গায় সবচেয়ে বেশি সিগন্যাল পাওয়া যায়, সেরকম জায়গায় ছিলাম। আমরা যেদিন অপহৃত হয়েছিলাম, তার আগের রাতে অনেক রাত পর্যন্ত আমাদের ছবি আপলোড করতে হয়েছে। কারণ আমরা জানি যে, সেই রাতে হয়তো আক্রমণ হতে পারে। কাজেই আমরা তখন আমাদের যত ডেটা আছে, সেগুলো আই-ক্লাউডে ব্যাকআপ করেছিলাম।
তিনি আরও বলেন, যখন ইসরায়েলি বাহিনী আমাদের জাহাজে আক্রমণ করল, তখন সাইরেন বাজা শুরু করল। হোবাইদা (ক্যাপ্টেন) তখন বলছেন, এটা কিন্তু আসল, এটা মহড়া না। তখনই বুঝে ফেলেছি ঘটনা কী। তখন অন্যান্য কিছু না নিয়ে আমি শুধু আমার ল্যাপটপ এবং মোবাইল, এই দুটো হাতে নিয়েছি। কারণ এই দুটোকে ফেলে দিতে হবে এবং আমার শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ফিল্মিং করতে হবে। আমি গিয়ে তারপর বসেছি। আমি ফেসবুক লাইভ করতে চেষ্টা করেছি। সংযোগের কারণে লাইভ দিতে পারছিলাম না। তারপরও দুটি ছোট ছোট লাইভ দিয়েছি। আমাদের জাহাজটা অনেক বড় বলে ইসরায়েলি বাহিনী পানি দিয়ে না এসে হেলিকপ্টার দিয়ে আসার সম্ভাবনা বেশি, সেটা আমরা জানতাম। কিন্তু হেলিকপ্টারে এলে বাতাস, পানির একটা ঝড় তৈরি হবে, সেটা আমাদের হয়তো হিসাবে ভুল ছিল। তার মধ্যেই কাজ করতে হয়েছে। এবং যখন দেখি যে একেবারে বন্দুক নিয়ে নৌকায়, জাহাজে নেমে গেছে উপরের ডেকে, তখনই আমি আমার মোবাইল ফোন এবং ল্যাপটপ পানিতে ফেলে দিলাম।
তারপরে এরা (ইসরায়েলি বাহিনী) যখন নামল, আমি ৩৯ জন পর্যন্ত গুনেছি। কিন্তু আমার অনুমান তারা ৫০ জনের মতো ছিল। কিছু নারীও ছিল। পুরুষরা পুরো কমব্যাট গিয়ারে। একেকজনের একেক রকম মেশিনগান, স্নাইপার বুলেট, লেজার বুলেট আলাদা ছিল। এবং সেই সময় আমরা দেখি যে, আমার এবং আরেকজন সাংবাদিকের ওপরে ওই লেজার পড়ছে। লেজার লাইট আমাদের একদম কপালের ওপর টার্গেট করা। আমরা তাড়াতাড়ি ফোন, ল্যাপটপ ফেলে দিলাম। তাদের বেশ কয়েকজনের মাথার ওপরে গোপ্রো, নাইট ভিশন বাইনোকুলার, স্নাইপার এবং শরীরে বিভিন্ন ধরনের প্যাডিং ছিল। নারী যারা ছিলেন, তাদের হাতেও বন্দুক ছিল, তারা কমব্যাট গিয়ারে ছিলেন না। তারা সিভিলিয়ান পোশাকে ছিল, কিন্তু তাদের প্রত্যেকের হাতেই বন্দুক ছিল। তারপরে আমাদের এক এক করে ভেতরে নিয়ে যায়। আমাদের কীভাবে বসতে হবে, কী কী করতে হবে সেগুলি বলল। আমাদের কাছে পরিষ্কার যে, এখন আমাদের গাজায় যাওয়ার আর সুযোগ নেই, এখন আমরা সম্ভবত ইসরায়েলি জেলের দিকেই যাচ্ছি।
ইসরায়েলি বাহিনী যখন আটক করে তখন ওই ফ্লোটিলা গাজার ভূখণ্ড থেকে কত দূরে ছিল জানতে চাইলে শহিদুল আলম বলেন, যেদিন ইসরায়েলি বাহিনী আমাদের ওপর আক্রমণ করে সেদিন সকালে আমরা গাজার মূল ভূখণ্ড থেকে ২১০ নটিক্যাল মাইল দূরে ছিলাম। কিন্তু যখন ইসরায়েলি বাহিনী আমাদের জাহাজে ওঠে তখন কতদূর ছিল, সেটা নির্দিষ্ট করে বলতে পারছি না। কারণ জাহাজ চলমান ছিল। আমাদের অপহরণের ১২ ঘণ্টা পর আমরা জমিনে পৌঁছাই। সেখান থেকে ধারণা, আটকের সময় আমরা ১৮০ নটিক্যাল মাইল দূরে ছিলাম।
ইসরায়েলি বাহিনী নির্যাতন করেছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, টর্চারের কথা যদি বলি, সেটা অনেক রকমের টর্চার। প্রধানত মেন্টাল টর্চার করা হয়েছে। আমার পাশে দুজন তুরস্কের ক্রু ছিলেন, তাদের মেশিনগানের ব্যারেল দিয়ে গুঁতা দিয়েছে এবং তখন বিকট আওয়াজ হয়েছে। আমরা যখন জাহাজ থেকে নামি, তখন আমাদের প্রত্যেকের হাত বাঁধা হয়। আলী নামের একজন তিউনিশিয়ানের গায়ে ফিলিস্তিনি শার্ট পরা ছিল। তাকে শার্ট খুলতে বলা হয়। তিনি রাজি না হলে তার ওপর চড়াও হয়। তাকে সাহায্য করতে আদনান নামের একজন যান, তার ওপরও তারা চড়াও হয়। আমাদের হাঁটু গেড়ে বসানো হয়। সেটা আমার জন্য অনেক কষ্টকর ছিল। প্রায় দুই ঘণ্টা আমাদের মাথা নিচু করে ওভাবে বসিয়ে রাখা হয়েছে। ঘাটে যে জায়গায় আমাদের হাঁটু গেড়ে বসিয়ে রাখা হয়, সেখানে এর আগে ইসরায়েলি বাহিনী মূত্রত্যাগ করে। আমার সবচেয়ে খারাপ লেগেছে আমার পাসপোর্ট নিয়ে তারা মাটিতে ফেলে দেয়। যেটা আমাকে সবচেয়ে বেশি আঘাত করেছে। ফিজিক্যাল আঘাতের চাইতে সেটা আমাকে বেশি কষ্ট দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের যে কারাগারে রাখা হয়েছে, সেখানে আমরা লোহার বিছানায় ঘুমাতাম। একটু নড়চড় করলেই গুলির মতো শব্দ করতো সেই বিছানা। জাহাজ থেকে যখন আমাদের কারাগারে নেওয়া হয়, তখন আমাদের চোখে পট্টি পরানো ছিল। কারাগারে দুই-একজন ছাড়া আমরা হাঙ্গার স্ট্রাইক করি। সেখানে আমরা এভাবে আড়াই দিন ছিলাম। আমাদের সেলে আট জনের জায়গা ছিল, আমরা ছিলাম সাতজন। ইসরায়েলি বাহিনী আমাদের ভয় দেখানোর জন্য রাতে হঠাৎ ড্রাইড গিয়ার নিয়ে, মেশিনগান নিয়ে সবকিছু নিয়ে হুড়মুড় করে সেলের মধ্যে ঢুকে পড়তো। ঘরের মধ্যে এসে চিৎকার করে দাঁড়াতে বলতো—এটা একটা আতঙ্কময় পরিস্থিতি।
সুমুদ ফ্লোটিলায় যাওয়ার আগে এবং ফিরে আসার পর পরিবারের অভিব্যক্তি কী ছিল জানতে চাইলে শহিদুল আলম বলেন, রেহনুমাকে আমি জানালাম যে, আমি যাব, তখন ও একটা ছোট্ট উত্তর দিল, ‘১০০%’। তারপর আমরা অন্য অনেক আলাপ করেছি। যদি যাওয়ার পর মারা যাই, আর ফিরে না আসি বা আসতে দেরি হলে কী হবে, সেগুলো নিয়ে কথা বলেছি। প্রতিষ্ঠান চালানোর ব্যাপারে যাবতীয় কাগজ সই করে তারপরে আমি এই যাত্রায় গিয়েছি।
ইসরায়েলি বাহিনীকে চোর অ্যাখ্যা দিয়ে শহিদুল আলম বলেন, ইসরায়েলি বাহিনী ছ্যাঁছড়া চোর। আটকের সময় তারা আমাদের কোনো জিনিস নেবে না বলেছে। কিন্তু মুক্তির পর আমার ১ হাজার ৬০০ ডলারের মধ্যে ১ হাজার ৩০০ ডলার ফেরত পেয়েছি। আমাদের অন্যান্য জিনিসপত্র তারা রেখে দিয়েছে। কোনো যন্ত্রপাতি ফেরত পাইনি।
ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে শনিবার (১১ অক্টোবর) ভোর পৌনে পাঁচটার দিকে রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান আলোকচিত্রী শহিদুল আলম।