
নেতৃত্ব ও সাংগঠনিক কাঠামো নিয়ে জটিলতায় শেষমেষ একীভূত হওয়া হচ্ছে না জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও গণঅধিকার পরিষদের। তরুণদের এই দুই রাজনৈতিক দলের এক হওয়ার আলোচনা বেশ জোরালো হলেও কয়েকটি ইস্যুতে সমঝোতা না হওয়ায় তা ভেস্তে গেছে। যদিও দল দু’টির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা প্রকাশ্যে এ বিষয়ে কিছু বলছেন না।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই দুইদলের একীভূত আলোচনার সূত্রপাত। এরপর বৈঠকে বসেন দুইদলের শীর্ষ নেতারা। বৈঠক শেষে তারা ইতিবাচক বার্তা দিলেও দলের নাম, নেতৃত্ব কাঠামো ও সাংগঠনিক অবস্থান নিয়ে দ্বন্দ্বে অগ্রসর হয়নি আলোচনা। উভয় দলের কয়েকজন শীর্ষ নেতা প্রকাশ্যে বা আভাসে একীভূত হওয়ার বিরোধিতা করেন।
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান মানবজমিনকে বলেন, এনসিপি ও গণঅধিকার পরিষদের বৈঠকে দুইদলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই আলোচনা হয়েছে। এরপর আর কোনো আলোচনা হয়নি। এনসিপি’র কিছু নেতাকর্মী নিজেদের মতো করে বক্তব্য দিচ্ছেন। তারা বলতে চাইছেন গণঅধিকার পরিষদ হয়তো এনসিপিতে জয়েন করবে। গণঅধিকার পরিষদ এনসিপিতে জয়েন করবে না।
তিনি বলেন, তবে তারা (এনসিপি) ও আমরা মিলে একটি বড় কিছু করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে, আমরা বড় একটি পার্টি হবো। সম্প্রতি তাদের কিছু নেতাকর্মী বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। যেটা খুবই অসম্মানজনক। তাদের সঙ্গে আমরা বসবো চূড়ান্ত আলোচনা করবো। দুই দল একত্রিত হলে নেতাদের পদ-পদবি নিয়ে অনেকেই হীনমন্যতার জায়গা থেকে বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। তারা যদি এক হতে না চায় আমাদের আপত্তি থাকবে না। তবে তারা যদি এক হতে চায় আমাদের আন্তরিকতা থাকবে। একটি মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে তারুণ্যের শক্তি এক হওয়ার উদ্যোগ শুরু হয়েছিল। এই উদ্যোগ বানচালের জন্য কেউ কেউ নানাভাবে চক্রান্ত করছে। এই চক্রান্তে যারাই পা দেবে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
অন্যদিকে, জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক জাভেদ রাসিন মানবজমিনকে বলেন, এনসিপি’র কারও সঙ্গে যাওয়ার কোনো প্ল্যান নেই। কেউ যদি এনসিপিতে আসতে চায় সেটাকে আমরা সবসময় স্বাগত জানাই। গণঅধিকার পরিষদ এনসিপিতে আসতে চেয়েছিল।
গণঅধিকার পরিষদের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদেরও চাওয়া-পাওয়ার একটি বিষয় আছে। যেহেতু তাদের সাংগঠনিক স্ট্রাকচার আছে, দলের নিবন্ধন আছে, দেশব্যাপী তাদের একটি সাংগঠনিক ভিত্তি আছে। সেগুলোকে কীভাবে কী করা হবে, কমিটিগুলোকে কীভাবে মার্জ করা হবে- এই বিষয়গুলো একটি জটিল প্রক্রিয়া। জটিল এই প্রক্রিয়ায় দীর্ঘ আলোচনার ব্যাপার আছে। গণঅধিকার পরিষদের সভাপতিও চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে আছেন। সব মিলিয়ে একীভূত হওয়ার বিষয়টি একেবারেই ক্ষীণ।
আলোচনা শুরুর সময় দুই পক্ষের তরফ থেকে তরুণদের শক্তিকে এক করার মহৎ উদ্দেশ্যের কথা বলা হলেও শেষ পর্যন্ত নেতৃত্বের প্রশ্নেই উদ্যোগটি মুখ থুবড়ে পড়েছে।