
জনমত তৈরি এবং ভোটের মাঠে নিজেদের শক্ত অবস্থান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নয়া কৌশলে মাঠে সক্রিয় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটি দৃশ্যত পিআরসহ পাঁচ দফা দাবি নিয়ে রাজপথে আন্দোলন করছে। আসলে এই কর্মসূচি নিয়ে তারা জেলা শহর থেকে উপজেলা, ইউনিয়ন, পাড়া-মহল্লাকেন্দ্রিক বিক্ষোভ মিছিল, সভা করার মাধ্যমে গণসংযোগ করছেন দলটির নেতারা। এর মাধ্যমে মানুষের আস্থা অর্জনের চেষ্টা করছেন তারা। একই সঙ্গে ভোটের মাঠে নিজেদের শক্ত অবস্থান নিশ্চিত করতে যাচ্ছেন মানুষের দ্বারে দ্বারে। পিছিয়ে নেই দলটির মহিলা বিভাগের কর্মীরাও। কর্মিসম্মেলন, উঠান বৈঠকসহ নানান কার্যক্রমে ব্যস্ত তারাও।
সম্প্রতি জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এবং পিআর পদ্ধতির নির্বাচনসহ পাঁচ দাবিতে রাজপথে বিক্ষোভ কর্মসূচি দেয় জামায়াতে ইসলামী। এর মধ্যে রাজধানীসহ বিভাগ ও জেলা-উপজেলায় কর্মসূচি পালন করে দলটি। কর্মসূচির শেষ দিন গত শুক্রবার দেশের প্রতিটি উপজেলায় বিশাল বিশাল মিছিল নিয়ে নিজেদের প্রতি জনসমর্থন দৃশ্যমান করেছে দলটি। রাজনীতির ভাষায় স্থানীয় পর্যায়ে শোডাউন করে দলের শক্তি দেখিয়েছেন তারা। এভাবেই দাবি আদায়ের নামে রাজপথে সোচ্চার থেকে জনসমর্থন গুছিয়ে আসন্ন নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের স্বপ্ন দেখছে জামায়াত। এজন্যই সবার আগে প্রায় ৩০০ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী বাছাই করার দলের শীর্ষ থেকে তৃণমূল সব পর্যায়ের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা নির্বাচনি তৎপরতায় সক্রিয় হয়ে উঠেছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন পাঁচ দফার আন্দোলনের আবরণে জামায়াত কার্যত রাজধানী থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত নির্বাচনি প্রচারের কাজ করছে। রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে নেতা-কর্মীদের মাঠে নামিয়ে সমর্থকদের সক্রিয় করার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের দৃষ্টিও আকর্ষণ করার চেষ্টা করছেন তারা। অপরদিকে বিএনপি ও অন্যদলগুলোকে ব্যস্ত রেখেছেন নানা ইস্যুতে। জামায়াতের বিভিন্ন পর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে কোনো সংশয়-শঙ্কা নেই জামায়াতের নেতা-কর্মীদের। তারা জানে কেন্দ্র আসন্ন নির্বাচনে অংশ নেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারই ভিত্তিতে ৩০০ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীও ঘোষণা করা হয়েছে। এসব প্রার্থী নিজ নিজ এলাকায় প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। গণসংযোগ, মতবিনিময় সভা এবং উন্নয়ন ইস্যু নিয়ে জনগণের কাছে নিজেদের (প্রার্থী) তুলে ধরছেন। জনগণের আস্থা অর্জনে কাজ করছেন। তরুণ ভোটারদের টার্গেট করে অনলাইন ক্যাম্পেইনের প্রস্তুতিও চলছে জোরেশোরে।
জানতে চাইলে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. এইচ এম হামিদুর আযাদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দাবি, রাজপথ ও মানুষের কাছে যাওয়া এসব নিয়ে আমরা আছি। জামায়াত যেহেতু নির্বাচনমুখী দল সেজন্য জনগণের কাছে যাবে, প্রচারণা চালাবে এটাই স্বাভাবিক। তাদের আস্থা ও চাওয়া পূরণে আমাদের লক্ষ্য। জনগণের চাহিদা ও দেশের কল্যাণে আমাদের মাঠের কর্মসূচি। নতুন কী কর্মসূচি আসছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচন, আন্দোলন সবই রাজনৈতিক দলের অংশ। তবে শিগগিরই দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সভা হবে। ওই সভায় সিদ্ধান্ত পরবর্তী কর্মসূূূূূূূূূচি নেওয়া হবে।