Image description
সংবাদ সম্মেলন করে গ্রেফতারের দাবি জানালেন ভুক্তভোগী নারী

ধর্ষণ মামলার পরও বহাল তবিয়তে আছে কি‌শোরগঞ্জ জেলার ভৈরব সা‌র্কেলের এএস নাজমুস সাকিব। সংবাদ সম্মেলন করে গ্রেফতারের দাবি জানালেন এক ভুক্তভোগী নারী।

গত ২০ মে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. নাজমুস সাকিব (৪০) এর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা করেন সরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা এক নারী। ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে মামলাটি রাজধানীর শাহবাগ থানায় এফআইআর করা হলেও অভিযুক্ত এএসপি নাজমুস সাকিবকে অদ্যাবধি গ্রেফতার করা হয়নি এবং জামিন না নিয়েই তিনি বহাল তবিয়তে চাকরি করছেন এমন অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী ওই নারী। তিনি সংবাদ সম্মেলনে এএসপি নাজমুস সাকিবকে গ্রেফতার ও তার বিচার দাবি করেছেন।

গতকাল রোববার কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের গৌরাঙ্গবাজারে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। অভিযুক্ত নাজমুস সাকিব ৩৪তম বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি বর্তমানে কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশের ভৈরব সার্কেল অফিসে কর্মরত রয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে ওই নারী বলেন, ফেসবুকে একটি মেট্রিমোনিয়াল গ্রুপের মাধ্যমে নাজমুস সাকিবের সাথে তার পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে উভয়ের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তিনি ওই নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। নাজমুস সাকিব বিবাহিত হলেও তার পূর্বের বিয়ে, সন্তানসহ অন্যান্য পারিবারিক তথ্যাদি গোপন করে ওই নারীর সাথে বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে শারীরিক সম্পর্ক বজায় রাখেন। পরবর্তীতে ওই নারীকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান নাজমুস সাকিব। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই নারী নিজে বাদী হয়ে গত ২০ মে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এ নাজমুস সাকিবের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলার অভিযোগ দায়ের করলে ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. শওকত আলী শাহবাগ থানা পুলিশকে অভিযোগটি এফআইআর এর নির্দেশ দেন।

ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ, নাজমুস সাকিবের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলাটি এফআইআর হলেও তাকে পুলিশ গ্রেফতার করছে না। এমনকি তিনি জামিনও নেননি। তিনি বহাল তবিয়তে চাকরি করছেন।

ওই নারী বলেন, চাকরি বিধি অনুসারে, ফৌজদারি মামালার পলাতক আসামি জামিন না নিয়ে কিভাবে বহাল তবিয়তে আছে? তার বিরুদ্ধে প্রথম স্ত্রীর মামলাসহ মোট ৬টি মামলা চলমান রয়েছে। আমার সাথে সে অন্যায় অবিচার করে বিয়ে নামক নাটক করেছে। আমাকে শুধু ভোগ করেছে। আমি আমার দেশের আইনের কাছে বিচার চাচ্ছি।

ভুক্তভোগী ওই নারী আরো বলেন, নাজমুস সাকিবের প্রথম স্ত্রী ইসরাত রহমান তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও যৌতুক আইনে মামলা করেছিলেন। কয়েক মাস জেলও খেটেছেন তিনি। আওয়ামী লীগ সরকার আমলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিয়ে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। কিন্তু গত বছরের ৫ আগস্টের পর তিনি আওয়ামী লীগ শাসন আমলে বঞ্চিতের শিকার দাবি করে আবার চাকরিতে যোগদান করেছেন।

অভিযোগের বিষয়ে ভৈরব সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নাজমুস সাকিব বলেন, তদন্তাধীন বিষয়ে আমি কোনো কথা বলতে চাই না। তদন্ত চলছে। তদন্তে যা হবে তাই-ই।

এ ব্যাপারে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ খালিদ মনসুর বলেন, এটা তদন্তাধীন বিষয়। এটা আমরা ক্লোজলি মনিটরিং করতেছি। তদন্ত চলমান আছে।
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।